Bagdogra Rail Station: উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলে নতুন বছরেই কাজ শুরু হবে। নতুন রেলপথের কাজ শুরু হবে ঘোষপুকুর, বিধাননগর ও সোনাপুর দিয়ে। সমীক্ষা শেষ হওয়ার পর নতুন রেলপথের অনুমোদন মিলেছে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের এবং আশা করা হচ্ছে নতুন বছরেই হয়তো কাজ শুরু হয়ে যাবে। এই নতুন রেলপথ নির্মাণের আসল উদ্দেশ্য হল নিউ জলপাইগুড়ি-রাঙ্গাপানির ওপর চাপ কমানো। বাগডোগরা বিমানবন্দরের সঙ্গে অতিরিক্ত ট্রেনের সংযোগ ঘটাতে রেল এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। শুধুমাত্র এই রাজ্যে নয় অন্যান্য রাজ্যেও অল্প সময়ে এবং স্বল্প খরচে এর ফলে কৃষিজ পণ্য পাঠানো সহজ হবে। মনে করছেন স্থানীয়রা। নতুন রুটে ট্রেন চলাচল শুরু হলে এলাকাগুলির উন্নয়নের পাশাপাশি চিকেন নেকের নিরাপত্তা আগের থেকে অনেক বেশি মজবুত করতে হবে এমনটাই মনে করছে রেলকর্তারা।
ভারতীয় রেলের উদ্যোগে নিউ জলপাইগুড়ি (এনজেপি) জংশনকে গড়ে তোলা হচ্ছে বিশ্বমানের পর্যায়ে। রেলের পরিকল্পনা অনুযায়ী আগামী বছরের মধ্যেই শেষ করতে হবে এই কাজ। বাড়তি ট্রেন চালানোর অন্যতম উদ্দেশ্য হলো দেশের বিভিন্ন প্রান্তের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন। এনজেপির ওপর যেমন চাপ বাড়বে, তেমনই ব্যস্ত থাকবে রাঙ্গাপানি রুট। পাশাপাশি বাগডোগরা বিমানবন্দর সম্প্রসারণের কাজ চলছে জোরকদমে। দু’বছরের মধ্যে কাজ শেষ করে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের পাশাপাশি সার্কভুক্ত দেশগুলির সঙ্গে আকাশপথে বাগডোগরার যোগাযোগ স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে বিমান চলাচলমন্ত্রকের।
আরো পড়ুন: হাওড়া এবং শিয়ালদায় বাতিল করা হলো বহু ট্রেন, একনজরে দেখে নিন তালিকা
নতুন রেলপথ তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়ার মূলে আসল কারণই হল, এই পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে এনজেপি’র ওপর চাপ কমানো এবং বিমানবন্দরের সঙ্গে যোগাযোগ বৃদ্ধি করা। রেল সূত্রে খবর, চলতি বছরের গোড়ায় সমীক্ষা করে নতুন রুট হিসেবে ঘোষপুকুর, বিধাননগর, সোনাপুরের মতো কয়েকটি এলাকাকে বেছে নেওয়া হয়। বাগডোগরা-ঘোষপুকুর-বিধাননগর-সোনাপুর হাট-তিনমাইল হাট- রেলবোর্ড ইতিমধ্যে এই নতুন রুটকে (Bagdogra Rail Station) সম্মতি দিয়েছে। অর্থমন্ত্রক ইতিমধ্যে বরাদ্দ করেছে এই প্রকল্পের খরচ। বৈঠকে এই বিষয়টি অনুমোদনের বিষয়ে আলোচনা করা হবে অর্থবরাদ্দ এবং লিখিত নির্দেশ এলে কাজ শুরু হবে বলে জানান উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কপিঞ্জলকিশোর শর্মা।
আরো পড়ুন: দমদম বিমানবন্দর নেতাজির নামে, তাই বাগডোগরা বিমানবন্দরের নামকরণ এনার নামে হতে চলেছে
জমির বিষয় নিয়ে রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা ইতিমধ্যেই সেরে ফেলেছে রেলমন্ত্রক। রাজ্য সরকার জমি সংক্রান্ত বিষয়ে সাহায্য করবে এমনটাই বলা হয়েছে। বর্তমানে এনজেপি এবং আলুয়াবাড়ি রোডের মধ্যে ট্রেন চলাচল করে রাঙ্গাপানি-নিজবাড়ি-চটের হাট-ধুমডাঙ্গি-তিনমাইল হাট-মাগুরজানের মধ্য দিয়ে। এই অঞ্চলগুলি কিন্তু বাংলাদেশ সীমান্তের খুব কাছাকাছি। এছাড়া, শিলিগুড়ি জংশন এবং আলুয়াবাড়ি রোডের মধ্যে ট্রেন চলে বাগডোগরা-নকশালবাড়ি-বাতাসি-অধিকারী-গলগলিয়া-পিপড়িধান-ঠাকুরগঞ্জ হয়ে। এই রুটটি আবার নেপাল লাগোয়া।
যদি একবার তিনমাইল হাট এবং বাগডোগরার (Bagdogra Rail Station) মধ্যে নতুন লাইন পাতার পর রাঙ্গাপানি এবং এনজেপির ওপর চাপ কমে তাহলে কাজ আগে থেকে অনেক বেশি সহজ হবে। পাশাপাশি নতুন যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে উঠতে চলেছে বাগডোগরা বিমানবন্দরের সঙ্গেও। হিমালয়ান হসপিটালিটি অ্যান্ড ট্যুরিজম ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্কের সাধারণ সম্পাদক সম্রাট সান্যাল এই বিষয়ে বলেছেন যে, এই ইতিবাচক সিদ্ধান্তের ফলে শুধুমাত্র ব্যবসা-বাণিজ্য নয় পর্যটন শিল্প লাভবান হবে। এখানকার আনারস মূলত ট্রাকে বিভিন্ন রাজ্যে যায়। রেলের এই নতুন উদ্যোগ ব্যবসায়ীদের পক্ষে লাভজনক। পাশাপাশি রেল দ্রুত কাজ চালু করতে চাইছে এনজেপি থেকে ঠাকুরগঞ্জ পর্যন্ত ডাবল লাইনের। যার জন্য ফুলেশ্বরী, হকার্স কর্নার, শিবমন্দির বাজার, বাগডোগরার মতো বেশ কয়েকটি এলাকায় যারা জায়গা দখল করে রয়েছে তাদের উচ্ছেদ করতে হবে। রাজ্যকে ইতিমধ্যেই এই বিষয়টি নিয়ে চিঠি দেওয়া হয়ে গেছে। রাজ্যের তরফে ইতিবাচক সাড়া মিলেছে বলে রেলের এক আধিকারিকের দাবি।