Strange Fact Of Rail: ভারতীয় রেল হল এশিয়া মহাদেশের মধ্যে সবথেকে বৃহত্তম পরিবহন ব্যবস্থার নেটওয়ার্ক। সারা দেশে ছড়িয়ে রয়েছে শিরা উপশিরার মত। দেশের যেকোন প্রান্তে খুব সহজেই কম খরচে পৌঁছে যাওয়া যায় ভারতীয় রেলের দ্বারা। সমাজের যেকোন শ্রেণীর মানুষ রেলের ভ্রমণ করতে পারে, রেল যাত্রা হল সবথেকে নিরাপদ এবং আরামদায়ক যাত্রা। সম্প্রতি ভারতীয় রেল আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে তাদের পরিষেবাকে আরো বেশি উন্নত করেছে। কিন্তু ভারতীয় রেলের এমন বহু অজানা তথ্য রয়েছে যা সকলের জানা নেই।
আজকের এই প্রতিবেদনে রেলের কিছু অজানা তথ্য নিয়েই আলোচনা করা হবে। এমন একটি আজব স্টেশন (Strange Fact Of Rail)যার নাম থেকে শুরু করে তার সঙ্গে জড়িত কাহিনীও পর্যন্ত অদ্ভুত। আশা করি এই বিষয়টি সম্পর্কে অনেকেই সঠিকভাবে অবগত নন, তাই প্রতিবেদনটি যদি মনোযোগ সহকারে পড়েন তাহলে অনেক অজানা তথ্যের সন্ধান পাবেন। স্টেশনটির নামটি যেন অদ্ভুত (Strange Fact Of Rail), পূর্ব বর্ধমান জেলাতে রয়েছে নোয়াদার ঢাল নামের একটি স্টেশন। অনেকেই হয়তো এই স্টেশনের নাম শোনেননি। কিন্তু ট্রেনে করে যদি বোলপুর কিংবা তারাপীঠ গিয়ে থাকেন তাহলে হয়তো এই স্টেশনটি চোখে পড়তে পারে। নিশ্চয়ই নামটি দেখে অবাক লেগেছে, এর সঙ্গেই জড়িয়ে রয়েছে কিছু আজব কাহিনী।
আরো পড়ুন: হেলমেটে থাকতে হবে এই চিহ্ন, না হলে মিলবে কঠোর শাস্তি
সোশ্যাল মিডিয়ার পাতায় বেশ কিছুদিন ধরেই চর্চায় উঠে আসছে এই স্টেশনটির নাম। হঠাৎ কেন সোশ্যাল মিডিয়ার পাতায় এত শোরগোল পড়ে গেল এই স্টেশনটিকে(Strange Fact Of Rail)নিয়ে? এর আসল কারণ হলো স্টেশনটির নামকরণ। বহু মানুষ সোশ্যাল মিডিয়াতে এই স্টেশনটির সম্পর্কে বহু তথ্য লিখছেন এবং বলছেন। কেউ কেউ বলেছেন ইংরেজ সাহেবের মন্তব্য বুঝতে পারেনি দেশীয় মানুষ তাই জন্য স্টেশনটির নাম নাকি এরকম আজব হয়েছে। হয়তো শুনতে ভুল কিংবা বুঝতে ভুল হওয়ার কারণেই স্টেশনটির পরবর্তী নাম হয়ে দাঁড়িয়েছে ‘নোয়াদার ঢাল’। সোশ্যাল মিডিয়াতে বহু চর্চিত বিষয়টি আদৌ কতটা সত্যি সেটা জানা দরকার।
আরো পড়ুন: ট্রাম ডিপো নিয়ে বড় চক্রান্ত! তৈরি হবে বড় বড় ফ্ল্যাট-শপিংমল-ক্যাফে আর কি কি
সোশ্যাল মিডিয়ার তথ্য অনুযায়ী, ১৮৬০ সাল নাগাদ বর্ধমান থেকে সাহেবগঞ্জ পর্যন্ত বহু স্টেশন এবং প্ল্যাটফর্ম তৈরি হয়েছিল। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য দুটি স্টেশনের নাম রাখা হয় “ঝাপটের ঢাল”, এবং “পিচকুড়ির ঢাল”। এই দুটি স্টেশন বাদে অন্যান্য স্টেশনের নামকরণ করা হলেও বাদ পড়ে যায় একটি স্টেশন। ইংরেজ সাহেবের কাছে স্টেশনটির কি নামকরণ হবে জানতে চাইলে তিনি এক দেশীয় কর্মচারীকে বলেন, দুটি স্টেশনের নামকরণ ঢাল দিয়ে করা হয়েছে বলে পুট এনিথিং বাট “নো আদার ঢাল”। দেশীয় কর্মচারী সেইটিকে ভেবে নেন স্টেশনের নাম। কিছুদিন পর ওই স্টেশনের নামকরণ হয় ‘নোয়াদার ঢাল’। বহু মানুষ মনে করেছেন “নো আদার ঢাল” থেকে হয়েছে নোয়াদার ঢাল। এটাই কি কাহিনীর সত্যতা?
নোয়াদা গ্রামের বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক সুকুমার দাস বৈরাগ্য এই বিষয়ে বলেছেন, কাহিনীটি হয়তো সত্য নয়, বরং মজার কাহিনী। শিক্ষকের বয়স এখন ৭০ বছর অর্থাৎ যখন ১০ বছর বয়স ছিল তখন এই স্টেশনটি তৈরি হচ্ছিল সম্ভবত ১৯৬৫ সালে। তারা ছেলে প্রায় এই স্টেশন তৈরি হওয়া দেখতে আসতো। গ্রামের মধুসূদন কর্মকার স্টেশন বিল্ডিং এবং কোয়াটারের দরজা, জানালা তৈরি করেছিলেন। এখনো তিনি বেঁচে রয়েছেন বয়স ৯০ বছর। স্টেশনটির উদ্বোধন হয়েছিল ১৯৬৫ সালে। ঠিক সেই সময় পরপর তিনটি স্টেশন উদ্বোধন হয় ঝাপটের ঢাল, পিচকুড়ির ঢাল এবং নোয়াদার ঢাল। নোয়াদা গ্রামের কাছে বলেই এই স্টেশনের নাম নোয়াদার ঢাল হয়েছে। সাধারণত ঢাল কথার অর্থ হলো নিচু জায়গা। স্টেশনটি কিন্তু গ্রাম থেকে অনেকটাই নীচে। গ্রামটি উচু হওয়ার কারণে কোনদিনও বন্যায় সমস্যা হয়নি। নোয়াদার সঙ্গে ঢাল জুড়ে হয়েছিল “নোয়াদার ঢাল”। তিনি একটা বিষয়ে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন যে সোশ্যাল মিডিয়াতে যে কাহিনী চর্চিত হচ্ছে তা পুরোপুরি গুজব।