Train School: সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে এমন বহু জিনিস আমাদের চোখে পড়ে যা দেখলে সত্যিই অবাক হতে হয়। দেশ-বিদেশ থেকে শুরু করে নিজের রাজ্যের বহু অজানা খবর আমাদের জানা হয়ে যায় এই সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে। আজকের এই প্রতিবেদনে এমনই একটি বিদ্যালয়ের সম্পর্কে জানতে পারবেন যাকে তৈরি করা হয়েছে আস্ত একটি স্টেশন এর মত করে। ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষার প্রতি আকর্ষণ বাড়ানোর জন্যই এই চেষ্টা। আসুন জেনে নিই কোথায় নেওয়া হয়েছে এই অভিনব প্রয়াস?
এক ঝলক দেখলে আপনি সত্যিই অবাক হয়ে যাবেন এবং ভুল করে ভাববেন যে হয়তো দাঁড়িয়ে আছেন বাঁকুড়া রেল স্টেশনে (Train School)। সামনেই দেখতে পাবেন দাঁড়িয়ে রয়েছে আস্ত একটি ট্রেন। ট্রেনের নাম হলো 1958 আপ কেন্দুয়াডিহি জে বি এস এক্সপ্রেস 2024 ডাউন। ট্রেনটিতে রয়েছে মাত্র দুটি কোচ, ক্লাস রুম ৩ এবং ক্লাস রুম ৪ রয়েছে ইমার্জেন্সী এক্সিট। টাইম অফ এরাইভাল সকাল ১০:৫০ এবং টাইম অফ ডিপারচর বিকেল চারটে। শুনতে অবাক লাগলেও ঘটনাটি কিন্তু একেবারে সত্যি। নিশ্চয়ই ভাবছেন এ আবার কেমন ট্রেন।
আসলে ট্রেনের আদলেই সাজানো হয়েছে এই নিম্ন বুনিয়াদি স্কুলটিকে (Train School)। চাক্ষুষ দেখলে সত্যিই অবাক হয়ে যেতে হয়। বাঁকুড়ার কেন্দুয়াডিহি নিম্ন বুনিয়াদি বিদ্যালয়, যাকে সাজানো হয়েছে আস্ত একটি স্টেশন এবং ট্রেনের মতো করে। ছাত্র-ছাত্রীদের স্কুলে আসার আগ্রহ বাড়াতে দুই শ্রেণীকক্ষের দেওয়াল জুড়ে আঁকা রয়েছে একটি এক্সপ্রেস ট্রেনের দুটি কোচ। ট্রেনটি দাঁড়িয়ে রয়েছে বাঁকুড়া রেলস্টেশনে। ট্রেনের নাম কেন্দুয়াডিহি নিম্ন বুনিয়াদি বিদ্যালয়। আপ ১৯৫৮ অর্থাৎ প্রতিষ্ঠা সাল এবং ডাউন ২০২৪, অর্থাৎ যে সালে ট্রেনটি তৈরি করা হয়েছে। ট্রেন আসার সময় সকাল ১০:৫০ অর্থাৎ ছাত্র-ছাত্রীদের বিদ্যালয় আসার সময়। এবং ট্রেন পৌঁছানোর সময় বিকেল চারটে যা আদতে ছুটির সময়।
বিদ্যালয়টিতে রয়েছে প্রি প্রাইমারি থেকে ক্লাস ফোর পর্যন্ত। এই বিদ্যালয়ে মোট শিক্ষক-শিক্ষিকার সংখ্যা নয়জন এবং ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা ১৯৭। বিদ্যালয় এবং পড়াশোনার প্রতি যাতে ছাত্রছাত্রীরা আগ্রহ ধরে রাখতে পারে তার জন্যই স্কুল কর্তৃপক্ষের এই প্রচেষ্টা। ট্রেনের সঙ্গে শিশু মনের একটা আত্মিক সম্পর্ক থাকে। অপু দুর্গার কাহিনীতে ট্রেনের একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। এবার সেই ট্রেন যদি শ্রেণিকক্ষের দেওয়ালেই আঁকা থাকে, স্বাভাবিকভাবে বিদ্যালয় আসার আনন্দ কয়েকশো গুণ বেড়ে যাবে। প্রধান শিক্ষক চন্দন দত্ত জানান, দুমাস যাবত এই দেওয়াল চিত্র ছাত্র-ছাত্রীদের যথেষ্ট আগ্রহী করেছে শিক্ষার প্রতি। স্কুল কর্তৃপক্ষের এই উদ্যোগ কাজে এসেছে। পাশাপাশি দেওয়াল জুড়ে আঁকা রয়েছে নানারকম সমাজ সচেতনতা মূলক বার্তা। বিভিন্ন দূরদর্শী পরিকল্পনাও দেওয়ালে আঁকা রয়েছে।
শিক্ষার ট্রেন জার্নি শুরু হয়েছে বাঁকুড়া জেলার এই নিম্ন বুনিয়াদি বিদ্যালয়টিতে । বিদ্যালয় হল শিশুদের শেখার অন্যতম একটি জায়গা, যেখানে তাদের শিশু মনের পরিপূর্ণ বিকাশ ঘটে। বর্তমানের আধুনিক যুগ হল স্মার্টফোনের যুগ, তাই এই পরিস্থিতিতে শিশুদের বিদ্যালয়মুখী করার জন্যই এই নানা রকম প্রয়াস নিতে হচ্ছে। বাঁকুড়ার কেন্দুয়াডিহি নিম্ন বুনিয়াদী বিদ্যালয়ে সেই কারণেই দাঁড়িয়ে রয়েছে একটি আস্ত এক্সপ্রেস (Train School)।