দোকান দরকার নেই, B-Tech পাশ তাপসির বুদ্ধিতে দিল্লিতে চলছে রমরমিয়ে ফুচকা বিক্রি

নিজের ইচ্ছেমতো জীবন বাঁচারই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এই তরুণী। বিটেক পাশ করেছেন তিনি। এর পরে নিয়মমাফিক ইঞ্জিনিয়ারের চাকরি নিয়ে নিশ্চিন্ত জীবন কাটানোর রাস্তা খোলাই ছিল তাঁর সামনে। কিন্তু সেই চেনা পথে হাঁটতে চাননি তাপসী উপাধ্যায় (Tapasi Upadhyay)। তার বদলে মাত্র ২১ বছর বয়সেই এই তরুণী ঠিক করে ফেলেছেন, নিজের জীবনটাকে গড়ে তুলবেন নিজের হাতে। চাকরি নয়, নিজেই শুরু করবেন ব্যবসা। আর যেমন ভাবা, তেমনই কাজ। ফুচকা দিয়েই সেই ব্যবসা শুরু করে দিয়েছেন তরুণী।

তিনি বিটেক পাশ (B.Tech)। কিন্তু রাস্তায় ঘুরে ঘুরে ফুচকা বিক্রি করাকেই নিজের পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন এই তরুণী। লোকে কী বলবে, কী ভাববে, সেসব ভাবনাচিন্তাকে উড়িয়ে দিয়েছেন সপাটে। ফুচকার স্টলের সঙ্গে বাইক চালিয়ে বেড়ানো এই তরুণীর ছবি দেখে উচ্ছ্বসিত নেটিজেনদের একাংশও। আসুন, শুনে নেওয়া যাক এই অন্যরকম মেয়ের কথা।

এমনিতে পড়াশোনা শেষ করে চাকরি করে থিতু হবে ছেলেমেয়ে, এমনটাই স্বপ্ন থাকে মা বাবার। তার উপরে ইঞ্জিনিয়ারিং-এর মতো কোনও বৃত্তিমুখী কোর্স হলে তো কথাই নেই। কিন্তু সেই চেনা ছকটাকেই একেবারে ভেঙে দিয়েছেন তাপসী। বিটেকের ডিগ্রি পাওয়ার পরেই শুরু করেছেন ব্যবসা।

ফুচকার জনপ্রিয়তা নিয়ে তো নতুন করে কিছু বলার নেই। তাই ব্যবসার উপকরণ হিসেবে এই মুখরোচক খাবারটিকেই বেছে নিয়েছেন তিনি। তবে বাজারচলতি ফুচকা নয়, লোকজনকে স্বাস্থ্যকর ফুচকা খাওয়াতে চান তাপসী। আর এটাই তাঁর ব্যবসার মূল ইউএসপি। তেলে ভাজা নয়, তাপসীর কাছে গেলে গ্রাহকরা পাবেন এয়ার ফ্রায়ারে ভাজা ফুচকা। এমনকি ফুচকা তৈরি করতে ময়দাও ব্যবহার করেন না এই স্বাস্থ্যসচেতন তরুণী। ফুচকা দিয়ে শুরু করেছেন বটে, তবে এরপর নিজের স্টলে এমন আরও বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্যকর স্ন্যাকস রাখবেন বলে ভেবেছেন তিনি।

সাফল্যের পথে যে কেবল ফুল নয়, কাঁটাও বিছানো থাকে, সে কথা ভাল করেই জানেন তিনি। তাই বিটেক পাশ করে নিয়মমাফিক ইঞ্জিনিয়ারের চাকরি নিয়ে নিশ্চিন্ত জীবন কাটানোর রাস্তা খোলাই ছিল তাঁর সামনে। কিন্তু সেই চেনা পথে হাঁটতে চাননি তাপসী উপাধ্যায়।

এখনও কোনও পাকা দোকান নেই তাঁর। তাতে অবশ্য দমে যাননি দিল্লির তরুণী। নিজের বাইকের পিছনে ফুচকার স্টল নিয়েই শহর জুড়ে দাপিয়ে বেড়ান তিনি। অধিকাংশ সময়েই তিলকনগর মেট্রোর কাছাকাছি স্টল পেতে দাঁড়িয়ে পড়েন তিনি। ‘বিটেক পানিপুরিওয়ালি’ (B.Tech Panipuriwali)-র ফুচকা খেতে ভিড় জমান অনেকেই।

তবে সবাই যে একইভাবে ভাববেন না, তা তো বলাই বাহুল্য। তাই বিরুদ্ধ সমালোচনাও যে আসেনি এমন নয়। তাপসী জানিয়েছেন, রাস্তায় ফুচকা বিক্রি করতে গিয়ে বাধা পেয়েছেন তিনিও। কেউ কেউ বলেছেন, এমন কাজ মেয়েদের শোভা পায় না। তাঁর নিরাপত্তা নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন পরিবারের কেউ কেউ। কিন্তু এর কোনও কথাতেই কান দেওয়ার সময় নেই তাপসীর। আপাতত নিজের স্বপ্ন পূরণের জন্য সবটুকু দিয়ে ছুটে চলাই তাঁর লক্ষ্য।