Gobindobhog Rice: বাংলার মাটির সাথে মিশে থাকা এক সুগন্ধী ইতিহাসের নাম গোবিন্দভোগ ধান (Gobindobhog Rice)। প্রাচীনকাল থেকে বাংলার মানুষ এই ধানের সুনাম উপভোগ করলেও, সময়ের সঙ্গে এই ঐতিহ্য যেন ফিকে হতে চলেছিল। তবে এবার কৃষি দফতর এক নতুন ও বিপ্লবী উদ্যোগ নিয়ে বাংলার কৃষিক্ষেত্রে ফিরিয়ে আনতে চলেছে এই স্বর্ণযুগ। গোবিন্দভোগ ধানের জমি বাড়িয়ে বাংলার প্রতিটি কোণে ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্য নিয়ে এসেছে দফতর।
মালদা, মুর্শিদাবাদ সহ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে একসময় গোবিন্দভোগ ধানের (Gobindobhog Rice) সুবাসিত ক্ষেত দেখতে পাওয়া যেত। তবে, সময়ের সাথে কৃষকরা বেশি উৎপাদনশীল ধানের দিকে ঝুঁকতে শুরু করেন। উচ্চফলনশীল ধান চাষে বেশি লাভের আশায়, ঐতিহ্যবাহী গোবিন্দভোগ যেন হারিয়ে যেতে বসেছে। কিন্তু এই ধান শুধুমাত্র অর্থনৈতিক লাভ নয়, বাংলার মাটির সাথে এর রয়েছে এক গভীর আবেগের সম্পর্ক।
এবার সেই হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে, মালদা জেলার চাষিদের মধ্যে নতুন উদ্যমে এই ধানের চাষ শুরু করার জন্য বিশেষ পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। চাঁচল ও হরিশ্চন্দ্রপুর মহকুমার প্রায় ১০০ হেক্টর জমিতে গোবিন্দভোগ ধানের চাষ শুরু হতে চলেছে। আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি ব্যবহার করে কীভাবে ফলন বাড়ানো যায়, সেই বিষয়ে কৃষি দফতরের বিশেষজ্ঞরা কৃষকদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন।
আরো পড়ুন: চায়ের কাপে আমের স্বাদ, আলিপুরদুয়ারের ম্যাঙ্গো টি নিয়ে এলো অভিনব চমক
গোবিন্দভোগ ধানের সুগন্ধ ও স্বাদ যেমন আলাদা, তেমনি বাজারে এর চাহিদাও অনেক বেশি। অন্যান্য ধানের তুলনায় এই চালের দামও বেশ চড়া, যা কৃষকদের আর্থিক লাভের এক বিশাল সুযোগ এনে দিতে পারে। শুধু তাই নয়, গোবিন্দভোগ ধান বাংলার সংস্কৃতির প্রতীক হিসেবেও মূল্যবান। তাই এই ধানের উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে বাংলার কৃষি অর্থনীতি ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে এক নতুন মাত্রায় পৌঁছে দেওয়া হবে।
এই যুগান্তকারী পদক্ষেপে গোবিন্দভোগ ধান (Gobindobhog Rice)আবারও বাংলার ঘরে ঘরে ফিরে আসবে, তার সুগন্ধে মেতে উঠবে বাংলার প্রতিটি ক্ষেত। শুধু অর্থনৈতিক দিক থেকেই নয়, এই ধানের চাষ বাংলার ঐতিহ্যকে আবারও জীবন্ত করে তুলবে। কৃষি দফতরের এই উদ্যোগ একদিকে যেমন বাংলার কৃষকদের আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী করবে, অন্যদিকে বাংলার হারিয়ে যাওয়া সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের পুনর্জন্ম ঘটাবে। কৃষকরা এই বিশেষ ধান চাষের মাধ্যমে তাদের পারিবারিক আয়ের একটি নতুন উৎস খুঁজে পাবেন, যা তাদের জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে। সেই সঙ্গে, দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক বাজারে এই সুগন্ধী ধানের কদর বাড়বে, যা বাংলার নামকে গৌরবান্বিত করবে।