Ratan Tata: এর আগে গোটা দেশ এরকম ঘটনার সাক্ষী থাকেনি কখনো। শিল্পপতি তথা উদ্যোগপতি রতন টাটার মৃত্যুতে গোটা দেশে নেমেছে বিষাদের ছায়া। এই ঘটনা এর আগে ভারতে ঘটেছে বলে মনে হয় না। জীবিতকালে এমনকি মৃত্যুর পরেও তিনি সকলের ভালোবাসা এবং শ্রদ্ধা অর্জন করেছেন। তার জীবনের বিভিন্ন পুরনো ঘটনা আবারও চর্চার শিরোনামে। তার একটি পুরনো ইন্টারভিউ বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে।
শিল্পজগতের এত বড় ক্ষতি সত্যিই কোনদিনও পূরণ হবে কিনা জানা নেই। নিজের কাজের মাধ্যমে তিনি শুধুমাত্র এই দেশে নয় গোটা বিশ্বে নিজের জায়গা করে নিয়েছেন। টাটা গোষ্ঠীকে আন্তর্জাতিক স্তরে নিয়ে যাওয়ার পেছনে মূল অবদান রয়েছে রতন টাটার(Ratan Tata)। শুধুমাত্র ব্যবসায়িক পরিচয় দিয়ে তাকে বিচার করা যাবে না। ব্যবসার লাভ-ক্ষতির ওপরেও নিজস্ব একটি পরিচয় স্থাপন করেছেন তিনি।
বিবেকানন্দের আদর্শয়ে অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন তিনি (Ratan Tata) এবং সততাই ছিল তার জীবনের মূল মন্ত্র। নিজের কাজের মধ্য দিয়ে সেটি বারংবার প্রমাণ করেছেন তিনি। শিল্পপতি হিসেবে কম সম্পত্তির মালিক ছিলেন না। তবে সবটাই যে কষ্টার্জিত সৎপথের রোজগার, তা দাবি করতেন রতন টাটা স্বয়ং। কোনদিনও অসৎ পথ বেছে নেননি তিনি। সম্প্রতি তাঁর যে পুরনো ইন্টারভিউ-এর ভিডিও চর্চায় উঠে এসেছে, সেখানেই ধরা পড়েছে সেই প্রসঙ্গ।
একটি জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যমকে ২০১০ সালে তিনি একটি ইন্টারভিউ দিয়েছিলেন। রতন টাটা (Ratan Tata) নিজের জীবনের বেশ কিছু অভিজ্ঞতা সেখানে তুলে ধরেছিলেন। শিল্পজগতে অসৎ পথ অবলম্বন করেন অনেকেই কিন্তু রতন টাটা তা কোনদিনও করেননি। এমনকি এই কাজে রাজনৈতিক নেতারা নানাভাবে জড়িয়ে থাকে। বহু চুক্তি অবৈধভাবে সম্পন্ন হয়ে থাকে যার কোনোরকম প্রমাণ থাকে না। সাফল্যের জন্য কোনদিনও এই অবৈধ পথ বেছে নেননি রতন টাটা।
আরো পড়ুন: পদে আসীন হয়েই আইনি পরামর্শ নিতে হচ্ছে নোয়েল টাটাকে, কি হলো তার
এর ফলে বহু মারাত্মক ফল ভোগ করতে হয়েছে তাকে। কোটি কোটি টাকা ঘুষের বিনিময়ে অবৈধ কাজ করেন কিছু স্বার্থান্বেষী রাজনৈতিক নেতা। রাজনৈতিক নেতা তথা মন্ত্রীকে ১৫ কোটি ঘুষ দেওয়ার প্রস্তাব পান রতন টাটা। তাকে একটি বিশেষ কাজে সাহায্য করবেন ওই মন্ত্রী। টাকার বিনিময়ে সমস্ত কাজ হয়ে যাবে একেবারে নিশ্চুপে। নাম প্রকাশ্যে না আনলেও তিনি কোনদিনও সেই প্রস্তাবে রাজি হননি। শিল্পপতি বন্ধু তাকে এই প্রস্তাব দিয়েছিল, বারবার ঘুষ দেওয়ার কথা বললেও তিনি রাজি হননি। ঘুষ দেওয়া দূরে থাক, বিষয়টি নিয়ে কোনও কথাই এগোননি। লাভ ক্ষতির হিসাবের থেকে তিনি সর্বদাই অনেকটাই এগিয়ে ছিলেন। তিনি মনে করতেন দিনের শেষে সততা বজায় রেখে কাজ করতে পেরে যে শান্তির ঘুম তিনি দেবেন সেটাই তার পরম পাওয়া। নিজের ভালো সকলকে বুঝতে হয় এবং সততা বজায় রেখে কাজ করলে সফলতা একদিন অবশ্যই আসবে। এমন কোনও কাজ যেন রোজকার রুটিনে না থাকে, যা অস্বস্তিতে ফেলবে। তাহলে জীবনে আর কোনও ভয় থাকবে না। সৎ পথে থাকলে জয় লাভ করতে দেরি হবে কিন্তু একদিন অবশ্যই হবে। নিজের জীবনের উদাহরণ দিয়েই সে কথার প্রমাণ দিতেন। ঘুষ না দেওয়ার ঘটনাও এরই অংশ মাত্র।