Ganga Sagar: গঙ্গাসাগর এলাকায় ঘটলো ভয়াবহ ভাঙ্গন, বিপদের মুখে কপিল মুনির আশ্রম। পশ্চিমবঙ্গের বৃহত্তম মেলাগুলির মধ্যে অন্যতম গঙ্গাসাগরের মেলা। এটি মূলত একটি ধার্মিক মেলা। এই মেলার আয়োজন করা হয় গঙ্গা ও ব্রহ্মপুত্রের মিলন স্থলে। এই মোহনার নামই গঙ্গাসাগর (Ganga Sagar)। এটি দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপ সাব-ডিভিশনের অন্তর্গত একটি এলাকা। প্রতিবছর গঙ্গাসাগরকে ঘিরে আয়োজন করা হয় এক বিরাট মেলার। লক্ষাধিক ভক্তরা আসেন সেখানে পুণ্যার্জনের উদ্দেশ্যে। ভক্তদের সুবিধার কথা চিন্তা করে সরকারের পক্ষ থেকে একাধিক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তৈরি করা হয়েছে একাধিক আবাসন। কিন্তু সম্প্রতি এই এলাকাটি সবথেকে বেশি বিপদের মুখে রয়েছে বলে জানা গেছে।
তথ্যসূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি গঙ্গাসাগর (Ganga Sagar) এলাকার এক থেকে পাঁচ নম্বর স্নান ঘাটে ভয়াবহ ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। এই ভাঙ্গন রোধে এবং পরিস্থিতি সামাল দিতে পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে সরণাপন্ন হতে হয়েছে চেন্নাই আইআইটির। ভাঙ্গন দেখা দিতেই চেন্নাই আইআইটির সাথে যোগাযোগ করেছিল পশ্চিমবঙ্গ সরকার। আইআইটির পক্ষ থেকে এলাকায় এসে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য যাবতীয় পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছিল। কিন্তু পরিস্থিতি এই মুহূর্তে আরো ভয়াবহ। সবকিছু যেন হাতের নাগালের বাইরে বেরিয়ে যাচ্ছে।
গত কয়েকদিন ধরে গঙ্গাসাগরের (Ganga Sagar) স্নান ঘাটে যে ভয়াবহ ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে তাতে তলিয়ে গেছে বিস্তীর্ণ এলাকা। কংক্রিটের রাস্তা, বিদ্যুতের খুঁটি, অস্থায়ী দোকান সহ জলের তলায় তলিয়ে গেছে একাধিক গাছ এমনকি জনসাস্থ্য কারিগরি দপ্তরের জলের লাইনটিও। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ হয়ে গেছে যে, বিপদের মুখে পড়েছে কপিল মুনির আশ্রমও। কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে দেওয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, পরিস্থিতি যে হারে খারাপের দিকে এগোচ্ছে তাতে এক্ষুনি সামাল দেওয়া না গেলে কপিল মুনির আশ্রম জলে তলায় তলিয়ে যেতে আর বেশি দিন বাকি নেই।
আরো পড়ুন: লাভ না ক্ষতি? DVC-র সঙ্গে সম্পর্ক শেষ করলে কী হবে রাজ্যের বাসিন্দাদের
গত সপ্তাহের বৃহস্পতি ও শুক্রবার থেকে চলছে পর্যবেক্ষণ। সুন্দরবন সেচ ও উন্নয়ন দপ্তরের পক্ষ থেকে করা হচ্ছে সমিক্ষা। ভাঙন হওয়া এলাকা থেকে বালি ও মাটি সংগ্রহ করা হয়েছে। এছাড়া জোয়ারের সময় এবং ভাঁটার সময় জলোচ্ছ্বাসের পরিমাণ কতটা তাও পরিমাপ করা হয়েছে। এই দুদিন সেখানে উপস্থিত ছিলেন স্বয়ং সুন্দরবন উন্নয়ন দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী বঙ্কিম হাজরা। সেচ দপ্তরের তরফ থেকেও নেওয়া হয়েছে সাহায্য। এইমুহুর্তে গঙ্গাসাগরের (Ganga Sagar) পরিস্থিতি সামাল দিতে তৎপর গোটা রাজ্য।
আগামী বছর গঙ্গাসাগর (Ganga Sagar) মেলার দিন এগিয়ে আসছে। তার আগে এই ভাঙ্গন রোধ করা প্রয়োজন। না হলে এবার হয়তো আর এই ধার্মিক মেলার আয়োজন করা সম্ভব হবে না কর্তৃপক্ষের পক্ষে। শুধু তাই নয়, ভাঙ্গনের পরিমাণ বাড়তে থাকলে গঙ্গাসাগরের আশপাশের এলাকাও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এই ভাঙ্গন রোধ করা প্রয়োজন। আপাতত নির্দিষ্ট এলাকায় পর্যবেক্ষণ করে যা পাওয়া গেছে সেই রিপোর্ট জমা করা হবে সেচ দপ্তরের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারির কাছে। তারপরেই কোন পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব হবে বলে জানা গেছে। কিন্তু চিন্তার বিষয় হলো আরো দুটি বড় কোটাল আসতে চলেছে। যার ফলে ভাঙ্গনের পরিমাণ বাড়তে পারে এবং আরও বেশ কিছুটা এলাকা জলে তলায় চলে যেতে পারে। বর্তমানে স্থানীয় বাসিন্দারা রীতিমতো আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।