নিজস্ব প্রতিবেদন : একমাসের বেশি সময় ধরে পাখির বাসায় ডিমের বাচ্চা বাঁচাতে আলো নিভিয়ে রাখল তামিলনাড়ুর শিবগঙ্গা জেলার ছোট্ট গ্ৰামের বাসিন্দারা। গ্ৰামের কমিউনিটি সুইচবোর্ডের ভিতর বাসা বেঁধেছিল একটি পাখি ডিম পাড়ার জন্য। গ্ৰামের এক বাসিন্দা সর্বপ্রথম সেটা দেখতে পেয়ে ছবি তুলে হোয়াটসঅ্যাপে দিয়েছিলেন। লাইট জ্বালাতে গেলে পাখির বাসা সরাতে হতো। ফলে সম্ভবনা ছিল ডিমের ক্ষতি হওয়ার। তখনই গ্ৰামবাসীরা সকলে মিলে সিদ্ধান্ত নেন যতদিন না ডিম ফুটে ছানা বের হচ্ছে ততদিন গ্ৰামের আলো জ্বালাবেনা তাঁরা। নতুন পাখি-শিশুর জন্ম হওয়া পর্যন্ত তাঁরা অপেক্ষা করবে। আর সেই সিদ্ধান্ত মতো বুলবুল পাখিটির ডিমের জন্য টানা ৩৫ দিন অন্ধকারে থাকল তামিলনাড়ুর এক অখ্যাত গ্ৰাম।
গ্ৰামের কলেজ পড়ুয়া তরুণ কারুপ্পুরাজা জানান, এই ভরা বর্ষার সময় আলো না জ্বালিয়ে গ্ৰামের মানুষ নানান অসুবিধায় পড়েছে। গ্ৰামে মোট ৩৫টি স্ট্রিট লাইট আছে সেগুলো সব বন্ধ ছিল। অন্ধকারে রাস্তায় টর্চ লাইট, হ্যারিকেন ব্যবহার করেছে কিন্তু সিদ্ধান্ত বদল করেনি। কিন্তু কাজটি সহজ ছিল না। একটি পাখির জন্য এতদিন কষ্ট ভোগ করাতে আপত্তি ছিল অনেক গ্ৰামবাসীর। কিন্তু গ্ৰামের তরুণ তরুণীরা বোঝাতে মেনে নেন তাঁরা।
কেউ কেউ পাখি উড়ে গেলে পাখির বাসাও পরিস্কার করে দিতেন। ডিম ফুটে পাখির ছানা বেরতেই আনন্দে মেতে ওঠে ১০০ পরিবারের সেই আশ্চর্য গ্ৰাম। প্রকৃতির কোলে তাঁরা উদযাপন করেছে পাখি- শিশু জন্মের। কারুপ্পারাজা জানান, লকডাউনের কারণে বহু মানুষকে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যেতে বাধ্য হতে হচ্ছে বাঁচার সন্ধানে। আমরা চাইনি ওই পাখিটিও ওরকম কষ্ট ভোগ করুক।
যখন নির্বিচারে চলছে বনজগৎ, বন্যপ্রাণী ধ্বংস তখন তামিলনাড়ুর ছোট্ট এই গ্ৰাম দৃষ্টান্ত স্থাপন করে দেখালো বনের পশুপাখি সকলকে নিয়ে একসাথে থাকার, বাঁচার। আর গ্রামবাসীদের এমন ত্যাগের খবর সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়তেই সোশ্যাল মিডিয়ার নেটিজেনরা কুর্ণিশ জানান ওই গ্রামবাসীদের।