বিজ্ঞাপন

জাতীয় দলের তকমা হারাতে পারে তৃণমূল! জল্পনা তুঙ্গে

বিজ্ঞাপন

নিজস্ব প্রতিবেদন : বিগত লোকসভা নির্বাচনে খারাপ ফলাফলের জেড়ে জাতীয় দলের তকমা হাতছাড়া হতে পারে তৃণমূল কংগ্রেসের। শুধু তৃণমূল নয়, পাশাপাশি এনসিপি এবং সিপিআই-এরও জাতীয় দলের তকমা হাতছাড়া হতে পারে। খুব শীঘ্রই তিনটি রাজনৈতিক দলকে শোকজ নোটিশ পাঠাতে পারে নির্বাচন কমিশন বলে সূত্রের খবর। সেই নোটিশে জানতে চাওয়া হতে পারে, কেন তাদের থেকে জাতীয় দলের তকমা প্রত্যাহার করা হবে না।

একটি রাজনৈতিক দলকে জাতীয় দলের তকমা পেতে হলে কোন কোন গন্ডি পেরিয়ে তা অর্জন করতে হয়?

নির্বাচনী প্রতীক বিধি (সংরক্ষণ ও বণ্টন) ১৯৬৮ অনুসারে যে কোন রাজনৈতিক দলকে জাতীয় দলের তকমা পেতে হলে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বা শর্ত পূরণ করতে হবে।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

যে গুলি হল প্রথমত, জাতীয় রাজনৈতিক দল তকমা পাওয়া রাজনৈতিক দলকে অন্ততপক্ষে চারটি বা তার বেশি রাজ্যের লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচনে কমপক্ষে ৬ শতাংশ ভোট পেতে হবে। পাশাপাশি লোকসভায় থাকতে হবে কমপক্ষে চারজন সদস্য।

দ্বিতীয়ত, জাতীয় দলের তকমা পেতে হলে সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দলকে লোকসভার মোট আসনের ২ শতাংশ আসন নিজেদের দখলে রাখতে হবে। আর কমপক্ষে তিনটি রাজ্য থেকে ওই দলের লোকসভায় প্রতিনিধি থাকবে।

তৃতীয়ত, সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দলের কমপক্ষে চারটি রাজ্যের স্বীকৃতি থাকতে হবে।

তাহলে তৃণমূল কেন জাতীয় রাজনৈতিক দলের তকমা হারাতে পারে!

বর্তমানে লোকসভায় তৃণমূলের ২২ জন সদস্য রয়েছেন, যা মোট আসনের ৪.০৫ শতাংশ। সদ্য সমাপ্ত হওয়ার লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও আন্দামান ও নিকোবর, বিহার, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা, ত্রিপুরাতে লড়াই করলেও আসন জেতেন কেবলমাত্র পশ্চিমবঙ্গ থেকে। এরমধ্যে আবার বিহার ও ঝাড়খন্ডে তৃণমূল ভোট পেয়েছে ০.০১% ও ০.৪৮%। ত্রিপুরাতে তৃণমূলের ঝুলিতে এসেছে ০.৪০%, উড়িষ্যাতে এসেছে ০.০৪% এবং আন্দামান নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে ভোট এসেছে ০.৮৩%। আর পশ্চিমবঙ্গে প্রাপ্ত ভোটের পরিমাণ ৪৩.২৮%।

বিভিন্ন রাজ্যে বিধানসভা ভোটের নিরিখেও তৃণমূলের অবস্থা তথৈবচ। ২০১৬ সালে অসমি হওয়া বিধানসভা ভোটে তৃণমূলের ঝুলিতে এসেছে মাত্র ০.২% ভোট। ২০১৮ সালে ত্রিপুরার বিধানসভা নির্বাচনে একি হাল, প্রাপ্ত ভোট ০.৩%। ২০১৪ সালের ঝাড়খন্ড বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের হাল ছিল ধারে পাশেই, প্রাপ্ত ভোটের পরিমাণ ছিল ০.৫%। তবে ২০১৬ সালে পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল ভোট পেয়েছিল ৪৫.৬% র বেশি এবং আসনের সংখ্যা ছিল ২১১ টি। এছাড়াও মনিপুরে ২০১৭ সালে বিধানসভা নির্বাচন নিয়ে একটি আসন পায় তৃণমূল। সেবার প্রাপ্ত ভোটের পরিমাণ ছিল ১.৪ শতাংশ।

২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর মাসে তৃণমূল কংগ্রেসকে জাতীয় দলের তকমা দেয় নির্বাচন কমিশন। পশ্চিমবঙ্গ, মনিপুর, ত্রিপুরা এবং অরুণাচল প্রদেশে তৃণমূল কংগ্রেসের স্বীকৃতি থাকায় জাতীয় দলের তকমা পায় সে সময়। কিন্তু সদ্য সমাপ্ত হওয়ার লোকসভা নির্বাচন এবং পরবর্তী পরিস্থিতি অনুসারে তৃণমূল কংগ্রেস একমাত্র পশ্চিমবঙ্গে রাজ্য দল হিসাবে স্বীকৃতি পূরণ করতে পেরেছে। তাই রাজনৈতিক দল হিসাবে তৃণমূল কংগ্রেসের জাতীয় তকমা থাকছে, না থাকবে না সে বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের পদক্ষেপ খুবই গুরুত্বপূর্ণ।