সুখবর : জট কাটিয়ে পৌষমেলার দায়িত্ব নিলো বিশ্বভারতী

অমরনাথ দত্ত : পরিবেশ আদালতের দিকে তাকিয়ে ছিল পৌষ মেলার ভবিষ্যৎ। মেলার দূষণ নিয়ে চরম দোটানায় পরেছিল বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। মাসখানেক আগেই বিশ্বভারতীর উপাচার্য পৌষ মেলা ট্রাস্ট এবং অন্যান্য বিশ্বভারতীর আধিকারিকদের সাথে বৈঠক করে জানিয়েছিলেন, পৌষ মেলার এত ব্যয় ভার বহন করা অসম্ভব হয়ে পড়ছে বিশ্বভারতীর পক্ষে। আসলে পৌষ মেলা সবথেকে প্রতিবন্ধকতা হলো দূষণ, যার জন্য বারবার পরিবেশ আদালতে হোঁচট খেতে হয়েছে বিশ্বভারতীকে। যদিও কয়েক মাস আগের বিশ্বভারতীর এই সিদ্ধান্তে অসন্তুষ্ট হয়েছিলেন আশ্রমিকদের একাংশ, শহরবাসী ও শান্তিনিকেতন প্রেমিরা।

এমত দোটানা অবস্থায় বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ দফায় দফায় বৈঠক করে অবশেষে সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে মেলার দায়িত্বভার গ্রহণ করার। তবে এবার মেলা হবে ৬ দিনের পরিবর্তে ৪ দিন। পাশাপাশি বেশকিছু কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে মেলাকে পরিবেশবান্ধব করে তুলতে। মেলায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে কাঠের উনুন বা সেরকম কোন জ্বালানির ব্যবহারে,প্লাস্টিক এবং প্লাস্টিক জাতীয় দ্রব্য একেবারেই ব্যবহার করা যাবে না। এছাড়াও মেলায় যে স্টলগুলি বসবে তাদের কাছ থেকে ডিপোজিট মানি নেওয়া হবে, যাতে করে তারা যদি মেলা সমাপ্ত হয়ে যাওয়ার পর উঠতে না চায় তাহলে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারে।

এছাড়াও মেলার স্টল বুকিংয়ের ক্ষেত্রে নানান দুর্নীতির অভিযোগের কথা মাথায় রেখে প্রাথমিকভাবে বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী মেলা নিয়ে শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট এবং বিশ্বভারতীর অন্যান্য আধিকারিকদের সাথে একটি বৈঠক করে ইতিমধ্যেই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, মেলা মাঠের জমি বুকিং থেকে শুরু করে সমস্তটাই হবে অনলাইনে। এছাড়াও মেলা পরিচালনা নিয়ে একটি কমিটি গঠন হতে পারে।

যদিও পৌষ মেলা প্রসঙ্গে পরিবেশবিদ সুভাষ দত্ত জানিয়েছেন, আদালত কখনোই মেলা বন্ধের পক্ষে নয় বা মেলা বন্ধ করার নির্দেশ দেয়নি। মেলাকে পরিবেশবান্ধব করে তোলার নির্দেশ দিয়েছে। মেলা না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ।

চলতি বছরে পৌষ মেলার ভবিষ্যৎ নিয়ে নানান জটিলতা থাকার পর অবশেষে মেলা নিয়ে এমন সুখবর বিশ্বভারতীর আশ্রমিক এবং অন্যান্যদের কাছে পৌঁছাতেই তারা আনন্দে আত্মহারা হয়ে ওঠেন।

বিশ্বভারতীর প্রাক্তন উপাচার্য তথা শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের ট্রাস্টি সবুজকলি সেন জানান, “মেলা হবে, সেনিয়ে কোন দ্বিমত নেই। তবে মেলা ছয়দিনের জায়গায় হবে চার দিন, যেটা আগে হয়ে থাকতো। চারদিন মেলার শেষ দিন উঠে যাওয়ার জন্য।”