Ratan Tata Salary: নিজের কর্মজীবনের সূচনা হয়েছিল ১৯৬২ সালে টাটা স্টিল বিভাগে। পরবর্তীকালে তিনি প্রায় নয় বছর কাজ করেছেন ন্যাশনাল রেডিয়ো অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স কোম্পানি লিমিটেডের ডিরেক্টর-ইন-চার্জ হিসেবে। অবশেষে ১৯৯১ সালে টাটা সন্সের চেয়ারম্যান পদ থেকে জেআরডি টাটা ইস্তফা দেন এবং নিজের উত্তরসূরি হিসাবে বেছে নিয়েছিলেন রতন টাটাকে। টাটা বংশের সঙ্গে তাঁর কোন রক্তের সম্পর্ক ছিল না কিন্তু তবুও সারাজীবন সমস্ত দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। বিশাল সাম্রাজ্যের মালিক এই রতন টাটা বেতন হিসেবে কত পেতেন জানেন কি তা?
কাজের দিক থেকে তিনি যথেষ্ট দক্ষ ছিলেন এবং নিজের কর্মজীবন দিয়ে তা প্রমাণ করে গেছেন তিনি। বর্তমানে টাটা নমক থেকে শুরু করে টাটা স্টিল দেশের একাধিক ব্যবসায় টাটা গোষ্ঠীর একাধিপত্য লক্ষ্য করা যায়। তবে পদে থাকাকালীনই রতন টাটা বিশেষ কিছু নিয়ম বানিয়ে গেছেন তার মধ্যে অন্যতম হলো, টাটা সন্স-এর চেয়ারম্যান পদে ৭৫ বছর বয়েসের ঊর্ধে কেউ বসতে পারবেন না। সেই নিয়মের পালন করেই ২০১২ সালে তিনি চেয়ারম্যান পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন। ২০১২ সালের পর টাটা সন্সের চেয়ারম্যান এমেরিটাস পদে ছিলেন রতন টাটা। বয়সের ছাপ সম্পূর্ণরূপে ফুটে উঠেছিল তার চেহারাতে। বিশাল সাম্রাজ্যের অধিপতি এই ব্যক্তি বেতন (Ratan Tata Salary) হিসেবে যা পেতেন শুনলে অবাক হবেন আপনিও।
টাটা গোষ্ঠীর চেয়ারম্যান এমেরিটাস হিসাবে থাকাকালীন তিনি বছরে বেতন হিসাবে নিতেন মাত্র আড়াই কোটি টাকা। দেশের অন্যান্য কর্পোরেট সংস্থার মালিকদের তুলনায় তার বেতন ছিল খুবই সামান্য। বিলাসবহুল জীবন নয় সাদামাটা জীবনযাপনে তিনি বেশি সচ্ছন্দ ছিলেন। এদিকে টাটা গোষ্ঠীর সংস্থাগুলির লভ্যাংশও ঢুকত রতন টাটার পকেটে। কিন্তু সেই টাকা নিজের জন্য খরচ করতে না তিনি বরং টাটা সন্সের মাধ্যমে তাঁর সেই প্রাপ্ত ডিভিডেন্ডের ৬৬ শতাংশই যেত দাতব্য কার্যকলাপে।
আরো পড়ুন: সাইরাস মিস্ত্রির ঠিক ২ বছরের মাথায় মৃত্যু হলো রতন টাটার, এ কেমন টান!
টাটা গোষ্ঠীর অফিসিয়াল ওয়েবসাইট পর্যালোচনা করলে দেখতে পাবেন, টাটা এন্টারপ্রাইজের ২৬টি সংস্থা তালিকাভুক্ত রয়েছে শেয়ার বাজারে। টাটা এন্টারপ্রাইজ এর একাধিক সংস্থার সম্মিলিত মার্কেট ক্যাপিটালাইজেশন হল ৩৬৫ বিলিয়ন ডলার। তবে আইটি ক্ষেত্রে টাটা গোষ্ঠীর অধীনে থাকা সংস্থাগুলি হল – টিসিএস, টাটা এলএক্সসি, টাটা টেকনোলজিস, টাটা ডিজিটাল। টাটা গোষ্ঠীর অন্যতম পুরনো ব্যবসা হল টাটা স্টিল। নিজের জন্য বেতন (Ratan Tata Salary) হিসাবে তিনি যে পরিমাণ টাকা নিতেন তা সত্যিই কল্পনা করা যায় না।
বিগত কয়েকদিন ধরেই বার্ধক্যজনিত কারণে অসুস্থ ছিলেন টাটা গোষ্ঠীর প্রাক্তন চেয়ারম্যান রতন টাটা। সেই কারণেই হাসপাতালে গিয়েছিলেন রুটিন চেকাপের জন্য। তবে ঘনিষ্ঠ রিপোর্ট অনুযায়ী জানা যায় সেখানেই তার শারীরিক পরিস্থিতির অবনতি ঘটে। সকলকে আশ্বস্ত করে বলেছিলেন তিনি বাড়ি ফিরে আসবেন কিন্তু সেটা আর সম্ভব হলো না। শিল্পজগতের এত বড় নক্ষত্রপতন সত্যি দেশের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। তিনি শুধুমাত্র একজন শিল্পপতি ছিলেন না, ছিলেন উদ্যোগপতি। দেশের জন্য তাঁর অবদান ভোলার মত নয়। টাটা গোষ্ঠীর তরফে এক বার্তায় বলা হয়েছে, অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে আমাদের রতন নভল টাটাকে বিদায় জানাতে হচ্ছে। তিনি শুধুমাত্র টাটাগোষ্ঠীকে উচ্চতার শিখরে পৌঁছে দিয়েছিলেন তা নয়, দেশের প্রগতিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে গেছেন।