Lata Mangeshkar: লতা মঙ্গেশকর, একটি নাম, একটি ইতিহাস। সঙ্গীত জগতে তাঁর অবস্থান ছিল এমন উচ্চতায়, যা পৌঁছানো অনেকের পক্ষেই দুঃসাধ্য। তিনি শুধু একজন গায়িকা (Lata Mangeshkar) নন, তিনি ছিলেন সুরের জাদুকরী, যাঁর গলা দিয়ে বেরিয়ে আসা প্রতিটি সুর যেন এক নতুন অধ্যায় রচনা করত। ১৯৪০-এর দশকে তাঁর গান গাওয়ার যাত্রা শুরু হয়েছিল, আর সেই যাত্রা ক্রমশ তাঁকে সঙ্গীতের এক অপ্রতিদ্বন্দ্বী সম্রাজ্ঞী করে তুলেছিল। সেই সময় থেকেই তিনি হয়ে ওঠেন বলিউডের গানের অবিচ্ছেদ্য অংশ।
শুরুর দিকে, লতা মঙ্গেশকর (Lata Mangeshkar) একটি গান গাইতে পারিশ্রমিক হিসেবে নিতেন ২০,০০০ টাকা। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে, তাঁর প্রতিভা এবং জনপ্রিয়তা এমন উচ্চতায় পৌঁছায় যে, খুব অল্প সময়ের মধ্যেই তাঁর পারিশ্রমিক বেড়ে দাঁড়ায় ৫০,০০০ টাকায়। এও বলা হয়ে থাকে, তাঁর কণ্ঠের মিষ্টতা আর গানের অনবদ্য কারুকাজ যদি তিনি শেষ সময়েও বজায় রাখতেন, তাহলে একটি গানের জন্য তাঁর পারিশ্রমিক হতে পারত ১ থেকে ২ লাখ টাকা পর্যন্ত! এই তথ্য যেন একদম চমকে দেওয়ার মতো, কিন্তু লতা মঙ্গেশকরের মতো একজন কিংবদন্তির ক্ষেত্রে এটাই ছিল স্বাভাবিক।
লতা মঙ্গেশকর কেবল সুরের সম্রাজ্ঞী ছিলেন না, তিনি ছিলেন নারীদের পক্ষে লড়াই করা এক প্রতিবাদী কণ্ঠ। সঙ্গীত জগতে পুরুষদের আধিপত্যের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে, তিনি নারীদের যোগ্য পারিশ্রমিকের দাবিতে প্রথম সুর তোলেন। তাঁর এই দৃঢ় অবস্থান নারীদের জন্য এক বিপ্লবের সূচনা করে। তিনি দেখিয়েছিলেন, প্রতিভার মূল্য কীভাবে দাবি করতে হয় এবং কীভাবে তা অর্জন করতে হয়। তাঁর দেখানো পথেই একসময় সঙ্গীত জগতে নারীদের সম্মান ও কদর বৃদ্ধি পায়।
আরো পড়ুন: গভীর প্রেম থাকলেও তা পরিণতি লাভ করেনি, কেন অজয় জাডেজার হাত ছাড়লেন মাধুরী
যদিও লতা মঙ্গেশকর একসময় গান গাওয়া ছেড়ে দিয়েছিলেন, তবুও তাঁর প্রতি শ্রোতাদের এবং পরিচালকদের আকর্ষণ কখনও কমেনি। প্রতিটি পরিচালক চেয়েছিলেন, তাঁদের ছবির অন্তত একটি গান লতা মঙ্গেশকর গাইবেন। কারণ, তাঁর কণ্ঠের সুর যে কোনও গানকে এক অনন্য মাত্রায় পৌঁছে দিত। তাঁর গানের সেই অবিস্মরণীয় কারুকার্য আজও মানুষের হৃদয়ে একইভাবে বেঁচে আছে। যে কোনও গান তিনি গাইলেই, সেটি শ্রোতাদের মনে গভীর ছাপ রেখে যেত।
বয়স বাড়ার কারণে কনসার্টে গাইতে না পারলেও, লতা মঙ্গেশকর (Lata Mangeshkar) কখনও গানের প্রতি তাঁর ভালোবাসা হারাননি। গান ছিল তাঁর অস্তিত্বের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। তাঁর প্রতিটি গান যেন এক জীবন্ত সৃষ্টির মতো হয়ে উঠত, যা আজও শোনা যায় এবং হৃদয়ে গভীরভাবে অনুরণিত হয়। আজ তিনি আমাদের মাঝে না থাকলেও, তাঁর সৃষ্টি অমর হয়ে থাকবে। সুরের সেই সম্রাজ্ঞী চিরকাল সঙ্গীত জগতের আকাশে আলোকিত হয়ে থাকবেন।