আজব আবদার, একই রকম বর চাই, যমজ বোন বিয়ে করল যমজ ভাইকে

তাদের জন্ম, বেড়ে ওঠা সবই একসঙ্গে। তারা চাকরিও করে একই সংস্থায়। তাই লব-কুশ তাদের বিয়েটাও একই সঙ্গে করতে চেয়েছিলেন। তাদের আবদার ছিল বিয়েই হবে একই পোশাক পরে এবং একই বাড়ির দুই মেয়ের সঙ্গে। এদিকে ঘটনা চক্রে অর্পিতা ও পারমিতা নামের যমজ বোনের খবর মেলে। তারাও একজন আর একজনকে ছেড়ে থাকার কথা ভাবতেই পারে না। তাদেরও ছোট থেকেই ইচ্ছা ছিল যে, কোনো যমজ ভাইয়ের কনে হয়ে দুজনের একই বাড়ির বউ হবেন তাঁরা। আর এই অদ্ভুত ইচ্ছাপূরণ হল যমজ পাত্র পাত্রীর। বিয়ের এই মরশুমে এমন বিরল ঘটনা ঘটলো পূর্ব বর্ধমানে।

পূর্ব বর্ধমান জেলার দেওয়ানদিঘি থানার কুড়মুনে বাড়ি লব ও কুশের। তারা একইসঙ্গে জন্মেছেন, তাই তাদের বয়সের ব্যবধান মাত্র কয়েক সেকেন্ডের। তাদের দেখতেও অনেকটা একইরকম। ছোটবেলা থেকেই বাবা-মা তাঁদের একইরকম পোশাক পরাতেন। তাই অনেকে কোন জন লব, কোন জন কুশ বুঝতে পারতেন না। একই সঙ্গে পড়াশোনার পাট চুকিয়ে এক সাথেই কাজ করছেন লব পাকড়ে ও কুশ পাকড়ে। অন্যদিকে, ভাতারের সোতখালি গ্রামের অর্পিতা ও পারমিতা সেই এলাকার বেসরকারি কারখানার কর্মী গৌরচন্দ্র সাঁতরার যমজ কন্যা। তারাও মাত্র কয়েক সেকেন্ডের ছোটো বড়ো। তারা ভাতার গার্লস স্কুলে একই ক্লাসে পড়াশোনা করে একসঙ্গে একই কলেজ থেকে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেছেন।

এক সংবাদ মাধ্যমকে অর্পিতা ও পারমিতা জানান যে, তারা দুজনেই একইসঙ্গে বড় হয়েছেন তাই তাদের ইচ্ছা ছিল দুজনেই একই বাড়িতে বিয়ে করে যাবেন। তারা তাদের সেই ইচ্ছার কথা বাড়িতে জানান। আর তাদের বাবা মেয়েদের ইচ্ছে পূরণ করতে সেই হিসেবে পাত্র খোঁজা শুরু করেন। তবে আজ কাল কি ভালো পাত্র সহজে পাওয়া যায়! তাও আবার যমজ পাত্র! অনেক খুঁজে খুঁজে অবশেষে কুড়মুন গ্রামের‌ লব-কুশের সন্ধান পান যমজ পাত্রীর বাবা। সেখানে গিয়ে দেখা যায় যে, লব-কুশের পরিবারও এমনই যমজ কনের খোঁজ করছেন।

ব্যাস আর দেরি না করে গত রবিবার সোতখালিতে আয়োজন করা হয় বিয়ের আসর। সেদিন লব-কুশের পরনে ছিল একই রঙের ধুতি-পাঞ্জাবি। আর দুই কোন অর্পিতা-পারমিতাও একই রঙের বেনারসি পরেছিলেন। দুইভাই-দুইবোনের একইদিনে হয় বাসর রাত ও সোমবার একইসাথে দুজনের প্রীতিভোজ হয় কুড়মুনে। সেখানে দুই পাত্রই নীল রঙের পাঞ্জাবি পরেছিলেন। আর দুই যমজ বোন অর্পিতা ও পারমিতার শাড়ি, গয়না, সাজের ধরন সমস্ত কিছু একই রেখে সেজেছিলেন।

ওই দুই যমজ বোন বলেছেন নে, পাত্রপক্ষের একান্নবর্তী পরিবার তাদের পছন্দ করেন দুই বোন বিয়ের আগে এমনই পরিবারে বাস করতেন। আর এখন বিয়ের পরে একইভাবে থাকতে পারবেন তারা। তাদের বাবা তাঁদের এই অদ্ভুত ইচ্ছাপূরণ করেছেন। এদিকে ইচ্ছাপূরণ হয়েছে লব-কুশেরও। যমজ ভাই এখন সম্পর্কে ভায়েরাভাই হয়ে গেছেন। আর যমজ বোনরা হয়েছেন একে ওপরের জা।