লকডাউনে কেন্দ্রের গুরুত্বপূর্ণ ১১টি নির্দেশিকা, ভারতীয় হিসেবে মেনে চলতে হবে আপনাকে

নিজস্ব প্রতিবেদন : দ্বিতীয় দফায় লকডাইনের বিস্তৃত নীতি নির্দেশিকা জারি করল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। এই নির্দেশিকা ২০ই এপ্রিলের পর থেকে সারা ভারত জুড়ে চালু হয়ে যাবে। দেশের প্রত্যেকটি রাজ্যকে এই নির্দেশিকা মেনে চলার জন্য বলা হয়েছে। এই নির্দেশিকায় কিছু নিয়ম আগের মতোই বলবৎ আছে। কিন্তু শিথিল করা হয়েছে কিছু কিছু নিয়ম। গুরুত্বপূর্ণ এই নির্দেশাবলীর মধ্যে

১) বন্ধ থাকবে সমস্ত রকম ট্রেন, বাস, বিমান পরিষেবা। নিরাপত্তাজনিত কারণে সরকার চাইলে শুরু করতে পারবে বিমান পরিষেবা। অটো রিক্সা, ট্যাক্সি, ই-রিক্সা, টোটো পরিষেবাও থাকবে সম্পূর্ণ বন্ধ। তবে চিকিৎসাজনিত কারণে যাতায়াতের জন্য কিছু ছাড় থাকবে। মিলবে এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্য যাওয়ার ছাড়পত্র।

২) সরকারি অনুমোদিত দোকান ছাড়া বন্ধ থাকবে অন্য সব দোকান। খোলা যাবে না সিনেমা হল, শপিং মল, জিম, স্টেডিয়াম, সুইমিং পুল, বিনোদন পার্ক, থিয়েটার, অডিটোরিয়াম, অনুষ্টান বাড়ি, হোটেল, রেস্তরাঁ।

৩) কঠোরভাবে নিষিদ্ধ সব সম্প্রদায়ের মানুষের ধর্মীয় জমায়েত। একই ভাবে নিষিদ্ধ রাজনৈতিক, বিনোদন, ক্রীড়া সম্পর্কিত জমায়েত। শুধুমাত্র ছাড় দেওয়া হয়েছে শেষকৃত্য ও বিয়ের জন্য। তবে সেটা সম্পন্ন করতে হবে জেলাশাসকের তদারকিতে ২০ জনের মধ্যে।

৪) লকডাউন চলাকালীন দেশজুড়ে বন্ধ মদ বিক্রি। পাশাপাশি বন্ধ গুটখার মত তামাকজাত দ্রব্য বিক্রি ও সেবন। যত্রতত্র খোলা জায়গায় থুতু ফেলা নিষিদ্ধ। এগুলি অমান্য করলে আইনানুগ ব্যবস্থার পাশাপাশি আর্থিক জরিমানা করা হবে।

যেসব ক্ষেত্রে নিয়ম শিথিল করা হয়েছে সেগুলো হল

১) সবরকম পণ্য পরিবহনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। সেটা অত্যাবশ্যকীয় হোক বা না হোক। কৃষির ক্ষেত্রে কৃষিজাত পণ্য আহরণ, মান্ডিতে বাজারজাত করা যাবে। সার, বীজ, কীটনাশকের ক্ষেত্রে উৎপাদন ও বন্টন করা যাবে।

২) মৎস চাষ, পশুপালন, পোল্ট্রি ফার্ম, চা, কফি ও রাবার প্লান্টেশনের ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হয়েছে।

৩) গ্ৰামের অর্থনীতিকে সচল রাখতে ছাড় দেওয়া হয়েছে। খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্প, সেচ প্রকল্প, গ্ৰামীন শিল্প প্রকল্পের নির্মাণ কার্য, রাস্তাঘাট নির্মাণ‌ করা যাবে।

৪) গ্ৰামীন শিল্প প্রকল্পের নির্মাণ কার্য, রাস্তাঘাট নির্মাণ‌ করার পাশাপাশি করা যাবে সেচ ও জল সংরক্ষণের কাজ।

৫) অনুমতি দেওয়া হয়েছে গ্ৰামীন কমন সার্ভিস সেন্টারের কাজ।

৬) বৃহৎ শিল্পের ক্ষেত্রে এসজেডএ, ইওইউ, বিভিন্ন শিল্প তালুককে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। আইটি হার্ডওয়ারের উৎপাদন ও প্যাকেজিংয়ের ক্ষেত্রে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। অনুমতি পেয়েছে কয়লা খনি ও তেল উৎপাদন ক্ষেত্রগুলি। সেই সঙ্গে আরবিআই ব্যাঙ্ক, এটিএম, সেবির নির্দেশমত মূলধন ও ঋণের বাজার ও বিমার কোম্পানিগুলি কাজ করবে। যাতে পর্যাপ্ত নগদ ও ঋণ দেওয়া যায় শিল্প ক্ষেত্রে।

তবে এইসব কিছুর ক্ষেত্রেই মেনে চলতে হবে সামাজিক দূরত্ব ও নিরাপত্তা প্রটোকলগুলি।

৭) ডিজিটাল অর্থনীতির পরিষেবার ক্ষেত্রে খোলা থাকবে ই-কমার্স, আইটি, আইটি এনাবেল সার্ভিস, সরকারি কাজের জন্য ডেটা এবং কল সেন্টার। অনলাইন ও দূরশিক্ষার ক্ষেত্রেও দেওয়া হয়েছে ছাড়পত্র। স্বাস্থ্য পরিষেবা ও সামাজিক প্রকল্পের কাজ চলবে আগের মতোই। কেন্দ্র, রাজ্য ও স্থানীয় প্রশাসনের কাজকর্ম চলবে স্বাভাবিক ভাবেই।

উপরিউক্ত গুরুত্বপূর্ণ ১১টি নির্দেশিকা ছাড়াও রয়েছে আরও কিছু বিধিনিষেধ। আর এই প্রতিটি নির্দেশিকা জারি হয়েছে বিপর্যয় মোকাবিলা আইন (২০০৫)-এর আওতায়। সুতরাং এগুলি একজন ভারতীয় হিসেবে আপনাকে তা মেনে চলতেই হবে। অমান্য করলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের বন্দোবস্ত রয়েছে।