নিজস্ব প্রতিবেদন : রাজ্যে উত্তরোত্তর করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় রাজ্য সরকারের তরফ থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় সপ্তাহে দুদিন লকডাউন করার। এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার পাশাপাশি সোমবার রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় লকডাউনের বিষয়ে ঘোষণা করেন নবান্নের সাংবাদিক বৈঠক চলাকালীন। তিনি জানান, বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন ভাইরাস সংক্রমণের চেনকে ভেঙে দেওয়ার জন্য এই লকডাউন জরুরী। তারপর তাদের সাথে মুখ্যমন্ত্রী আলোচনা করে এই সিদ্ধান্তে এসেছেন। এখন থেকে প্রতি সপ্তাহে দুদিন লকডাউন জারি থাকবে। তবে প্রতি সপ্তাহে লকডাউনের দিনগুলি পরিবর্তন হবে। সপ্তাহের যে দুটি দিন লকডাউনের জন্য বেছে নেওয়া হবে তার ঘোষণা সপ্তাহের প্রথমেই করে দেওয়া হবে।
স্বরাষ্ট্র সচিবের এই ঘোষণা মত সোমবারই জানিয়ে দেওয়া হয় চলতি সপ্তাহের বৃহস্পতিবার এবং শনিবার রাজ্যে লকডাউন চলবে। আর আগামী সপ্তাহের প্রথম দিন হিসাবে বেছে নেওয়া হয়েছে বুধবার, দ্বিতীয় যে দিনটি বেছে নেওয়া হবে তা সপ্তাহের শুরুতে জানিয়ে দেওয়া হবে। সোমবার স্বরাষ্ট্র সচিব সপ্তাহে দুদিন লকডাউনের ঘোষণা করার পাশাপাশি জানিয়ে দেন রাজ্য সরকার খুব দ্রুত এনিয়ে একটি নির্দেশিকা প্রকাশ করবে, যে নির্দেশিকায় জানিয়ে দেওয়া হবে এই লকডাউন চলাকালীন কি কি করা যাবে আর কি কি করা যাবে না। যার পরেই মঙ্গলবার রাজ্য সরকারের তরফ থেকে একটি নির্দেশিকা জারি করা হয় এবং সেই নির্দেশিকায় নির্দিষ্ট কয়েকটি মাধ্যম ছাড়া বাকি সমস্ত কিছু বন্ধ রাখার ঘোষণা করে।
সপ্তাহে দুদিন লকডাউন চলাকালীন কি কি খোলা যাবে
পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তরফ থেকে মঙ্গলবার যে নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে তাতে জানা গিয়েছে, সপ্তাহে দু’দিন এই লকডাউন চলাকালীন স্বাস্থ্য সম্পর্কিত সমস্ত রকম পরিষেবা খোলা থাকবে। স্বাস্থ্য পরিষেবার সাথে যুক্তরা এবং স্বাস্থ্য পরিষেবার সাথে যুক্ত যানবাহন চলাচল করতে পারবে। পাশাপাশি কোন রোগীকে নিয়ে যাওয়া আসার ক্ষেত্রে চলাচল করতে পারবে যানবাহন।
খোলা থাকবে ওষুধের দোকান, মেডি পরিষেবা, আদালত, দমকলবাহিনীর পরিষেবা, আপাতকালীন পরিষেবা, কারেকশনাল সার্ভিস, থানা, বিদ্যুৎ পরিষেবা, জল-সরবরাহ ইত্যাদি জরুরী পরিষেবাগুলি।
এই লকডাউনে ছাড় দেওয়া হয়েছে চা বাগানের ক্ষেত্রকে এবং কৃষি ক্ষেত্রকে। অর্থাৎ কৃষি কাজের সাথে যুক্তরা এবং চা বাগানের শ্রমিকরা তাদের কাজকর্ম চালিয়ে যেতে পারবেন।
রাজ্যের মধ্যে এবং রাজ্যের বাইরে পণ্য সরবরাহের ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হয়েছে।
সেবির নির্দেশানুসারে ই-কমার্স তাদের পরিষেবা দিতে পারবে।
প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক মিডিয়া এবং সোশ্যাল মিডিয়ার পরিষেবা স্বাভাবিক থাকবে।
রান্না করা খাবার হোম ডেলিভারি দেওয়া এবং নেওয়ার ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হয়েছে।
পাশাপাশি বলা হয়েছে আগের নির্দেশিকার মতোই নাইট কারফিউ অর্থাৎ রাত্রি ১০ টা থেকে ভোর ৫ টা পর্যন্ত জরুরী ছাড়া সমস্ত রকম যাতায়াত বন্ধ থাকবে। অন্যান্য যে সকল ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হয়েছে সে সকল ক্ষেত্রে করোনা স্বাস্থ্য বিধি অনুযায়ী মাস্ক ব্যবহার এবং অন্যান্য প্রোটোকল মেনে চলতে হবে।