Reserve Bank of India: দেশের বিভিন্ন ফিন্যান্স সংস্থার ওপর বরাবর নজর থাকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের। সম্প্রতি চারটি নন ব্যাঙ্কিং মাইক্রো ফিন্যান্স সংস্থার বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নিল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। কেন এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া? ২১শে অক্টোবর চারটি NBFC-MFI-এর ঋণ অনুমোদন এবং ঋণ বিতরণ একেবারে নিষিদ্ধ করা হলো। চারটি NBFC-কে RBI তত্ত্বাবধায়ক আদেশের অধীনে এই সিদ্ধান্ত নিলো কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক।
রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া বক্তব্য প্রকাশ করেছে যে, ওয়েটেড ওভারেজ লেন্ডিং রেট এবং ফান্ড অফ ফান্ডের উপর সুদের হার অনেক বেশি। দেশের চারটি নন ব্যাঙ্কিং মাইক্রো ফিন্যান্স সংস্থা বেশি সুদে ঋণ দেওয়া-সহ একাধিক নিয়ম ভেঙেছে। চারটি নন-ব্যাঙ্কিং ফিন্যান্সিয়াল সংস্থার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (Reserve Bank of India)। ২১শে অক্টোবর থেকে এই নিষেধাজ্ঞা জারি হবে এমনটাই বলেছে আরবিআই। কারণ এই চারটি সংস্থা রিজার্ভ ব্যাংকের মনিটরি পলিসির নিয়ম লঙ্গন করেছে। এইসব কারণের জন্যই এই চার আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
আরবিআইয়ের কোপে পড়েছে দেশের চারটি আর্থিক সংস্থা। সংস্থাগুলির নাম হল, আশীর্বাদ মাইক্রো ফিন্যান্স লিমিটেড, আরোহণ ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেড, ডিএমআই ফিন্যান্স ও নাভি ফিনসার্ভ। এর মধ্যে আশীর্বাদ মাইক্রো ফিন্যান্সের প্রোমোটার হল জনপ্রিয় স্বর্ণ ঋণ দানকারী সংস্থা ‘মানাপ্পুরম ফিন্যান্স’। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, নভি ফিনসার্ভের প্রোমোটারদের তালিকায় নাম রয়েছে ই-কমার্স সংস্থা ‘ফ্লিপকার্ট’-র প্রাক্তন সহ প্রতিষ্ঠাতা সচিন বনসলের। এছাড়াও জাপানি ‘মিৎসুবিশি’ ৩৩ লক্ষ ৪০ হাজার ডলার ডিএমআই ফিন্যান্সে লগ্নি করেছে। রিজার্ভ ব্যাংক অফ ইন্ডিয়ার (Reserve Bank of India) এই করা সিদ্ধান্তের রীতিমতো হতবাক হয়ে গেছে এই সমস্ত প্রোমোটার ও বিনিয়োগকারীরা।
আরো পড়ুন: সোনার ঋণে রেকর্ড বৃদ্ধি, RBI-এর ঘুম হারাম, কিন্তু কেন
আরবিআই (Reserve Bank of India) অভিযোগ করেছে, বিগত কয়েক মাস ধরেই নিয়ন্ত্রিত সংস্থাগুলিকে বিভিন্ন চ্যানেলের মাধ্যমে ছোট মূল্যের ঋণে স্বচ্ছতা বজায় রাখতে বলা হয়েছিল। কিন্তু তারা স্বচ্ছতা বজায় রাখতে ব্যর্থ হয়েছে। পাশাপাশি এই চারটি ডন ব্যাঙ্কিং ফিন্যান্স সংস্থা ক্ষুদ্র অর্থ ঋণের ক্ষেত্রেও গার্হস্থ্য আয় এবং মাসিক শোধের বাধ্যবাধকতা সম্পর্কিত নিয়ন্ত্রক নির্দেশিকা অনুসরণ করেনি। তবে আরবিআই স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে যে, এই নিষেধাজ্ঞা বর্তমান গ্রাহকদের পরিষেবা, কালেকশন ও রিকভারি প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না৷
রিজার্ভ ব্যাংক এই বিষয়ে আরো জানিয়েছে, যখন এই চারটি সংস্থার বিরুদ্ধে নজরদারি চালানো হবে তাদের ঋণ দেওয়ার বিভিন্নরকম ফাঁক-ফোঁকর ধরা হবে। ঋণ দেওয়ার গড় মাত্রা এবং সুদের হার অস্বাভাবিক বেশি নেওয়া হচ্ছে। নিয়ম বহির্ভূতভাবে ঋণ দেওয়া হয়েছে, যার রীতিমতো অপরাধ। আরবিআই এই জন্যই কড়া পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হল। কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের এই অভিযোগ মানতে নারাজ নভি ফিনসার্ভ। তারা পাল্টা অভিযোগ করেছে যে সমস্তরকম নিয়ম-কানুন মেনেই ঋণ দেওয়া হয়েছে গ্রাহকদের। আরবিআইয়ের নিয়ম মানতে প্রত্যেকটি ফিন্যান্স সংস্থা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তাহলেও আরবিআই এর সমস্ত রকম অভিযোগ মানতে নারাজ এই সংস্থা।