Chandmari Bridge: ভারতের প্রাচীনতম রেলওয়ে স্টেশনগুলির মধ্যে অন্যতম হাওড়া স্টেশন। যা দেশের বৃহত্তম এবং ব্যস্ততম রেলওয়ে স্টেশন হিসেবে পরিচিত। যে স্টেশনের ওপর দিয়ে প্রতিদিন যাতায়াত করে প্রায় লাখ লাখ লোক। এবার সেই রেল স্টেশনের একটি প্রাচীন সেতু নিয়েই নয়া পরিকল্পনা করলো রেল। কোন সেতু নিয়ে সিদ্ধান্ত নিল রেল কর্তৃপক্ষ? কেনই বা এই পরিকল্পনা তৈরি করলো? এতে কি সুবিধা পাবে রেলযাত্রীরা? কবে শেষ হবে এই নয়া পরিকল্পনার কাজ?
কোন সেতু নিয়ে নয়া সিদ্ধান্ত নিলো রেল? খবর রয়েছে হাওড়া স্টেশনের সম্মুখে বাকল্যান্ড ব্রিজ নিয়ে নয়া পরিকল্পনা তৈরি করেছে রেল কর্তৃপক্ষ। যে ব্রিজটি একটি ঐতিহাসিক ব্রিজ হিসেবে পরিচিত। আর সেই ১০০ বছরের প্রাচীন ব্রিজ গুড়িয়ে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পূর্ব রেল। কিন্তু কেন হঠাৎ এই সিদ্ধান্ত নিল রেল কর্তৃপক্ষ? জানা গিয়েছে ১৯৩৩ সালে হাওড়া স্টেশনে ঢোকার মুখে ওভারব্রিজ তৈরি হয়েছিল। যা ইস্ট ইন্ডিয়ান রেলওয়ে তরফে তৈরি করা হয়েছিল। যা হাওড়ার চাঁদমারি রোড ওভারব্রিজ (Chandmari Bridge) নামেও পরিচিত। আর সেই চাঁদমারি ওভারব্রিজ ভেঙে ফেলার পরিকল্পনা করেছে পূর্ব রেল।
আরো পড়ুন: শুধু মেট্রো নয়, এবার গঙ্গার তল দিয়ে ছুটবে গাড়িও! কবে মিলবে কেন্দ্রের এই উপহার
কারণ হিসেবে জানা গিয়েছে এই ওভারব্রিজ ভেঙে চার লেনের স্ট্রেট রোড ওভারব্রিজ তৈরি করবে বলেই এই ব্রিজ ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পূর্বরেল কর্তৃপক্ষ। যাতে যাতায়াতে যানযট সমস্যায় না পড়তে হয় যাত্রীদের। কবে থেকে চালু হবে এই ব্রিজ? খবর রয়েছে ২০২৫ সালের এপ্রিল মাসের মধ্যেই এই ব্রিজের নির্মাণকার্য শেষ করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। তবে এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি হাওড়া স্টেশনের সম্মুখভাগে তৈরি হওয়া এই প্রাচীন ব্রিজ বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন নামে পরিচিত। সরকারিভাবে এই সেতুটির নাম বাকল্যান্ড ব্রিজ। তবে কেউ কেউ আবার চাঁদমারি ব্রিজ (Chandmari Bridge) বলে আখ্যায়িত করে। আবার কেউ কেউ এই ব্রিজকে বাঙালবাবুর ব্রিজ বলেও পরিচয় দেন।। কারণ এই ব্রিজটির প্রথম নাম ছিল বাঙালবাবুর ব্রিজ। সেই নিয়েও এক তথ্য উঠে এসেছে।
আরো পড়ুন: এটিই হলো বাংলার প্রাচীন রাজধানী, শীতে ঘুরতে যাওয়ার অন্যতম জনপ্রিয় জায়গা
বাঙালবাবুর নামে ব্রিজ নামকরণের কাহিনী প্রসঙ্গে জানা যায় ১৮৬৩ খ্রিস্টাব্দে ব্যবসায়িক সূত্রে বাঙালবাবুর পরিবার ঢাকা থেকে হাওড়ায় চলে আসেন। হাওড়া এসে তারা বেশ প্রভাবশালী হয়ে ওঠেন। জমিদারি হিসেবে আখ্যায়িত হয়। আর তৎকালীন সময়ে ঔপনিবেশিক সরকার বাঙালবাবুর পরিবারের পুত্র শ্রী রামরতনবাবু এবং রাজলোচনের মধ্যে রামরতন বাবুকে ভারতীয় বংশোদ্ভুত প্রথম কমিশনার হিসেবে নিযুক্ত করেন। তারপর ধীরে ধীরে বাঙাল পরিবারের বেশ আধিপত্য বিস্তার হয়। হাওড়ায় তাদের ব্যবসার সুবিধার্থে তারা হাওড়ায় একটি মার্কেটও তৈরি করেন। যার নাম বাঙালবাবুর মার্কেট হিসেবে আজও পরিচিত।
তবে সেই মার্কেটে আসার জন্য রেলওয়ে পারাপার করতে হতো। আর তার জন্য তারা রেলের উপর একটি কাঠের সেতু তৈরি করেছিল। যা বাঙালবাবুর সেতু হিসেবে পরিচিতি পায়। পরবর্তীতে ১৯৩৩ সালে ইস্ট ইন্ডিয়ান কোম্পানি রেলের উপর ওই সেতুসহ আরো বিস্তীর্ণ অংশ জুড়ে কংক্রিটের ব্রিজ তৈরি করে। যা সরকারিভাবে নাম দেওয়া হয় বাকল্যান্ড ব্রিজ। আর তারপর থেকেই সেখানকার স্থানীয় লোকমুখে এই ব্রিজের নামকরণ হয় চাঁদমারি ব্রিজ। আজও এই এলাকার স্থানীয় লোকেরা এই ব্রিজকে চাঁদমারি ব্রিজ (Chandmari Bridge), বাঙালবাবু ব্রিজ প্রভৃতি নামে পরিচয় দেয়।