নিজস্ব প্রতিবেদন : স্কুল ড্রেস আর পিঠে ব্যাগ নিয়ে পরের পর ভল্ট দিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল দুই বিস্ময় প্রতিভার খুদে পড়ুয়া। তাদের সেই ভল্ট দেওয়ার ১৫ সেকেন্ডের ভিডিও দেশ ছাড়িয়ে বিদেশেও ভাইরাল। সোনাজয়ী অলিম্পিয়ান থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় ক্রীড়া মন্ত্রী পর্যন্ত সেই ভিডিও তাঁদের ট্যুইটার হ্যান্ডেলে পোস্ট করেছেন।
কিন্তু এই যাবৎ এই দুই খুদে পড়ুয়ার ঠিকানা নিয়ে সংশয় ছিল সকলের, সকলেই ছিলেন তাদের খোঁজে। অবশেষে গতকাল অর্থাৎ সোমবার একটি সর্বভারতীয় সংবাদ সংস্থায় প্রকাশিত হয় তাদের পরিচয়। ওই সংবাদ সংস্থা থেকে জানা গিয়েছে, এই দুই খুদে প্রতিভাশীল পড়ুয়ার বাড়ি পশ্চিমবঙ্গের খাস কলকাতার বন্দর এলাকার হাইড রোড বস্তিতে। একজনের নাম লাভলি এবং অন্যজনের নাম আলী। এই বস্তিতেই তাদের বড় হয়ে ওঠা। তাদের রয়েছে আর্থিক দুরবস্থা, মাথা গোঁজার ঠাঁই আজও অনিশ্চিত। অন্ধকারময় ঘরের দুই উজ্জ্বল প্রতিভা।
সর্বভারতীয় ওই সংবাদ সংস্থা থেকে আরও জানা যায়, তারা দুজনেই স্থানীয় সংঘমিত্র বিদ্যালয়ের পড়ুয়া। এই দুজনের একজনের বাবা সামান্য গাড়িচালক এবং অন্যজনের বাবা শ্রমিক।
এই দুই খুদে পড়ুয়া কোনরকম প্রশিক্ষণ ছাড়াই নিখুঁত টাইমিং-এর মাধ্যমে পিচের রাস্তায় দুঃসাহসিক ভোল্ট দিয়ে নজর কেড়ে নিয়েছেন বিশ্বের তাবড় তাবড় ক্রীড়াবিদদের। সাথে তারা দুজনে স্থানীয় এক শিক্ষকের কাছে নাচ শেখেন বলে জানা গিয়েছে। সেই শিক্ষকই নাকি প্রথম তাদের ওই ভিডিওটি সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোড করেছিলেন।
সেই ভিডিও ধীরে ধীরে পৌঁছে যায় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে, শুধু তাই নয় দেশ ছাড়িয়ে পৌঁছে যায় বিশ্বের দরবারে। রোমানিয়ান অলিম্পিয়াড, নাদিয়া কোমানোচিও সেই ভিডিওর দৃশ্য দেখে নিজেদের টুইটার হ্যান্ডেলে পোস্ট করেছেন।
I'm happy that @nadiacomaneci10 tweeted it! As first gymnast who scored perfect 10.0 at the 1976 Montreal Olympics, and then, received six more perfect 10s to win three gold medals, it becomes very special. I've urged to introduce these kids to me. https://t.co/ahYVws8VCB
— Kiren Rijiju (@KirenRijiju) August 30, 2019
বিচিত্র আমাদের এই ভারতবর্ষে এরকম হাজারো প্রতিভা লুকিয়ে রয়েছে, সঠিক পরিকাঠামো এবং পরিদর্শনের অভাবে সেই সব প্রতিভা ধুলোয় মিশে গেছে। তবে সম্প্রতি আমরা দেখেছি সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতেই রানু মন্ডলের ভাগ্যের চাকা ঘুরে যাওয়া, তাহলে এই দুই খুদে পড়ুয়ার ভাগ্যও ঘুরতে পারে না রাণুর মত! এই দুই খুদে পড়ুয়া বাঙালি হিসেবে যতটা গর্বের, তবে গর্বটা তখনই পূর্ণাঙ্গ রূপ পাবে, যখন তারা বস্তি থেকে সুযোগ পাবে নিজেদের প্রতিভাকে কাজে লাগানোর।