Tata Nano Car: কেন ন্যানো তৈরির কারখানার জন্য বেছে নিয়েছিলেন সিঙ্গুরকে, অবশেষে মুখ খুললেন এক সহযোগী

Prosun Kanti Das

Updated on:

Advertisements

Tata Nano Car: সম্প্রতি জীবনাবসন ঘটেছে টাটা গোষ্ঠীর প্রাক্তন চেয়ারম্যান রতন টাটার। বার্ধক্যজনিত কারণেই মুম্বাইয়ের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ৯ অক্টোবর রাতে মারা যান তিনি। তিনি শুধুমাত্র একজন শিল্পপতি ছিলেন না, ছিলেন একজন উদ্যোগপতি। মানুষের স্বার্থে তিনি সর্বদা এগিয়ে এসেছিলেন এবং কাজকে জীবনের সবথেকে উঁচু জায়গায় স্থান দিয়েছিলেন। দেশীয় গাড়ি নির্মাণের প্রথম কৃতিত্ব রতন টাটার, আবার মধ্যবিত্তের জন্য চারচাকা নির্মাণ করার কৃতিত্ব তার।

Advertisements

টাটার ন্যানো গাড়ি (Tata Nano Car) ইতিহাসের পাতায় স্থান করে নিয়েছে। যদিও এই গাড়িটির বাণিজ্যিক সফলতা সেভাবে হয়নি। মধ্যবিত্তকে চারচাকা কেনার স্বপ্ন তিনি দেখিয়েছিলেন, সেভাবে বাস্তবায়িত না হলেও পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পরিবর্তনে এর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। আবার সবথেকে কম দামে গাড়ি নির্মাণ করার কৃতিত্ব নিয়েছেন রতন টাটা। এত সস্তায় টাটা মোটরস কেন এই গাড়ি নির্মাণ করতে চেয়েছিল? কেনই বা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন টাটা গোষ্ঠীর প্রাক্তন চেয়ারম্যান?

Advertisements

রতন টাটা কেন ন্যানো গাড়ি (Tata Nano Car) তৈরির সিদ্ধান্ত নেন, তা খোলসা করলেন কর্পোরেট জনসংযোগ আধিকারিক নীরা রাদিয়া। তিনি কোন একসময় টাটা গোষ্ঠীর জনসংযোগ বিভাগটি দেখতেন। রতন টাটার প্রয়াণে একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে মুখ খোলেন তিনি। সেখানেই ন্যানো তৈরির নেপথ্যে রতন টাটার কী ভাবনা ছিল, তা খোলসা করেন তিনি। তিনি বলেন, স্বপ্ন দেখতে ভালবাসতেন রতন টাটা, ভারত ছিল তার কাছে গর্ব। দূরদর্শী রতন টাটার প্রত্যেকটি সিদ্ধান্ত ছিল মানুষের কথা ভেবে।

Advertisements

তিনি সর্বদাই উপলব্ধি করতে কিভাবে আধুনিক প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে দেশের মানুষকে উন্নত পরিষেবা দেওয়া যায়। কেন তিনি ১ লাখ টাকার ন্যানো গাড়ি নির্মাণ করতে চেয়েছিলেন তাও খুলে বললেন নীরা রাদিয়া। সাধারণ মধ্যবিত্তদের জন্য তিনি কিছু করতে চেয়েছিলেন। যারা দুচাকায় যাতায়াত করে তারা যাতে কোনোভাবেই বৃষ্টিতে না ভেজে তার উপায় বার করতে গিয়ে ন্যানো তৈরির চিন্তাভাবনা মাথায় আসে তার। পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় গিয়ে তিনি এই শিল্পায়নের কথা ভেবেছেন। এখানকার মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে চেয়েছিলেন তিনি। আজ যদি ন্যানো (Tata Nano Car) পশ্চিমবঙ্গে তৈরি হতো তাহলে সিঙ্গুর থেকে কলকাতার যাতায়াত ব্যবস্থা এমনকি রাস্তাঘাট অনেক বেশি উন্নত হতো।

আরো পড়ুন: জুনিয়র ডাক্তারদের দাবিতে রাজ্যে পরীক্ষামূলকভাবে চালু হতে চলেছে কেন্দ্রীয় রেফারেল পদ্ধতি

গুজরাতের সানন্দে কারখানা হয় পরে। আজ সানন্দ গুরুগ্রামে পরিণত হয়েছে।ন্যানো তৈরির জন্য কেন পশ্চিমবঙ্গকে বেছে নিয়েছিলেন রতন টাটা? এর আসল কারণ অবশেষে খোলসা করেছেন নীরা। তাঁর কথায়, সিঙ্গুরের নাম ঘোষনা করাতে সবাই রীতিমত অবাক হয়ে গেছিল। তিনি আগে থেকে কোন বিষয়ে কাউকে জানাতেন না। এরকমই ছিলেন তিনি। সিঙ্গুরকে বেছে নেওয়ার অন্যতম কারণ হলো তিনি উন্নয়ন চেয়েছিলেন কোনরকম রাজনীতি করতে চাননি। একলাখি গাড়ি পশ্চিমবঙ্গে তৈরি হবে না-ই বা কেন? উনি রাজ্যে শিল্পায়ন ঘটাতে চেয়েছিলেন। অনেক কিছু ভেবেচিন্তে এই গাড়ির দাম রেখেছিলেন ১ লাখ টাকা। সমালোচিত হলেও তিনি স্বপ্ন দেখা কখনো ছাড়েননি। সত্যি তিনি একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব ছিলেন।

নীরার দাবি করেছেন, পশ্চিমবঙ্গের সিঙ্গুরে ন্যানো তৈরির (Tata Nano Car) কারখানা নির্মাণ নিয়ে বহু সমস্যা সৃষ্টি হয়েছিল। কিন্তু সেই সমস্যা ন্যানোর জন্য নয়, আসলে রাজনৈতিক লড়াই চলছিল। তদানীন্তন শাসকদলের নেতার কেন্দ্র ছিল সিঙ্গুর। আরও অনেক রাজ্যে গিয়েছিলাম আমরা। বিভিন্ন রাজ্য পরিদর্শন করার পর শেষমেষ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় গুজরাতকে বেছে নেওয়া হবে। কারণ ওখানে শিল্পের প্রসার ঘটছিল, কাজ করতে অনেক সুবিধা হবে। ২০০২ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত টাটাগোষ্ঠীতে কাজ করেন নীরা। পরে অবশ্য তিনি টাটা গোষ্ঠী থেকে বেরিয়ে এসেছিলেন কিন্তু রতন টাটার সঙ্গে তার বন্ধুত্বে কোনরকম ভাটা পড়েনি।

Advertisements