Birbhum Newspaper Shop: এমন দোকান কোথাও কি দেখেছেন যেখানে ক্রেতার ভিড় থাকলেও বিক্রেতা নেই। শুনতে অদ্ভুত লাগলেও কথাটি একেবারে সত্যি। বিক্রেতা ছাড়া কিভাবে চলছে এই দোকান? বিক্রেতা ছাড়াও এই দোকান যে ভালোভাবে চলতে পারে তার নিদর্শন দেখতে হলে আসতে হবে বীরভূম জেলার মল্লারপুরে। সম্পূর্ণ বিশ্বাসের উপর নির্ভর করেই চলছে এই ব্যবসা।
এখনো যে কত সৎ মানুষ রয়েছে এই দোকানটি না দেখলে তা বোঝা যাবে না। বীরভূম জেলার মল্লারপুর স্টেশনের ফ্লাইওভারের নীচে এই সংবাদপত্রের দোকান (Birbhum Newspaper Shop) দেখলে আপনি অবাক না হয়ে পারবেন না। রেল স্টেশনের ফ্লাইওভারের নীচে সাজানো সংবাদপত্র। কোন বিক্রেতা ছাড়ায় কি সুন্দর সারাদিন বিক্রি হচ্ছে এই দোকানে। এমনকি দোকানে নেই কোনো সিসিটিভিও। পাঠকরা সকালবেলা এসে নিজেদের পছন্দমত সংবাদপত্র নিয়ে বাড়ি চলে যান। পরিবর্তে নির্দিষ্ট একটি বাক্সে রেখে যান টাকা। এমনকী, অনেকেই আছেন যাঁরা প্রত্যহ সংবাদপত্র নিয়ে গিয়ে সপ্তাহে একদিন পুরো সপ্তাহের টাকা বাক্সে ভরে দিয়ে যান।
এই দোকানে রয়েছে প্রচুর ক্রেতা শুধুমাত্র বিক্রেতার অভাব। এই নজরদারিহীন সংবাদপত্রের পসরা সাজান রাজু লেট, বীরভূম জেলার মল্লারপুর স্টেশনে (Birbhum Newspaper Shop) এমনটাই দৃশ্য দেখা যায়। তিনি আসলে পেশায় সংবাদপত্রের হকার। স্টেশনের ফ্লাইওভারের নিচে সংবাদপত্রের পসরা সাজিয়ে তিনি বেরিয়ে যান বাড়ি বাড়ি সংবাদপত্র বিলি করতে। যখন তিনি বাড়ি বাড়ি সংবাদপত্র বিড়ি করতে যান তখন স্বাভাবিকভাবেই ফাঁকা পড়ে থাকে তার দোকান, আর সেখানেই পাঠকরা এসে নিজের সংবাদপত্রটি তুলে নিয়ে তার দাম রেখে দিয়ে যান।
আরো পড়ুন: দেশে প্রথম স্থান অধিকার করল হাওড়া ডিভিশন, অপরাধ দমনে সেরা অফিসার সিনিয়র ডিএসসি
রাজু লেট অবশ্য বলেছেন যে, যেসব মানুষ সংবাদপত্র পড়েন তারা সবাই শিক্ষিত এবং তিনি বিশ্বাস করেন শিক্ষিত মানুষ কোনদিনও ঠকাতে পারে না। তিনি মানুষকে সম্পূর্ণরূপে ভরসা করেন। পাঠক সংখ্যা যত বাড়বে ততই তার ব্যবসার উন্নতি হবে। মানুষের উপর এই ভরসার কারণেই তিনি ফ্লাইওভরের নীচে (Birbhum Newspaper Shop) সংবাদপত্রের পসরা সাজিয়ে সাইকেলে কাগজ বেঁধে বেরিয়ে পড়েন। প্রতিদিনই ফিরে এসে দেখেন সব কাগজ তো বিক্রি হয়েছেই এমনকি সমস্ত পেপারের দামও জমা হয়ে গিয়েছে বাক্সে। যদি কোন ব্যক্তির কাছে কখনো খুচরো না থাকে তাঁরা পরের দিন অথবা এক সপ্তাহ পর একসঙ্গে সেই টাকা বাক্সে ভরে দিয়ে যান।
তার এই দোকান সম্পর্কে স্থানীয় এক পাঠক বলেছেন যে, বর্তমানে মোবাইলের সবধরনের খবর পাওয়া যায় কিন্তু তবুও সকালবেলা প্রত্যেকটি মানুষের সংবাদপত্র পড়তেই হয়। সেই কারণে রাজু দোকানের ক্রেতার সংখ্যা কখনো কমবে না। সকালবেলা কখনোই পাওয়া যায় না তাকে দোকানে। প্রতিদিনই তিনি পেপার বিলি করতে বেরিয়ে পড়ে। সেই পাঠক আরো বলেছেন যে, যারা প্রত্যেকদিন ওর দোকান থেকে পেপার কিনে তারা পেপার নেওয়ার পরে ওর দোকানের পাশে রাখা বাক্সে টাকা রেখে দিয়ে চলে যায়।