নিজস্ব প্রতিবেদন : ‘ভাগ্যের চাকা’, কখন যে কোন দিকে ঘুরে যাবে তা কারোর জানা থাকে না। তবে ভাগ্যের চাকা ঘোরানোর জন্য অবশ্যই প্রতিভার প্রয়োজন হয়ে থাকে। যেমনটা করে দেখিয়েছেন জম্মু-কাশ্মীরের তরতাজা যুবক উমরান মালিক। IPL-এ তার বলের গতিতে এখন ধরাশায়ী হয়ে পড়ছেন বিপক্ষ দলের তাবড় তাবড় ব্যাটসম্যানরা।
তবে উমরান মালিকের শুরুটা এত সহজ ছিল না। খুব আর্থিক সংকটের মধ্যেই তার জীবন শুরু হয়েছে। দুবাইয়ে আয়োজিত চলতি বছর আইপিএলের দ্বিতীয়ভাগে খেলার সুযোগ পেয়ে সে তার বলের গতি দেখিয়েছে। উমরান মালিক নিজের খেলা শুরু করে টেনিস বল দিয়েই। শ্রীনগরের বিভিন্ন জায়গায় খেপ খেলে বেড়াতেন তিনি। আর বাবা একজন সামান্য সবজি বিক্রেতা। শ্রীনগরের রাস্তার ধারে উমরানের বাবা সবজি এবং ফল বিক্রি করেন। সম্প্রতি ছেলের এই উত্থানে গোটা পরিবারের ভাগ্য ফিরেছে।
উমরানের বাবা আব্দুল মালিক একটি সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, “মাত্র তিন বছর বয়স থেকেই ক্রিকেটের প্রতি ঝোঁক লক্ষ্য করেছিলাম ছেলের। ও সব সময় স্বপ্ন দেখতো একজন বড় ক্রিকেটার হওয়ার। এখন ওকে সানরাইজার্স হায়দরাবাদের হয়ে খেলতে দেখে খুব ভালো লাগছে। টিভিতে যখন ওকে খেলতে দেখলাম তখন আমরা আমাদের আনন্দ ধরে রাখতে পারেনি। আমার আর ওর মায়ের চোখ দিয়ে জল পড়তে শুরু করে। কঠোর পরিশ্রমের ফল হিসাবে আজ সে এই জায়গায় পৌঁছেছে। আশা করব একদিন ভারতীয় দলের হয়ে সে মাঠে নামবে।”
এর পাশাপাশি উমরানের বাবা জানান, “আমাদের মত গরিব পরিবারের কাছে এটা একটা বড় প্রাপ্তি। আমি শ্রীনগরের রাস্তায় ফল আর সবজি বিক্রি করতাম। ছেলের স্বপ্ন পূরণের জন্য কঠোর পরিশ্রম করেছি। আজ সেই স্বপ্ন সফল হয়েছে। এর থেকে বড় আনন্দ আর কিছু হতে পারে না।”
এদিনের এই ম্যাচে খেলার সুযোগ পেয়ে উমরান মালিক নিজের ক্ষমতা দেখিয়ে দেন। আরসিবির বিরুদ্ধে উমরান মাঠে নামার সুযোগ পান টি নটরাজনের পরিবর্তে। মাঠে নেমে বল হাতে সে সর্বোচ্চ গতি ঘন্টায় ১৫২.৯৫ কিমি। আইপিএলে অভিষেকেও উমরান ঘন্টায় ১৫০ কিলোমিটারের বেশি গতিবেগে বল করেছিলেন। আর তার এমন বলের গতি দেখে মুগ্ধ হন আরসিবির ক্যাপ্টেন বিরাট কোহলি।
বিরাট কোহলি জানান, এই ছেলের দিকে নজর রাখা উচিত। পাশাপাশি ম্যাচের পর তিনি উমরানের জার্সিতে নিজের হস্তাক্ষর দেন। উমরান টেনিস বল খেলে, দরিদ্র পরিবার থেকে উঠে এসে যেভাবে আজ আইপিএলের মাঠ মাতাচ্ছেন তাতে আমরা আশা রাখবো আগামী দিনে এই ছেলেকে দেশের জার্সি পড়ে খেলতে দেখার।