ডিসেম্বরের মধ্যে ৬৭ কোটি ভারতবাসী আক্রান্ত হতে পারে করোনায়, দাবি গবেষকদের

নিজস্ব প্রতিবেদন : করোনা সংক্রমণের ক্ষেত্রে ভারতের বর্তমান পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। ভারতের করোনা সংক্রমণের রবিবারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী গত ২৪ ঘন্টায় একদিনেই ভারতে আক্রান্ত হন ৮৩৮০ জন। শনিবারও সংখ্যাটা ছিল আট হাজারের কাছাকাছি। বিশেষজ্ঞদের মতে ৬.৫ শতাংশ হারে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে যা ইরান, ইতালি, ফ্রান্স, স্পেন, জার্মানি থেকে বেশী।

জার্মানিতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখের ঘর পেরোনোর পরে ছিল ১.৮২ শতাংশ,  ফ্রান্সে ছিল ১.৭৬ শতাংশ। স্পেনে ২.৮৪ শতাংশ ও ইতালিতে ৩.১৭ শতাংশ। অবশ্য আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র বা রাশিয়ার থেকে ভারতের হার আপাতত কম। বর্তমানে ভারতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১ লক্ষ ৮২ হাজার ১৪৩।

যেখানে ভারতে মৃতের সংখ্যা ৫১৪৩ হয়ে গেছে। এরকম পরিস্থিতিতেই আগামী ৩১ তারিখ দেশে শেষ হতে চলেছে চতুর্থ দফার লকডাউন। পঞ্চম দফার লকডাউনের কথা বলা হলেও তাকে আক্ষরিক অর্থে লকডাউন বলা যায় না। এই লকডাউনে করোনা ভাইরাসকে সঙ্গে করেই স্বাভাবিক ছন্দে ফেরার চেষ্টা চালাবে ভারত।

আর এই সিদ্ধান্তই ডেকে আনতে পারে বিপদ। এরকমটাই মনে করছেন ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ মেন্টাল হেল্থ অ্যান্ড নিউরোসায়েন্সের চিকিৎসক ও গবেষকরা। তারা জানিয়েছেন জুলাই মাসে ভারতে করোনা সংক্রমণ চূড়ান্ত পর্যায়ে যাবে এবং ডিসেম্বর মাসের মধ্যে ভারতের ৬৭ কোটি মানুষ করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত হবেন।

তবে এই সংক্রমণের কারণ হিসেবে আরেকটি বিশেষ কথারও উল্লেখ করেছেন তারা। তাদের কথায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের ৯০ শতাংশই জানবেন না যে তাদের শরীরে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ ঘটেছে। বিজ্ঞানীদের মতে ডিসেম্বর মাসের মধ্যে আক্রান্ত ৬৭ কোটি জনগণের মধ্যে মাত্র ৫ শতাংশ মানুষের অবস্থাই গুরুতর হবে, অর্থাৎ প্রায় ৩ কোটি মানুষকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে হবে।

এবার দেখা যাক ভারতের বর্তমান চিকিৎসা ব্যবস্থা। ভারতে করোনা আক্রান্ত ব্যক্তিদের চিকিৎসার জন্য আছে মাত্র ১ লক্ষ ৩০ হাজার বেড। এই অবস্থায় ৩ কোটি মানুষকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে হলে ভারতের চিকিৎসা ব্যবস্থা যে কতটা ভেঙে পড়তে পারে তার আন্দাজ লাগানোই যায়। ফলে উদ্বেগ বাড়ছে চিকিৎসকদের।

রবিবারের রিপোর্ট অনুযায়ী ভারতে এখনও পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত ১ লাখ ৮২ হাজার ১৪৩। শুধুমাত্র মহারাষ্ট্রে আক্রান্তের সংখ্যা ৬৫,১৬৮। একদিনেই ৯৯ জন মারা গেছেন সেই রাজ্যে। গত ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই দেশে ৮০০০-এর বেশি মানুষ করোনা সংক্রমিত হচ্ছেন। দৈনন্দিন ভিত্তিতে এই সংক্রমণ প্রতিনিয়ত টপকে যাচ্ছে আগের দিনের রেকর্ডকে।

এমন পরিস্থিতিতে বেশ কিছুদিন যাবত পরিযায়ী শ্রমিকদের নিজ রাজ্যে ফেরানোর ব্যবস্থা চলছে। প্রতিদিন হাজারের সংখ্যায় পরিযায়ী শ্রমিক নিজের রাজ্যে ফিরছেন। এই অবস্থায় দেশের করোনা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।