DVC: DVC-র সঙ্গে রাজ্যের সম্পর্ক কিরকম, আসুন দেখে নিই পুরনো ইতিহাস

Prosun Kanti Das

Published on:

Advertisements

DVC: আমরা সকলেই জানি যে ডিভিসি বা দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন হল একটি স্বশাসিত প্রতিষ্ঠান। আসলে বাংলা এবং বিহারের বেশ কিছু অঞ্চলের বন্যার কথা মাথায় রেখে দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন তৈরি হয়েছিল। আগে যেসব অঞ্চলগুলো বিহারের অন্তর্গত ছিল বর্তমানে তা ঝাড়খণ্ডের অন্তর্গত। তাই এখন ডিভিসি-র অধীনে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ ও ঝাড়খণ্ডের বেশ কিছু অঞ্চল। স্বাধীন ভারতে এটাই ছিল প্রথম কোনও ‘ভ্যালি প্রজেক্ট’।

Advertisements

দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন (DVC) কিন্তু কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎ মন্ত্রকের অধীনে পরিচালিত হয় এবং এটি একটি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র ও জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র। ডিভিসি-র সদর দপ্তর কলকাতাতেই অবস্থিত। এই কর্পোরেশন তৈরি করার মূল উদ্দেশ্য ছিল বন্যাপ্রবণ দামোদরের জলকে নিয়ন্ত্রণ করা। একাধিক বাঁধ তৈরি করে বন্যার জল নিয়ন্ত্রণ করা হয় এই কর্পোরেশনের মাধ্যমে। মোট চারটি বাঁধ আছে এর অধীনে- পাঞ্চেৎ, মাইথন, কোনার ও তিলাইয়া।

Advertisements

আমরা কি জানি এই ডিভিসি-র (DVC) আসল রূপকার কে ছিলেন? বাঙালি বিজ্ঞানী মেঘনাদ সাহা ছিলেন দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশনের রূপকার। আসলে দামোদর নদী হলো একটি বন্যাপ্রবণ এলাকা। ১৯৪৩ সালে বন্যার কারণে ভয়াবহ অবস্থা হয়েছিল দামোদরের। সেই সময়ে পরিকল্পনা করা হয়েছিল এই কর্পোরেশন নির্মাণের। বিহারের ছোটনাগপুর মালভূমির পালামু থেকে পথচলা শুরু করে হুগলি নদীতে মিশেছে দামোদর। আমেরিকায় যেমন রয়েছে ‘টেনেসি ভ্যালি প্রকল্প’, ভারতে সেই ভাবেই গড়ে তোলা হয়েছিল দামোদর ভ্যালি প্রকল্প। তৎকালীন প্রখ্যাত ইঞ্জিনিয়ার ডবলিউ এল ভরদুইনকে এই প্রকল্প নির্মাণের দায়িত্ব দেওয়া হয়। পাশাপাশি এটি রূপায়নের দায়িত্ব পেলেন বাঙালি পদার্থবিজ্ঞানী মেঘনাদ সাহা। পরবর্তীতে জওহরলাল নেহরুর সরকার তৈরি করে বিশেষ আইন। ১৯৪৮ সালের ৭ জুলাই স্বশাসিত দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন কাজ শুরু করে।

Advertisements

আরো পড়ুন: দুর্গাপুজোয় বৃষ্টি পাকা, কোন কোন জেলায় দিন ধরে জানিয়ে দিল আবহাওয়া দপ্তর

বর্তমানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেছেন, রাজ্যকে না জানিয়েই জল ছেড়ে দিয়েছে ডিভিসি। এর ফলে রাজ্যে বন্যার পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। মাইথন ও পাঞ্চেত বাঁধ থেকে ডিভিসি অপরিকল্পিতভাবে ৫ লক্ষ কিউসেক জল ছেড়েছে। তার ফলে দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলি বন্যার কবলে পড়েছে এবং ৫০ লক্ষ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে কেন্দ্র জানিয়েছে যে, রাজ্য সরকারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করেই জল ছাড়া হয়েছে। রাজ্য যদি ডিভিসির সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ করে তাহলে সমস্যায় পড়তে হবে বিদ্যুৎ সরবরাহের ক্ষেত্রে। আটটা জেলাতে বিদ্যুৎ বন্ধ হয়ে যাবে।

বাঁধের সাহায্যে জল ধরে রেখে, তা কাজে লাগায় ডিভিসি। চাষের কাজের পাশাপাশি বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষেত্রে কাজে লাগে জল। বর্ষাকালে জল অতিরিক্ত বেড়ে গেলে, জল ছাড়তে হয়। যদি কোন কারনে জল ছাড়া না হয় তাহলে ভেঙ্গে যাবে বাঁধের প্রাচীর এর ফলে আরও বেশি সমস্যায় পড়তে হবে বিভিন্ন রাজ্যকে।

Advertisements