স্থগিত করা হলো সরকারি কর্মচারীদের মহার্ঘ ভাতা বৃদ্ধি, কেন্দ্রের বড় ঘোষণা

নিজস্ব প্রতিবেদন : করোনা মহামারীর কারণে বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে দেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থা। দেশের অর্থনীতিকে সচল করার জন্য কৃষি, শিল্প, ব্যাঙ্কিংয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ কিছু কিছু ক্ষেত্রকে ছাড় দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। রাজস্ব না আসায় টান পড়েছে কোষাগারে। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় কর্মচারীদের ডিএ বা মহার্ঘ ভাতা (Dearness Allowance) না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।

এখনও পর্যন্ত মোট ৩ কিস্তির বকেয়া মহার্ঘ ভাতার অর্থ পাওনা রয়েছে সরকারি কেন্দ্রীয় কর্মচারীদের। জানুয়ারি থেকে প্রযোজ্য এই মহার্ঘ ভাতা আগামী জুন মাস পর্যন্ত না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেই দিয়ে দেওয়া হবে মুলতবি রাখা এই মহার্ঘ বকেয়া ভাতা।
এই সিদ্ধান্তের আওতায় আসবেন দেশের ৪৮.৩৮ লক্ষ কর্মচারী ও ৬৫.২৬ লক্ষ পেনশনভোগী মানুষ জন।

এতে ২০২১ সালের মার্চ পর্যন্ত সরকারি তহবিলে জমবে ২৭,০০০ কোটি টাকা।
কেন্দ্রীয় সরকার চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে ডিএ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। ১৭ শতাংশ মহার্ঘ ভাতার পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছিল ২১ শতাংশে। কিন্তু বর্তমানে সঙ্কটজনক পরিস্থিতিতে দেশের অর্থনীতিকে বাঁচাতে দরকার বিপুল অর্থ। নানা পথে সরকারি তরফে চলছে সেই প্রচেষ্টা। সেই প্রচেষ্টাকে সফল করতেই এই বকেয়া মহার্ঘ ভাতা মুলতবি রাখার সিদ্ধান্ত সরকারের বলে মনে করছেন দেশের অর্থনৈতিক মহল।

সরকারের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, “সমাজ অর্থনৈতিক ভাবে দুর্বল ও করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া মানুষদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও কল্যাণমূলক ব্যয়ের জন্য বিপুল অর্থের প্রয়োজনে। এই সব মানুষদের সামাজিক সুরক্ষা দেওয়ার প্রয়োজনেই এই সিদ্ধান্ত।”

কেন্দ্রীয় সরকারি বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, ২০২০ সালের জানুয়ারি মাস থেকে ১ জুলাই পর্যন্ত এই মহার্ঘ ভাতার অর্থ দেওয়া মুলতবি রাখার সিদ্ধান্তের পথে রাজ্য সরকারগুলি হাঁটে কিনা সেটাই এখন দেখার।

ইতিমধ্যেই কোষাগারের হাল ফেরাতে কিছু রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের বেতন কাটার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কেরলের বাম সরকার সরকারি কর্মচারীদের ১ মাসের বেতন পিছিয়ে দিয়েছে। ওই টাকা পাঁচটা কিস্তিতে কেটে নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।অবশ্য পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ওই টাকা ফেরত দেওয়া হবে।

পশ্চিমবঙ্গের অর্থনৈতিক অবস্থাও ভালো নয়। রাজস্ব আদায় এই মুহূর্তে তলানিতে এসে ঠেকেছে। রাজস্বের বেশিরভাগ টাকা আসা আবগারি দপ্তর ও জমি বাড়ি বিক্রির ওপর কর আদায় করে। দুটো ক্ষেত্রেই রাজস্ব আদায় বন্ধ। সেই সঙ্গে রাজ্যের সরকারি কর্মচারীদের ডিএ কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মচারীদের তুলনায় অনেক কম। যা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চলছিল সরকার ও রাজ্য কর্মচারীদের মধ্যে দড়ি টানাটানি। এখন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ডিএ নিয়ে কি সিদ্ধান্ত নেন তাই দেখার।