নিজস্ব প্রতিবেদন : করোনা আক্রান্ত রোগীর মৃত্যু নিয়ে বিভ্রান্তি। দিন কয়েক আগেই তিনি মৃত বলে ঘোষিত হয়েছিলেন। তবে তার শ্রাদ্ধের ঠিক আগের দিন সশরীরে হাজির নিজের বাড়িতেই। আর এই ঘটনায় যেমন হতভম্ব পরিবার, ঠিক তেমনই শোরগোল পড়ে যায় এলাকায়। শোরগোলের পাশাপাশি এমন ঘটনায় প্রশ্নের মুখে পড়েছে স্বাস্থ্য দপ্তর। যার পরে নড়েচড়ে বসেছে তারাও।
বিরাটির বিদ্যাসাগর সরণির ব্যানার্জি বাড়ির বছর পঁচাত্তরের শিবদাস ব্যানার্জি করোনা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। তবে সেই ব্যক্তি সুস্থ হয়ে উঠেছেন। কিন্তু তার পরিবার জানলো তিনি মারা গেছেন। এরপর শোকে কাতর পরিবারের লোকজন ছোট করে শ্রাদ্ধানুষ্ঠানের আয়োজন করেন। আর সে সময়ই সশরীরে বাড়িতে হাজির শিবদাস বাবু।
ব্যানার্জি পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, তাদের পরিবারের ওই সদস্য করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর তাকে ভর্তি করা হয় খড়দহের বলরাম হাসপাতালে। এরপর হাসপাতালে তরফ থেকে বাড়ির লোকজনকে জানানো হয়েছিল শিবদাস বাবু মারা গেছেন বলে। এমনকি তাদের হাতে একটি দেহও দেওয়া হয়েছিল, যে দেহ তারা দাহও করেছিলেন। আর দাহ করার পর সনাতন শাস্ত্র মতে শ্রাদ্ধ এবং অন্যান্য রীতিনীতির আয়োজন করা হয়। তবে শ্রাদ্ধানুষ্ঠানের আগেই করোনা জয় করে সশরীরে বাড়িতে ফেরেন শিবদাস বাবু। আর এই ঘটনায় হতভম্ব হয়ে যান পরিবারের লোকজন।
কিন্তু প্রশ্ন হলো ওই ব্যানার্জি পরিবারের সদস্যরা যে ব্যক্তির দাহ করেছিলেন তাহলে সেই দেহ কার? এ বিষয়ে জানা গিয়েছে, শিবদাস বাবুর পরিবারের লোকজন যে দেহটি দাহ করেছিলেন সেটি হল খড়দহের মোহিনীমোহন মুখার্জির দেহ। শিবদাস বাবু এবং মোহিনীমোহন বাবু দু’জনকেই একই দিনে খড়দহের বলরাম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। পরে শিবদাস ব্যানার্জিকে বারাসতের জিএনআরসি হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। আর গণ্ডগোলটা তখনই বাঁধে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মনে করে মোহিনীমোহন বাবুকে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। এরপর মোহিনীমোহন বাবুর মৃত্যু হলে ব্যানার্জি পরিবারকে জানানো হয় শিবদাস বাবুর মৃত্যু হয়েছে বলে। এমনই তাজ্জব ঘটনা ঘটেছে এই রাজ্যে।
ঘটনার পর মুখ পুড়েছে রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের। যার পরেই তদন্ত শুরু করেছে স্বাস্থ্য দপ্তর। প্রাথমিক রিপোর্ট অনুযায়ী দু’জন নার্স, এক সিস্টার ইনচার্জ ও এক চিকিৎসকের গাফিলতির উল্লেখ রয়েছে। সেই রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে স্বাস্থ্য ভবনে। চার জনকেই শোকজ করা হয়েছে।