নিজস্ব প্রতিবেদন : রাজ্য বিদ্যুৎ পর্ষদের পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয়েছে এপ্রিল থেকে জুলাই পর্যন্ত ৪ মাসের বিদ্যুতের বিল জমা দেওয়ার সময়সীমা বাড়িয়ে ১০ই আগষ্ট পর্যন্ত করা হয়েছে। রাজ্যজুড়ে সিইএসসির লাগামছাড়া বিদ্যুতের বিলের মতো রাজ্য বিদ্যুৎ পর্ষদের বিল নিয়েও গ্ৰাহকদের মধ্যে অভিযোগ উঠছিল। গ্ৰাহকদের অভিযোগ রাজ্য বিদ্যুৎ পর্ষদ আকাশছোঁয়া বিল পাঠিয়েছে। এই বিল নিয়ে খোদ ক্ষোভ প্রকাশ করতে শুরু করে তৃণমূলের প্রথমসারির নেতা মন্ত্রীরাও। চাপে পড়ে রাজ্য বিদ্যুৎ বন্টন পর্ষদের আধিকারিকরা জানিয়েছেন, যে সব গ্ৰাহকদের বিল বেশি হয়ছে বলে মনে করছেন তাঁরা নিকটবর্তী বিদ্যুৎ পরিষদের অফিসে জানান। সমস্ত অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে।
রাজ্য বিদ্যুৎ পর্ষদের বর্ধমানের রিজিওনাল ম্যানেজার রাজু মন্ডলের বক্তব্য, “সামগ্ৰিক ভাবে মনে হচ্ছে, গড় বিলিংয়ে কিছু ভুল বোঝাবুঝি তৈরি হয়েছে। মিটার রিডিং কর্মীরা করোনা অতিমারীর জন্য বাড়িতে গিয়ে মিটার দেখতে পারেননি। তাই এই পদ্ধতিতে বিল তৈরি করতে হয়েছে।”
করোনা মহামারীর কারণে বহু মানুষ অর্থনৈতিক সঙ্কটে মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি বিদ্যুতের বিল মেটানোর দাবিতে আন্দোলন করছে। তখন পরিকল্পিতভাবে বিল না পাঠিয়ে এইভাবে লাগামছাড়া বিদ্যুতের বিল পাঠানোর কারণ কি? তার কোন সদুত্তর দিতে পারেননি বিদ্যুৎ পর্ষদ বন্টনের আধিকারিকরা।
অন্যদিকে সাধারণ মানুষ, সেলেব থেকে সরকারে থাকা রাজনৈতিক ব্যক্তিদের প্রবল সমালোচনার মুখে পরে ক্যালকাটা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কর্পোরেশন (CESC) জানিয়েছে, এপ্রিল ও মে মাসের অনাদায়ী বিল জমা দিতে হবে না। শুধু জুন মাসের বিল দিলেই হবে। তবে যেসব গ্ৰাহকরা ইতিমধ্যেই বিল জমা দিয়েছে তাদের ক্ষেত্রে কি হবে এই নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। এছাড়াও জুন মাসের বিল ফের আলাদা করে সিএসসি পাঠাবে কিনা, তার হিসাবই বা কীভাবে হবে তা নিয়েও ধন্দ তৈরি হয়েছে।
সমালোচনার মুখে পড়ে সোমবার CESC জানিয়েছে, নতুন বিল নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে আগামী ৩ থেকে ৪ দিনের মধ্যে। জুন মাসের বিল আলাদা করা হবে। যারা ইতিমধ্যে বিল জমা দিয়েছেন তাদের তাদের বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এপ্রিল ও মে মাস থেকে জুন মাসের বিলের হিসাব আলাদা করার চেষ্টা চলছে। নতুন বিল পাঠানো থেকে অনলাইনে বিল পেমেন্ট বিষয়গুলি গ্ৰাহকদের জানিয়ে দেওয়া হবে। লক্ষ লক্ষ বিদ্যুৎ গ্ৰাহকদের ক্ষোভের মুখে পড়েই এই সিদ্ধান্ত বদল বলে মনে করা হচ্ছে।
রাজ্যের শাসকরাও সিইএসসির বিল পাঠানো নিয়ে যে অসন্তুষ্ট হচ্ছিলেন তার বহিঃপ্রকাশ শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্যে ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের টুইটারে ‘কলকাতার জয়’ এর মাধ্যমে ফুটে উঠেছে।
করোনা সংক্রমণে বিপর্যস্ত অর্থনৈতিক অবস্থা, তার ওপর আমফানের ধাক্কা, সব মিলিয়ে চাপ বাড়ছিল সরকারের। তার জন্যই এই পিছু হটা বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।