ইন্টারনেটের চিন্তা দূর, ফোনেই উত্তর দেবেন শিক্ষকরা, নয়া উদ্যোগ রাজ্যের

শর্মিষ্ঠা চ্যাটার্জী : গত দু’বছর যাবৎ করোনা পরিস্থিতি আমাদের জীবনে বহুলাংশে এনেছে পরিবর্তন। তার মধ্যে অন্যতম হলো ঘরবন্দি থাকা। আর এই ঘরবন্দি থাকতে গিয়ে কিছু নিত্য নতুন শব্দবন্ধের সাথে আমাদের পরিচয় ঘটেছে। তার মধ্যে অন্যতম হলো, ডিজিটাল এডুকেশন অর্থাৎ অনলাইন ক্লাস। যেখানে বাড়িতে বসেই এক একটি নির্দিষ্ট অ্যাপের মাধ্যমে পড়ুয়ারা ক্লাস করতে সক্ষম হয়ে থাকে। যদিও এই অনলাইন ক্লাসের প্রসঙ্গ আসলে কয়েকটি প্রশ্ন মনের মধ্যে উঁকি দেয়। প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের পড়ুয়াদের সবার হাতে কি আদৌ রয়েছে স্মার্টফোন বা প্রতি মাসে রিচার্জ করার মতো অর্থ। এই প্রশ্নের উত্তর কিন্তু অনেক অংশেই না এসেছে।

তবে আর অসুবিধায় পড়তে হবেনা ছাত্রছাত্রীদের। পড়ুয়াদের সুবিধার্থে এবার উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ নিয়ে আসতে চলেছে এক নতুন পদ্ধতি। যে পদ্ধতির মাধ্যমে বাড়িতে বসেই শুধুমাত্র একটি ফোন কলের মাধ্যমে পড়ুয়ারা সহজেই যেকোনো বিষয়ে তাদের প্রশ্নের উত্তর পেতে পারেন অভিজ্ঞ শিক্ষক শিক্ষিকা দের দ্বারা।

সূত্রের খবর, সমস্ত কিছু ঠিকঠাক থাকলে চলতি মাসের ১৭ তারিখের পর থেকেই শিক্ষাথীরা এই সুবিধা পেতে পারবে। উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের এই অভিনব উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসনীয়। ফোনের মাধ্যমে আইভিআরএস বা ইন্টাব্যাকটিভ ভয়েস রেসপন্স সিস্টেমের দ্বারা শিক্ষকদের সাথে সরাসরি কথা বলার সুযোগ পাবে পড়ুয়ারা। এই পদ্ধতিতে সমস্ত বিষয়ের শিক্ষকের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

আইভিআরএস পদ্ধতিতে ফোন করে কোন বিষয়ে সমস্যা সেটি জানাতে হবে পরবর্তী সময়ে নির্দিষ্ট সময় শিক্ষক বা শিক্ষিকারা ওই বিষয়ের উত্তর দেবেন। উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি, চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য বলেছেন, প্রায় সব বাড়িতেই মোবাইল ফোন বা ল্যান্ডফোনের সুবিধা থেকে থাকে তাই এই ব্যবস্থা কাজে আসবে শিক্ষার্থীদের।

বর্তমানে মোট ১৮ টি বিষয়ের ক্ষেত্রে এই পদ্ধতি চালু করা হবে যেখানে প্রতিটি বিষয়ের ক্ষেত্রে ৩০-৪০ জন শিক্ষক বা শিক্ষিকারা থাকবেন। একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্র ছাত্রীদের জন্য এই ব্যবস্থা শুরু হতে চলেছে।

অতিমারি পরিস্থিতির কারণে বহুদিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে। ফের গত বছরের শেষের দিকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও করোনার বাড়বাড়ন্ত হওয়ার কারণে আবার সমস্ত কিছু বন্ধ করে অনলাইনের মাধ্যমে পাঠদানের কাজ শুরু হয়েছে। কিন্তু ইন্টারনেট পরিষেবা সংস্থানে সঠিক না থাকা এছাড়াও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার দরুন শিশু শ্রমিকের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে দিনের পর দিন তাই করোনা পরিস্থিতিতে শিশুদের প্রথাগত শিক্ষার অন্তর্ভুক্ত করানোর জন্য এমন সিদ্ধান্ত।

উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা নিয়েই ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে ধন্দ্ব। গত বছর এই পরিস্থিতির কারণে পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হয়ে ওঠেনি। সেই পরিস্থিতিতে এই বছর সংসদের পক্ষ থেকে পরীক্ষা নেওয়ার চিন্তা ভাবনা থাকলেও কতোটা বাস্তব রুপ পাবে তাই নিয়ে চলছে টালবাহানা। সূত্রের খবর মারফত জানা গিয়েছে, চলতি বছরে পরীক্ষা পেছনোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।