স্যান্ট্রো গাড়ি চেপেই মাসির বাড়ি থেকে ফিরলেন জগন্নাথ বলরাম সুভদ্রা

লাল্টু : বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস যেভাবে দিন দিন বেড়ে চলেছে, যেভাবে দিন দিন বেড়ে চলেছে প্রাণহানির সংখ্যা, তাতে বিশ্বের কোটি কোটি মানুষ আশঙ্কার সঙ্গে জীবন জীবনযাপন করছেন। আর এই করোনাভাইরাসের কারণে ভারতে বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠান থেকে অন্যান্য অনুষ্ঠানের বাহ্যিক দিকগুলি সম্পূর্ণ ভাবে অন্য মাত্রা পেয়েছে। যেখানে অন্যান্য বছর জাঁকজমকপূর্ণভাবে এই সকল উৎসবগুলি পালন করা হতো সেখানে এবছর তা জাঁকজমকের পোশাক ছেড়ে কেবলমাত্র রীতিনীতিকে অবলম্বন করে জিইয়ে রয়েছে। অন্যান্য বেশ কিছু ধর্মীয় অনুষ্ঠানের মত করোনার প্রভাব পড়েছে রথযাত্রাতেও।

হেতমপুর রাজবাড়ীর পাশেই রয়েছে গৌরাঙ্গ মন্দির, যা রাজাদের আমলে তৈরি। রাজবাড়ীর আর্থিক অবস্থা খারাপের কারনে ২০০৭ সালে কুমার মাধবী রঞ্জন চক্রবর্তী ও সুরঞ্জন চক্রবর্তী গৌরাঙ্গ মন্দিরটি গৌরাঙ্গ মঠের হাতে তুলে দেন। আর এখানেই প্রতিবছর জাঁকজমকপূর্ণভাবে হয় রথযাত্রা ও উল্টো রথযাত্রা। তবে এবছর করোনার জেরে হেতমপুর রাজবাড়ী থেকে রথ না পেয়ে, এই প্রথম গৌরাঙ্গ মঠের পক্ষ থেকে রথের দিন স্যান্ট্রো গাড়ি করে মঠ চত্বরে ঘোরানো হয় জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রাকে।

আর ঠিক একইভাবে রীতি মেনে সাত দিন পর অর্থাৎ উল্টো রথের দিন মাসির বাড়ি থেকে জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রা স্যান্ট্রো গাড়ি চেপেই মাসির বাড়ি থেকে ফিরে এলেন নিজের বাড়িতে।

কিন্তু কেন রথ না মেলায় স্যান্ট্রো গাড়িকেই বেছে নেওয়া হলো?

রাজবাড়ী থেকে রথ না পাওয়ার পর স্যান্ট্রো গাড়ি বেছে নেওয়ার পিছনে কি কারণ রয়েছে তা সম্পর্কে হেতমপুর গৌরাঙ্গ মঠের সভাপতি ভক্তি বাড়িদি ত্রিদন্ডী মহারাজ জানান, এত বছর ধরে যে রথে জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রা চাপতেন অর্থাৎ যে রথটি সুদূর ইংল্যান্ড থেকে নিয়ে আসা হয়েছিল সেটি অত্যাধুনিক পিতলের রথ। এই রথে ছিল স্টিয়ারিং, ব্রেক, সকার সহ অন্যান্য যন্ত্রপাতি রয়েছে যা একটা গাড়িতেও থাকে। রথ না পেয়ে তাই একই রকম বৈশিষ্ট্যপূর্ণ গাড়িকেই রথ হিসাবে ব্যবহার করা হয়েছে। কারণ রথের চাকা আছে গাড়িরও চাকা আছে, রথের স্টিয়ারিং আছে গাড়িরও স্টিয়ারিং আছে। রথের ব্রেক আছে গাড়িরও ব্রেক আছে। রথের সকার আছে গাড়িরও সকার আছে। পাশাপাশি রথ টানার জন্য যেমন রশি বা দড়ি থাকে, সেইরকম গাড়িতেও রশি বা দড়ি বাধা হয়েছিল ভক্তদের টানার জন্য।