লাল্টু : মোটর বাইক চুরি হওয়া এবং সেই মোটরবাইক ফিরে পাওয়ার ঘটনা নতুন কিছু নয়। কারণ বহু ক্ষেত্রেই দেখা যায় মোটরবাইক চুরি হয় এবং পুলিশি তৎপরতাই সেই মোটরবাইক আবার ফিরেও পাওয়া যায়। তাই বলে ১০ বছর আগে চুরি হওয়া মোটরবাইকও কি ফিরে পাওয়া যায়! ঘটনাটি অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি।
১০ বছর আগে চুরি যাওয়া এমন মোটর বাইক ফিরে পাওয়ার ঘটনা ঘটেছে বোলপুরের এক বাসিন্দার ক্ষেত্রে। তবে এই অভাবনীয় সাফল্য এসেছে বীরভূমের দুবরাজপুর থানার পুলিশের উদ্যোগে। ২০১২ সালের ২৮ আগস্ট বোলপুরের ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের ধর্মরাজ তলার বাসিন্দা নারুগোপাল ঘোষের মোটরবাইকটি চুরি হয় ইলামবাজার যাওয়ার পথে রায়পুর গ্রামে। এক দশক আগে চুরি যাওয়া সেই মোটরবাইকই দুবরাজপুর থানার পুলিশ উদ্ধার করে সোমবার নাড়ুগোপাল বাবুর হাতে তুলে দিলেন।
জানা যাচ্ছে, একটি বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত নাড়ুগোপাল ঘোষ অফিসের কোন কাজে সেই দিন রাতে ইলামবাজার যাচ্ছিলেন। সঙ্গে ছিল তার নতুন মোটরবাইক। এমন সময় রায়পুর বাসস্ট্যান্ডের কাছে যে কালভার্ট রয়েছে সেখানে কয়েকজন দুষ্কৃতী তার পথ আটকান এবং তার থেকে মোটরবাইক ছিনিয়ে নাড়ুগোপাল বাবুর হাত পা এবং মুখ বেঁধে তাকে কিছুটা দূরে ফেলে দেন। তারপর তিনি থানায় অভিযোগ জানালেও তার ঐ মোটরবাইকের কিনারা করা সম্ভব হয়নি। এমন পরিস্থিতিতে তিনি এক প্রকার আশা ছেড়ে দিয়েছিলেন সেই মোটরবাইক ফিরে পাওয়ার।
অন্যদিকে দুবরাজপুর থানার পুলিশ গত কয়েক মাস ধরে এইরকম চুরি যাওয়া মোটরবাইক উদ্ধারে রেকর্ড তৈরি করেছে। এখনো পর্যন্ত তারা ৪২টির বেশি চুরি যাওয়া মোটরবাইক উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে। চুরি যাওয়া এই সকল মোটর বাইক উদ্ধারের ঘটনায় দুবরাজপুর থানার পুলিশ গত ২৯ জুন দুবরাজপুর শহরের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মনিমোহন দাসকে গ্রেফতার করে এবং তার কাছে থেকে ৯টি চোরাই মোটরবাইক উদ্ধার করে। পরে তাঁকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে আরও দুটি মোটরবাইক উদ্ধার করে। মোট ১১টি বাইক উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মনিমোহন দাসের কাছ থেকে যে ১১টি চোরাই মোটরবাইক উদ্ধার হয়েছিল সেগুলির মধ্যে একটি ছিল নাড়ুগোপাল বাবুর। তার বাইকের সামনের ও পিছনের নম্বর প্লেট পাল্টে দেওয়া হয়েছিল। তবে পুলিশ ইঞ্জিন ও চ্যাসিস নম্বর দেখে আসল মালিকের পরিচয় বের করে এবং নাড়ুগোপাল বাবুর হাতে সেই মোটরবাইক তুলে দেয়। পুলিশের এমন অভাবনীয় প্রচেষ্টা ও এক দশক পরে এইভাবে মোটরবাইক ফিরে পেয়ে স্বাভাবিকভাবেই দুবরাজপুর থানার পুলিশকে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেছেন নারুগোপাল বাবু। পাশাপাশি তার সঙ্গে আসা নাড়ুগোপাল বাবুর বন্ধু লালমোহন সিং জানিয়েছেন, ‘১০ বছর আগে হারিয়ে যাওয়া বাইক আমাদের মাথা থেকেই হারিয়ে গিয়েছিল। দুবরাজপুর থানার প্রচেষ্টায় এভাবে বন্ধুর বাইক ফিরে পেয়ে স্বভাবতই খুশি। দুবরাজপুর থানার পুলিশকে অসংখ্য ধন্যবাদ।’