10 lakh houses will turn into dust in a possible earthquake in Bangladesh: প্রাকৃতিক দুর্যোগ যেকোনো দেশের পক্ষে সত্যিই দুঃখজনক। এর আগেও বহু প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে বিভিন্ন দেশের অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়েছে এবং প্রাণ গেছে বহু মানুষের। এমনই একটি ভয়ংকর প্রাকৃতিক দুর্যোগের (Earthquake in Bangladesh) সম্মুখীন হতে চলেছে ভারতের প্রতিবেশী রাষ্ট্র বাংলাদেশ। শনিবার বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আয়োজিত এক সেমিনারে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ-রাজউক পরিচালিত একটি গবেষণার চাঞ্চল্যকর তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। এই খবর রীতিমতো নাড়িয়ে দিয়েছে বাংলাদেশের জনগণকে।
শনিবার ঢাকা শহরের একটি হোটেলে রাজউক পরিচালিত ‘ইন্টারন্যাশনাল সেমিনার অন আরবান আর্থকোয়াক রেজিলিয়েন্স’ শিরোনামের এক অনুষ্ঠানে সংস্থাটির প্রধান প্রকৌশলী আবদুল লতিফ ঢাকায় যে সম্ভাব্য ভূমিকম্প হতে পারে তার চরম পরিণতি সম্পর্কে সতর্ক করেছে সকলকে। গবেষণার মাধ্যমে জানা গেছে যে, বাংলাদেশের মাটির নীচে সৃষ্টি হয়েছে ‘ফাটলরেখা’ বা চ্যুতি। এর ফলে ঝুঁকি বাড়ছে রাজধানী সহ গোটা দেশের। রাজউক আয়োজিত এই সেমিনারে, বুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক মেহেদী আহমেদ আনসারী মন্তব্য প্রকাশ করেছেন যে, বাংলাদেশে প্রত্যেক মাসেই দেখা দিচ্ছে মৃদু আকারের ভূমিকম্প (Earthquake in Bangladesh)। তাঁর মতে, বাংলাদেশে ১২৫ থেকে ১৭৫ বছরের মধ্যে ৭ মাত্রার ভূমিকম্প হয়। তবে সম্প্রতি এই ভূমিকম্প আকার ধারণ করতে চলেছে মারাত্মকভাবে।
গবেষণার মাধ্যমে ধরা পড়েছে যে, টাঙ্গাইলের মধুপুর ফল্টে যদি কখনো শক্তিশালী তীব্রতার ভূমিকম্প (Earthquake in Bangladesh) হয় তাহলে রাজধানী ঢাকার যত বাড়ি আছে তার অর্ধেকই ধ্বংস হয়ে যেতে পারে। এছাড়া গবেষণায় প্রকাশ্যে এসেছে যে, মধুপুর ফল্টে ৬ দশমিক ৯ তীব্রতার ভূকম্পনে ঢাকার ৮ লাখ ৬৪ হাজার ৬১৯টি থেকে ১৩ লাখ ৯১ হাজার ৬৮৫টি বাড়ি ধসে যেতে পারে কিংবা ভেঙে পড়তে পারে। যা মোট বাড়ির ৪০ দশমিক ২৮ থেকে ৬৪ দশমিক ৮৩ শতাংশ। পাশাপাশি ভারতের প্রতিবেশী দেশের রাস্তাঘাট, সেতু, বিদ্যুৎ–লাইন এই ধরনের পরিকাঠামোগত ক্ষতি হবার আশঙ্কা অনেকটাই বেড়ে যাবে।
আরও পড়ুন ? Passenger Carriage Deal: ভারত থেকে ২০০ কোচ নিচ্ছে বাংলাদেশ, দিতে হবে এত কোটি টাকা
এছাড়া, সিলেট শহরের এর চ্যুতির ফলে ৭.১ মাত্রার ভূমিকম্প হলে (Earthquake in Bangladesh) বাড়িঘরের পাশাপাশি ঢাকায় কমপক্ষে ২ লাখ ১০ হাজার থেকে ৩ লাখ ১০ হাজার মানুষ নিহত হবে। দুপুরে হলে ২ লাখ ৭০ হাজার থেকে ৪ লাখ এবং রাতে যদি ভূমিকম্প হয় তাহলে ৩ লাখ ২০ হাজার থেকে ৫ লাখ মানুষ নিহত হবে। এই প্রাকৃতিক দুর্যোগ এড়ানোর জন্য বর্তমানে কি করণীয়? আবদুল লতিফ হেলালী বলেন, এর সঙ্গে সম্পর্কিত একটা অরগানাইজেশন তৈরি করতে হবে, যার নাম হবে আরবান সেইফটি রেজিলিয়েন্স ইনস্টিটিউট নামে। এর মূল উদ্দেশ্য ভূমিকম্প সম্পর্কিত বিভিন্ন কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর, ফায়ার সার্ভিস, সিটি করপোরেশনসহ ঢাকায় যেসব সংস্থা আছে সাধারণত তারাই ভূমিকম্প-পরবর্তী বিভিন্ন ধরনের গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে থাকে। এই নতুন অরগানাইজেশনটি ভূমিকম্পের ঝুঁকি প্রশমনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করবে।
গণপূর্তমন্ত্রী বলেন, আসন্ন এই দুর্যোগের জন্য দায়ী দ্রুত নগরায়ন, নির্মাণ নিয়ন্ত্রণ এবং নৈতিকতার অভাব। যারফলে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের সব জেলা শহর ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। অন্যদিকে, জনসংখ্যা বৃদ্ধি এবং বেআইনি কার্যকলাপের কারণে শহরের উন্মুক্ত স্থানগুলি বেদখল হয়ে যাচ্ছে। ফলে বাড়ছে ভূমিকম্প এবং অন্যান্য প্রাকৃতিক বিপদের ঝুঁকি। তাই ভূমিকম্প ঝুঁকি হ্রাসের জন্য ঝুঁকি সংবেদনশীল ভূমি ব্যবহারের পরিকল্পনা, টেকসই উন্নয়ন নীতি ও কৌশল প্রয়োগের দ্বারা এইধরনের দুর্বলতাকে কাটিয়ে তুলে স্থায়ী ও ঝুঁকিমুক্ত শহর গড়ে তুলতে হবে।