Pipeline Gas: দীর্ঘ অপেক্ষার পর, অবশেষে শুরু হলো এক নতুন অধ্যায়ের। দুর্গাপুর থেকে নদিয়ার গয়েশপুর পর্যন্ত পরীক্ষামূলকভাবে গ্যাস পরিবহণ (Pipeline Gas) চালু করল গেইল বা GAIL। এই পরীক্ষার মাধ্যমে দীর্ঘদিন ধরে পরিকল্পিত পাইপলাইন প্রকল্প বাস্তব রূপ নিল। এটি শুধু একটি নেটওয়ার্ক টেস্ট নয়, বরং এই অঞ্চলের বাসিন্দাদের জন্য এক বড় পরিবর্তনের সংকেত। গ্যাস সাপ্লাইয়ের ক্ষেত্রে এটি শহরের পরিবেশবান্ধব জ্বালানি ব্যবস্থার পথপ্রদর্শক হতে চলেছে।
বেঙ্গল গ্যাস কোম্পানির সিইও অনুপম মুখোপাধ্যায় গতকাল জানিয়েছিলেন যে, দুর্গাপুর থেকে গয়েশপুর পর্যন্ত পাইপলাইন (Pipeline Gas) বসানোর কাজ ইতিমধ্যেই শেষ হয়েছে। আগামীকাল থেকে গ্যাস চার্জ করা হবে এই পাইপলাইনে, যা নেটওয়ার্ক টেস্টের অংশ। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে পেট্রোলিয়াম অ্যান্ড এক্সপ্লোসিভস সেফটি অর্গানাইজেশনের বা PESO অনুমোদন পাওয়ার পর, স্থায়ীভাবে গ্যাস সরবরাহ শুরু হবে।
এই প্রকল্পের সফলতা শুধুমাত্র দুর্গাপুর-গয়েশপুর এলাকার বাসিন্দাদের জন্য নয়, গোটা পশ্চিমবঙ্গের জন্য নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মুক্ত করবে। বর্তমানে পানাগড় থেকে ট্যাঙ্কারে করে গ্যাস নিয়ে আসতে প্রচুর সময় লাগে, যা কল্যাণী মাদার স্টেশন চালু হওয়ার পর আর প্রয়োজন হবে না। এতে করে গ্যাস সরবরাহ হবে আরও দ্রুত এবং চাহিদা মেটাতে সক্ষম হবে বেঙ্গল গ্যাস কোম্পানি।
কল্যাণী মাদার স্টেশনের কাজ প্রায় শেষের পথে, যা এই মাসেই চালু হবে। এতে করে পানাগড়ের উপর নির্ভরতা কমে যাবে এবং সরাসরি কল্যাণী থেকে ক্যাসকেডের মাধ্যমে সিএনজি স্টেশনগুলোতে গ্যাস পৌঁছানো সম্ভব হবে। এই মাইলফলক প্রকল্পটি কেবলমাত্র জ্বালানির চাহিদা মেটাবে না, বরং রাজ্যের পরিবেশ সচেতন উদ্যোগকেও এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যাবে।
আরো পড়ুন: পাইপ লাইন গ্যাসের নতুন যুগ, চলতি বছরেই কল্যাণীতে সিলিন্ডারের বিদায়
এছাড়াও, পেট্রোলিয়াম অ্যান্ড ন্যাচারাল গ্যাস রেগুলেটরি বোর্ড বা PNGRB রাজ্য সরকারকে পিএনজি বা PNG ব্যবহারের নিয়ম চালু করতে অনুরোধ করেছে, যা বহুতল আবাসনগুলিতে প্রাকৃতিক গ্যাসের ব্যবহারকে উৎসাহিত করবে। ডিজেলের পরিবর্তে ছোট জাহাজে সিএনজি এবং বড় জাহাজে এলএনজি ব্যবহারেরও প্রস্তাব করা হয়েছে। এই সব পদক্ষেপ গ্যাস বিপ্লবের মাধ্যমে রাজ্যের জ্বালানি ব্যবস্থার উন্নতিতে বিশেষ ভূমিকা রাখবে।
এভাবেই দুর্গাপুর-গয়েশপুর পাইপলাইনের চালুর মধ্য দিয়ে পশ্চিমবঙ্গে গ্যাস (Pipeline Gas) বিপ্লবের এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হতে চলেছে। এই প্রকল্প শুধুমাত্র একটি পরিকাঠামোগত উন্নয়ন নয়, এটি পশ্চিমবঙ্গের জ্বালানি নিরাপত্তার একটি শক্ত ভিত্তি হিসেবে কাজ করবে। পরিবেশবান্ধব এবং টেকসই উন্নয়নের এই যাত্রা রাজ্যের অর্থনীতি ও জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে অপরিসীম ভূমিকা পালন করবে।