নিজস্ব প্রতিবেদন : কথায় আছে রাখে হরি তো মারে কে! বলা হয় যে সরল মনে নিষ্পাপ হয়ে ভগবানকে ডাকলে তিনি সেই কথা অবশ্যই শোনেন। এই প্রবাদ বাক্য যে কতখানি সত্য তা চার বছরের একরত্তি শিশু মহঃও টের পেলো। ১৯ ঘণ্টা পর ধ্বংসস্তূপ থেকে বেরিয়ে এলো একটি তরতাজা প্রাণ।
গত সোমবার সন্ধ্যের দিকে মহারাষ্ট্রের রায়গড়ের অভিজাত এলাকার একটি পাঁচতলা আবাসন হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে। এই আবাসনে মোট ৪৭টি পরিবার বাস করতেন। মোট ২০০ জন মানুষ এখানে বাস করতেন। আবাসনটি হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ার পর জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী উদ্ধার কার্যে লেগে পরে। ১৯ ঘণ্টা উদ্ধারকার্য চালানোর পর হঠাৎ করে ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে তাদের কানে একটি শিশুর কান্নার আওয়াজ ভেসে আসে। তখন তারা বুঝতে পারে যে ধ্বংসস্তূপের মধ্যে একটি ছোট্ট শিশু আছে। তাকে বাঁচাতে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী তাদের সবটুকু দিয়ে চেষ্টা করতে থাকেন।
আর ধ্বংসস্তূপের মধ্যে দাদা দিদির মৃতদেহের পাশে তখন পড়েছিল ছোট্ট মহঃ, তার মা তাকে বুকে করে আগলে রেখেছিলেন। যদিও মায়েরও প্রাণ ছিলো না। ধ্বংসস্তূপে দাদা দিদি ও মায়ের মৃতদেহের পাশে পড়ে থেকেও কিছুই বুঝতে না পারা একরত্তি শিশু তখন জলের তেষ্টায় কেঁদে উঠেছিল, আর তার এই কান্নায় তাকে বাঁচিয়ে দিল সাক্ষাৎ মৃত্যুর হাত থেকে।
১৯ ঘণ্টা পর ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার করা হয় শিশুটিকে। কংক্রিটের চাঙর খসে পড়ে তার মাথায় গুরুতর আঘাত লেগেছে। রক্ত জমাট বেঁধে আছে মাথায়, তবে প্রাণের ঝুঁকি আর নেই। তাকে উদ্ধার করতে পেরে আনন্দে উল্লসিত হয়ে ওঠেন জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সদস্যরা। এই একরত্তি প্রাণকে বাঁচাতে তারা যে মরিয়া হয়ে উঠেছিল এ তারই প্রমাণ।
#WATCH: A 4-year-old boy was rescued from under the debris at the site of building collapse in Mahad, Raigad. #Maharashtra pic.twitter.com/polMUhzmqN
— ANI (@ANI) August 25, 2020
উদ্ধার করার পর মহঃ বাঙ্গিকে স্ট্রেচারে করে হাসপাতালে পাঠানো হয়। ওই খুদের যেটুকু বলার ক্ষমতা তাতেই সে জানিয়েছে, “হঠাৎ করে বিল্ডিংটা হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে। আশেপাশের সকলের চিৎকার আর কান্না শুনতে পাচ্ছিলাম। দাদা দিদিকে দেখতে পেলেও কেউ কথা বলছিল না, শুয়ে ছিল। মা আমাকে বুকে জড়িয়ে ধরে রেখেছিল। ঘুটঘুটে অন্ধকারের মধ্যে কতক্ষণ যে আটকে পড়েছিলাম খেয়াল ছিল না। তবে খুব জল তেষ্টা পাচ্ছিল।”