নিজস্ব প্রতিবেদন : বাংলাদেশী ইলিশ (Bangladeshi Ilish) অর্থাৎ পদ্মার ইলিশ নিয়ে এতদিন নিজেদের অহংকারী সব কথাবার্তা বলতে দেখা যাচ্ছিল বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে শীর্ষস্থানীয় নেতা-নেত্রীদের। তবে সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে সেই অহংকার এখন যেন পদ্মার জলে ভেসে গেল। অন্ততপক্ষে বাংলাদেশেরই পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং জল সম্পদ মন্ত্রকের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান যা জানিয়েছেন তাতে এমনটাই স্পষ্ট।
দেশের মানুষের চাহিদা না মেটানো পর্যন্ত ভারতের পাশাপাশি বিদেশের কোন দেশকেই পদ্মার ইলিশ দেওয়া হবে না এমনটা বারবার বলতে শোনা গিয়েছে বাংলাদেশের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রকের উপদেষ্টা ফারিদা আখতারকে। তবে এমন গরম গরম পরিস্থিতির পর অবশেষে কত সপ্তাহে বাংলাদেশ সরকার ৩ হাজার মেট্রিক টন পদ্মার ইলিশ ভারতকে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেই। আবার এই সিদ্ধান্তের পর বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের এক আইনজীবী ভারতকে ইলিশ রপ্তানি করা বন্ধ করতে সরকারকে নোটিশ দেয়।
এই সমস্ত জল্পনার মাঝেই বাংলাদেশের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং জনসম্পদ মন্ত্রকের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান স্বীকার করে নিয়েছেন, তাদের দেশের স্বার্থেই তারা ভারতকে পদ্মার ইলিশ রপ্তানি করছে। তিনি স্বীকার করে নিয়েছেন বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি এখন অনেক খারাপ। এমন পরিস্থিতিতে বাড়তি ডলারের আশায় ভারতকে এত সংখ্যক পদ্মার ইলিশ রপ্তানি করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন : Padma Ilish: পদ্মার ইলিশ নিয়ে ফের তৈরি হল জট, বিজ্ঞপ্তি জারি হলেও রপ্তানি বন্ধে জারি আইনি নোটিশ
বাংলাদেশের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং জনসম্পদ মন্ত্রকের উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান জানিয়েছেন, তারা উপহার হিসাবে নয়। তারা ভারতকে ইলিশ রপ্তানি করছেন বাণিজ্যিক পরিপ্রেক্ষিতেই। এর পাশাপাশি তিনি জানিয়েছেন, প্রত্যেকেই জানেন এখন তাদের দেশে ডলারের কতটা প্রয়োজন। ডলারের যে প্রয়োজন সেই বিষয়টি ছোট করে দেখার বিষয় নয়। এর থেকেই স্পষ্ট বাংলাদেশের হাতে ডলার কম থাকার কারণেই নিজেদের স্বার্থেই ভারতকে পদ্মার ইলিশ রপ্তানি করছে।
এখন প্রশ্ন জাগতে পারে বাংলাদেশ-ভারতকে কত দামে ইলিশ দিচ্ছে? গত বছর বাংলাদেশ ভারতকে এক কেজি ইলিশ রপ্তানি করার পিছনে নিয়েছিল ১০ মার্কিন ডলার। যদিও আকার ভেদে ইলিশের দাম পেয়ে থাকে বাংলাদেশ। কোনটির জন্য যেমন তারা ১০ ডলার পেয়ে থাকে ঠিক সেই রকমই আবার কোন কোনটির জন্য ৬-৮ ডলার পেয়ে থাকে। এক্ষেত্রে এই বছরও একই রকম দাম থাকতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে। আর এই দাম থাকলে অন্ততপক্ষে বাংলাদেশ কেবলমাত্র ইলিশ রপ্তানি করেই লক্ষ লক্ষ কোটি ডলার নিজেদের ভান্ডারে ঘটতে পারবে।