শুভেন্দুর ইস্তাফা, দল ছেড়ে যাওয়া তৃণমূলের ৬ কালো ঘোড়া

নিজস্ব প্রতিবেদন : তৃণমূলে যাকে এক সময় ভবিষ্যতের মুখ বলে ধরা হচ্ছিল সেই শুভেন্দু অধিকারী সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে বিধানসভার অধ্যক্ষের কাছে পদত্যাগ পত্র জমা দিলেন বুধবার। নন্দিগ্ৰাম আন্দোলনের নায়ক বাংলা রাজনীতির তরুণ তুর্কি শুভেন্দুর বিদ্রোহ ও পদত্যাগ তৃণমূল থেকে বেরিয়া আসা প্রথম সারির নেতাদের সংখ্যা আরও একবার বাড়ালো।

মমতার হাতে ১৯৯৮ সালে যে দলের জন্ম হয়েছিল, সেই দলে প্রথম সারির নেতারা যেভাবে একের পর দল থেকে বেরিয়ে আসছেন তা এক নজিরবিহীন ঘটনা।

সাংগঠনিক শক্তিতে বলীয়ান দীর্ঘদিন ধরে বাংলায় শাষণ ক্ষমতায় থাকা ব্রামফ্রন্টকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে বিপুল জনসমর্থন নিয়ে ক্ষমতায় আসে তৃণমূল ২০১১ সালে। কিন্তু সেই সমর্থন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেমন ধরে রাখতে পারেননি বাইরে তেমন দলের ভিতরেও। ফলে ভাঙন শুরু হয় অচিরেই। মুকুল রায়ের দলত্যাগ থেকে শুরু হয় বড়সড় ভাঙন।

মুকুল রায় : ২১০৭ সালে দল ছাড়েন মুকুল রায়। তৃণমূল দল গঠনে ১৯৯৮ সালে অন্যতম কারিগর ছিলেন মুকুল রায়। মুকুল রায়ের দলত্যাগ ও বিজেপিতে যোগদানের পরই তৃণমূলে শুরু হয় ক্রমাগত ভাঙন পর্ব। আর যে ভাঙন পর্বের অন্যতম কারিগর হয়ে ওঠেন চাণক্য মুকুল রায়।

অর্জুন সিং ও সৌমিত্র খাঁ : মুকুল রায়ের হাত ধরে এরপর বেরিয়ে আসেন অর্জুন সিং ও সৌমিত্র খাঁয়ের মতো প্রভাবশালী তৃণমূল নেতারা। ২০১৯ সালে লোকসভা ভোটের আগে মমতার সঙ্গে অর্জুন সিংহের মতবিরোধ তীব্র আকার নেয়। দিনেশ ত্রিবেদীকে হারিয়ে তিনি লোকসভায় পৌঁছান। যদিও অর্জুন সিং বুঝিয়ে দেন এই জয় ছিল মমতার বিরুদ্ধে।

শোভন চট্টোপাধ্যায় : ২০১৯ সালেই মমতাকে ছাড়েন মমতার প্রিয় কানন ওরফে শোভন চট্টোপাধ্যায়। শৌভন-বৈশাখি ব্যক্তিগত জটিলতা রাজনৈতিক জটিলতায় পরিণত হয়। যাতে শেষ পর্যন্ত দল ছাড়েন শোভন দেব। রাজনৈতিক বিচক্ষণহীনতার পরিচয় দেন মমতা।

সব্যসাচী দত্ত : এরপর বিধাননগরের দাপুটে তৃণমূল নেতা সব্যসাচী দত্ত দল থেকে সরে আসেন। রাজনৈতিক মহলের খবর তৃণমূল থেকে তাঁর সরে আসার পিছনে ছিল চাণক্য মুকুল রায়ের হাত।

মিহির গোস্বামী : গতমাসে দল ছাড়েন মিহির গোস্বামী। তাঁর অভিযোগ ছিল দীর্ঘদিন ধরে তিনি তৃণমূল করছেন কিন্তু দল তাকে প্রাপ্য মর্যাদা দেয়নি। দলীয় সব চেষ্টা স্বত্বেও তিনি তৃণমূল থেকে সরে যান।

এবার শুভেন্দু অধিকারীর পদত্যাগ তৃণমূলের দল পরিচালানা নিয়েই প্রশ্ন তুলছে সমস্ত রাজনৈতিক মহলে। প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে তৃণমূলের রাজনৈতিক অস্তিত্ব টিকে থাকা নিয়েই। কেন তৃণমূলের প্রথম সারির নেতারা দলত্যাগ করছে তা নিয়ে চলছে রাজনৈতিক চূলচেরা বিশ্লেষণ। শুভেন্দুর পদত্যাগ কি তৃণমূলের ভাঙনকে আরও তরান্বিত করবে না তৃণমূল আবার ঘুরে দাঁড়াবে! তাই হয়ে উঠতে চলছে ২১ এর ভোটের প্রধান প্রশ্নচিহ্ন!