উত্তরপ্রদেশের কার্পেট, রাজস্থানের মার্বেল, উদ্বোধনের আগেই দেখে নিন কেমন হলো নতুন সংসদ ভবন

নিজস্ব প্রতিবেদন : বর্তমানে ভারতবর্ষে যে সংসদ ভবন রয়েছে, সেটি কিন্তু সংসদ ভবন (Parliament) ছিল না। এটি ছিল কাউন্সিল হাউস। ব্রিটিশ আমলে ১৯২৭ সালে তৈরি হয়েছিল এই কাউন্সিল হাউস। যার উদ্বোধন করেছিলেন ভাইসরয় লর্ড আরউইন। পরবর্তীতে ভারত স্বাধীনতা লাভের পর এই কাউন্সিল হাউস পরিণত হয় সংসদ ভবনে।

পুরাতন সংসদ ভবন তৈরি হওয়ার ৯৬ বছর পর ব্রিটিশ শৃঙ্খল ত্যাগ করে নতুন সংসদ ভবনে (New Parliament Building) প্রবেশ করবে দেশ। ২৮ মে অর্থাৎ রবিবার এই ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী থাকবে গোটা বিশ্ব। আয়তনের পাশাপাশি স্থাপত্য কারুকার্য এবং দেশের ঐতিহ্যকে তুলে ধরার ক্ষেত্রে নতুন এই সংসদ ভবন আলাদাভাবেই গুরুত্বপূর্ণ। কেননা নতুন সংসদ ভবন তৈরির ক্ষেত্রে অখন্ড ভারতকে বজায় রাখার জন্য ভারতের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গা থেকে আনা হয়েছে এক একটি জিনিস।

যেমন সংসদ ভবনের কার্পেট আনা হয়েছে উত্তরপ্রদেশের মির্জাপুর থেকে। মেঝে করার জন্য যে বাঁশ ব্যবহৃত হয়েছে তা আনা হয়েছে ত্রিপুরা থেকে। আর পাথর শিল্পের জন্য বিখ্যাত রাজস্থান থেকে আনা হয়েছে মার্বেল সহ বিভিন্ন ধরনের পাথর। সংসদ ভবনের চেয়ার টেবিল সবকিছু তৈরি হয়েছে সেগুন কাঠ দিয়ে। এই সেগুন কাঠ আনা হয়েছে মহারাষ্ট্রের নাগপুর থেকে। এই সমস্ত কিছু বজায় রেখে নতুন সংসদ ভবনকে গড়ে তোলা হয়েছে বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতির বাহক।

দিল্লির লালকেল্লা এবং হুমায়ুনের সমাধিতে যে বেলে পাথর ব্যবহার করা হয়েছিল সেই বেলে পাথর আনা হয়েছিল রাজস্থানের সারমাথুরা থেকে। নতুন সংসদ ভবন তৈরি করার ক্ষেত্রে লাল সাদা পাথরের কারুকার্যের জন্য সেই বেলে পাথর আনা হয়েছে সারমাথুরা থেকেই। আবার সবুজ পাথর আনা হয়েছে রাজস্থানের উদয়পুর থেকে এবং লাল গ্রানাইট আনা হয়েছে আজমিরের লাখা থেকে। সাদা পাথর আনা হয়েছে রাজস্থানের আম্বাজি থেকে। আবার গোটা ভবনে পাথরের যে জালি কাজ রয়েছে সেই পাথর আনা হয়েছে রাজস্থানের রাজনগর এবং উত্তরপ্রদেশের নয়ডা থেকে।

অন্যদিকে এই সংসদ ভবনের লোকসভা এবং রাজ্যসভার পক্ষে যে ফলস সিলিং করা হয়েছে তার ইস্পাত কাঠামোটি আনা হয়েছে কেন্দ্রশাসিত দক্ষিণের অঞ্চল দমন ও দিউ থেকে। নতুন সংসদ ভবনে থাকা অশোকস্তম্ভগুলি আনা হয়েছে মহারাষ্ট্রের ঔরঙ্গাবাদ এবং রাজস্থানের জয়পুর থেকে। আবার পাথরের কারুকার্য করার জন্য ছিলেন রাজস্থানের ভাস্কর্য শিল্পীরা। সংসদ ভবন তৈরি করার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত বালি আনা হয়েছে হরিয়ানার চারখি দাদরি থেকে। গোটা সংসদ ভবন তৈরি করার ক্ষেত্রে যে ইট ব্যবহৃত হয়েছে সেগুলি হরিয়ানা এবং উত্তরপ্রদেশের। ব্যবহৃত সমস্ত ইট অ্যাশ ফ্লাইয়ে তৈরি। সংসদ ভবনের ভিতরে যে পিতলের কাজ রয়েছে তা আনা হয়েছে গুজরাতের আমেদাবাদ থেকে। অখন্ড ভারতকে তুলে ধরার জন্যই এমন পদক্ষেপ।