নিজস্ব প্রতিবেদন : ভিডিও শেয়ারিং অ্যাপ টিকটকে শুধু যুবক-যুবতীরা বিনোদনে মেতে উঠেছে তা নয়, জানেন এই টিকটকের দৌলতে হারিয়ে যাওয়া এক স্বামীকে খুঁজে পেল তার স্ত্রী। বলাই বাহুল্য, এই অ্যাপের সাহায্যে ভাঙ্গা সংসার জোড়া লাগালেন তিনি।
ঘটনার সূত্রপাত ২০১৬ সালে। তামিলনাড়ুর কৃষ্ণাগিরিতে দুই সন্তান এবং স্ত্রীকে রেখে চলে যায় এক স্বামী। এরপর অসহায় ওই স্ত্রী স্বামীকে বিভিন্ন জায়গায় খুঁজেছেন এবং শেষে স্থানীয় থানায় অভিযোগ করেন। কিন্তু এত কিছুর পরও স্বামীকে খুঁজে পাননি তিনি।
আর তারপর দেখতে দেখতে কেটে যায় তিন বছর। তিন বছর পর ওই স্ত্রীর আত্মীয়রা পালিয়ে যাওয়া স্বামী সুরেশের মত এক যুবককে দেখতে পান টিকটকের একটি ভিডিওতে। ওই আত্মীয়রা দ্রুত ওই স্ত্রীকে জানায় পুরো ঘটনাটি। তারপর উনি ভিডিও দেখে নিশ্চিত করেন যে ভিডিওতে থাকা ওই যুবকই তার স্বামী সুরেশ। আর তারপরেই পুরো ঘটনাটি জানানো হয় পুলিশকে, পুলিশ খুঁজে বের করে পালিয়ে যাওয়া ওই স্বামী সুরেশকে।
সুরেশের পালিয়ে যাওয়ার কারণ হিসাবে পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সংসারে প্রায় দিন ঝামেলার কারণে ২০১৬ সালে রাগ করে পালিয়ে যায় সুরেশ। এরপর তামিলনাড়ুর হশুড় শহরে একটি মেকানিকের কাজ জোগাড় করে সে। আর সেখানে কাজ করতে করতেই অন্য একজনের সাথে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। পরে সুরেশ এবং তার সাথে সম্পর্কিত মহিলা একসাথে একটি ভিডিও আপলোড করেন টিকটকে। তাদের ওই ভিডিও এবং সম্পর্কের সূত্র ধরেই পুলিশ পুরো ঘটনার হদিস করে খুঁজে বের করে সুরেশকে।
চাইনিজ এই অ্যাপটির জনপ্রিয়তা ভারতে বিপুল। প্রায় ১২০ মিলিয়ন মানুষ এই জনপ্রিয় অ্যাপটি ব্যবহার করে প্রতিদিন বিভিন্ন গান অথবা সংলাপের সাথে ঠোঁটে ঠোঁট মিলিয়ে অজস্র ভিডিও আপলোড করেন। কিন্তু মজাদার এই অ্যাপের বিরুদ্ধে অভিযোগেরও শেষ নেই।
টিকটকের মাধ্যমে পালিয়ে যাওয়া স্বামীর সুরেশকে খুঁজে পাওয়ার ঘটনা অ্যাপের যেমন ইতিবাচক দিক, ঠিক তেমনই এই অ্যাপের রয়েছে নেতিবাচক প্রভাবও। অনেকেই এই ধরনের ভিডিও আপলোড করতে আসক্ত হয়ে পড়ছেন, আসক্তি আরও বাড়াচ্ছে লাইক, শেয়ার কমেন্টের জন্য। সম্প্রতি এক তরুণী টিক টক ভিডিও তৈরি করার জন্য নদীতে ঝাঁপ দিয়ে নিখোঁজও হয়েছেন।
এমনকি এই টিকটক অ্যাপ পৌঁছায় ভারতের শীর্ষ আদালত পর্যন্ত। পর্নোগ্রাফি ছড়ানোর অভিযোগে কয়েক মাস আগে টিকটক অ্যাপ নিষিদ্ধ হয়। গুগল এবং অ্যাপেল স্টোর থেকে সরিয়ে নেওয়া হয় অ্যাপটি। তবে হাইকোর্টের ওই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে টিকটক কর্তৃপক্ষ দ্বারস্থ হয় সুপ্রিম কোর্টের। সেখানে অবশ্য টিকটক অ্যাপের কর্তৃপক্ষ জয় লাভ করে এবং অ্যাপটি থেকে নিষেধাজ্ঞা সরিয়ে নেওয়া হয়।