বিশ্বের সবথেকে ছোট রানওয়ে বিশিষ্ট বিপজ্জনক ১০টি বিমানবন্দর

নিজস্ব প্রতিবেদন : গতকাল কেরলের কোঝিকোড়ে বিমানবন্দরের রানওয়েতে অবতরণের সময় দুর্ঘটনার সম্মুখীন হয় এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান ‘আইএক্স-১৩৪৪’। দুবাই থেকে আসা এই যাত্রীবাহী বিমানে ১৯১ জন যাত্রী ছিলেন। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত যাদের মধ্যে ১৯ জনের প্রাণহানি হয়েছে বলে জানা যায়। তবে এমন বিপদজনক বিমানবন্দরের রানওয়েতে অবতরণের সময় বিমান দুর্ঘটনার এমন ঘটনা এই প্রথম নয়। ১০ বছর আগে ভারতেরই ম্যাঙ্গালোর বিমানবন্দরে এমন দুর্ঘটনা ঘটেছিল। ১০ বছর পর শুক্রবার কেরলের এই দুর্ঘটনা যেন তারই পুনরাবৃত্তি।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গতকাল এয়ার ইন্ডিয়ার এই বিমানটি অবতরণের আগে দুবার অবতরণের চেষ্টা করে। তবে দুবার চেষ্টা সত্ত্বেও অবতরণ করা সম্ভব না হলে তৃতীয়বারে অবতরণের সময় বিমানের চাকা পিছলে যায়। চাকা পিছলে বিমানটি খাদে পড়ে এবং সঙ্গে সঙ্গে দু’টুকরো হয়ে যায়। দুর্ঘটনার পর এই খবর পাওয়া যায় প্রাণ হারিয়েছেন যাত্রীবাহী ওই বিমানের পাইলট এবং কো পাইলট। আর যে বিমানবন্দরের রানওয়েতে এমন দুর্ঘটনা ঘটেছে সেই কোঝিকোড়ের টেবিলটপ রানওয়ে নিয়ে ইতিমধ্যেই দুর্ঘটনার পর থেকে নানান প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। তবে শুধু কোঝিকোড়ের টেবিলটপ রানওয়েই একমাত্র বিপদজ্জনক বিমানবন্দরের রানওয়ে নয়। বিশ্বে রয়েছে এমন আরও ১০টি অতি বিপদজনক বিমানবন্দরের রানওয়ে।

ফ্রান্সের Courchevel বিমানবন্দর : ফ্রান্সের এই বিমানবন্দরের রানওয়ের দৈর্ঘ্য মাত্র ৫৩৭ মিটার। আল্পস পর্বতের উপর অবস্থিত এই জায়গাটি স্কি রিসোর্টের জন্য বিখ্যাত। মূলত এই বিমানবন্দর স্কি পর্যটকরাই ব্যবহার করে থাকেন। এই বিমান বন্দরের রানওয়ে বরফ এবং কুয়াশায় ঢাকা থাকার পাশাপাশি স্বল্প দৈর্ঘ্যের হওয়াই পাইলটদের বিমান অবতরণ করানো ঝুঁকিপূর্ণ।

নিউজিল্যান্ডের Wellington বিমানবন্দর : নিউজিল্যান্ডের রাজধানী ওয়েলিংটনের এই বিমানবন্দর খুবই স্বল্প দৈর্ঘ্যের। এর দৈর্ঘ্য মাত্র ২০৮১ মিটার। এই বিমানবন্দরে কেবলমাত্র ছোট ছোট বিমানের অবতরণের অনুমতি রয়েছে।

নিউজিল্যান্ডের Gisborne বিমানবন্দর : নিউজিল্যান্ডের এই বিমানবন্দরের বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো বিমানবন্দরের রানওয়ের মধ্য দিয়ে রয়েছে রেললাইন। এই বিমানবন্দরে বিমান অবতরণের পাশাপাশি রেললাইন দিয়ে ট্রেনও যাতায়াত করে। এই বিমানবন্দরের রানওয়ের মোট দৈর্ঘ্য ১৩১০ মিটার।

জাপানের Kansai আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর : জাপানে একটি ছোট্ট দ্বীপের মধ্যে এই বিমানবন্দরটি তৈরি হয়েছে। এই বিমানবন্দরে থাকার রানওয়েগুলির দৈর্ঘ্য ৩৫০০ এবং ৪০০০ মিটার। এই এলাকা ভূমিকম্প এবং ঘূর্ণিঝড় প্রবণ। যে কারণে এই বিমানবন্দরে বিমান অবতরণ অথবা রানওয়ে ছেড়ে যাওয়া খুবই বিপদজনক।

সেন্ট বার্থলেমির Gustaf III বিমানবন্দর : এই বিমানবন্দরের রানওয়ের দৈর্ঘ্য মাত্র ৬৪৬ মিটার। খুবই স্বল্প দৈর্ঘ্যের হওয়ার কারণে এই বিমানবন্দরে কেবলমাত্র ২০ জন যাত্রীবাহী বিমান অবতরণের ক্ষেত্রে অনুমতি দেওয়া হয়।

নেদারল্যান্ডের সেন্ট মার্টিনের Princess Juliana আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর : দ্বীপের মধ্যে অবস্থিত এই বিমানবন্দরের রানওয়ে এর দৈর্ঘ্য মাত্র ২৩০০ মিটার। প্রাকৃতিক অবস্থান এবং স্বল্পদৈর্ঘ্যের রানওয়ে বিশিষ্ট এই বিমানবন্দরে বিমান অবতরণ খুবই ঝুঁকিপূর্ণ।

গ্রীনল্যান্ডের Narsarsuaq বিমানবন্দর : গ্রীনল্যান্ডের এই বিমানবন্দরের রানওয়ের দৈর্ঘ্য ১৮৩০ মিটার। এই বিমানবন্দরে বিমান অবতরণের সময় পাইলটদের পাহাড়ের গা বেয়ে আসা নানান ধরনের ঝড়ো হাওয়া অতিক্রম করে বিমান অবতরণ করতে হয়।

নেপালের Tenzing-Hillary বিমানবন্দর : নেপালি এই বিমানবন্দরের রান ও এর দৈর্ঘ্য মাত্র ৫২৭ মিটার। বিশ্বের সবচেয়ে ছোট রানওয়ে বিশিষ্ট বিমানবন্দরগুলির মধ্যে এই বিমানবন্দর একটি। মূলত এভারেস্ট অভিযাত্রীরা এই বিমানবন্দরকে ব্যবহার করে থাকেন।

সাবার Juancho E Yrausquin বিমানবন্দর : এই বিমানবন্দরের রানওয়ে দৈর্ঘ্য মাত্র ৪০০ মিটার। যাত্রীবাহী বিমান উঠানামার ক্ষেত্রে এই বিমানবন্দরটি বিশ্বের সব থেকে ছোট রানওয়ে বিশিষ্ট বিমানবন্দর। এত স্বল্প দৈর্ঘ্যের রানওয়ে বিশিষ্ট এই বিমানবন্দরে বিমান অবতরণ করানো পাইলটদের কাছে খুবই ঝুঁকিপূর্ণ।

ভুটানের Paro আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর : সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৮ হাজার ফুট উচ্চতায় এই বিমানবন্দরটি চু নদীর তীরে অবস্থিত। এই বিমানবন্দরের রানওয়ের দৈর্ঘ্য মাত্র ১৯৬৪ মিটার। বিমান ওঠা নামার ক্ষেত্রে এই বিমানবন্দরটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ।