১১ বছরে ৯০ কেজির বাচ্চায় আজ সোনার ছেলে, নীরজের লড়াইয়ের অজানা কাহিনী

নিজস্ব প্রতিবেদন : কথায় আছে যার ‘শেষ ভালো তার সব ভালো’। আর এই সব কিছুকেই ভালো করে দেখালেন নীরজ চোপরা। টোকিও অলিম্পিকের শেষ দিনে তার হাত ধরে দেশে এলো সোনা। পাশাপাশি তার এই সোনা জয়ের সাথে সাথে তৈরি হলো একাধিক রেকর্ড। অভিনব বিন্দ্রা পর ব্যক্তিগত ইভেন্টে ১৩ বছর পর তিনিই কোন অ্যাথলিট যিনি ভারতের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করে ব্যক্তিগত ইভেন্টে সোনা জিতলেন। এছাড়াও তার সোনা জয়ের সাথে সাথেই ভারতের পদক সংখ্যা দাঁড়ালো ৭, যা সর্বকালের রেকর্ড। তবে নীরজের এই সফরটা এতটা সহজ ছিল না।

হরিয়ানার সেনাপতির ২৩ বছরের যুবক নীরজ চোপড়া একসময় লোকের মুখে কটাক্ষ শুনতেন ‘মোটা বাচ্চা’ বলে। অল্প বয়স থেকেই তাকে তার স্থূলকায়ত্বের সাথে লড়াই চালিয়ে আজকে এই জায়গায় আসতে হয়েছে। মাত্র ১১ বছর বয়সে তার ওজন ছিল ৯০ কেজি। আর এই ৯০ কেজি থেকে কসরত করে তাকে জিততে হয়েছে সোনা।

নীরজের জন্ম খান্ডারা গ্রামে। বাবা ছিলেন একজন কৃষক। আর্থিক দিক দিয়ে স্বচ্ছলতা থাকলেও সোনার চামচ মুখে দিয়ে জন্ম হয়নি তার। সাধারণ ঘরের এই ছেলেকে নিয়ে কোনদিন তার বাবা-মা ভাবেননি তাকে একজন অ্যাথলিট তৈরি করবেন। আর পাঁচটা বাবা মায়ের মতই তারা ছোট ছোট স্বপ্ন দেখতেন। তবে সেই সকল স্বপ্নকে পার করে নীরজের আজ সফলতায় অকাল দিওয়ালি নেমে আসে দেশে।

অল্প বয়সেই নীরজ যখন ৯০ কেজি ওজনের বাচ্চা পরিণত হয় তখন তার বন্ধুমহলে নানান খোঁচা শুনতে হলে তার কাকা তাকে পানিপতে সাইয়ের একটি জিমে ভর্তি করেন। উদ্দেশ্য ছিল ওজন কমানো। যাতে তাকে এইভাবে খোঁজা এবং মোটা হওয়ার জ্বালা থেকে দূর করা যায়। তবে সেটাই ছিল তার জীবনের টার্নিং পয়েন্ট। সাইয়ের স্টেডিয়ামেই ১৩ বছর বয়সে প্রথম জ্যাভলিন ছোঁড়া শুরু করেন নীরজ। এমনকি সে সময় তাঁর কাকাও জানতেন না যে নীরজ জ্যাভলিন ছোঁড়া শুরু করেছে।

তারপরেই ধীরে ধীরে পাল্টাতে শুরু করে তার জীবনের গতি। ২০১৬ সালে লাইম লাইটে আসেন এই যুবক। সেই সময় তিনি জ্যাভলিনে বিশ্ব অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়ন হন। তবে তা সত্ত্বেও অল্পের জন্য অলিম্পিকের যোগ্যতা অর্জন করতে পারেননি। এরপর ২০১৮ সালে কমনওয়েলথ গেমসে ফের চ্যাম্পিয়ন হন তিনি। আর তারপর অলিম্পিকেও দেশের জন্য নিজের সেরাটা দিলেন।