Bridge over Muriganga River: গঙ্গাসাগর মেলা শুধু পুণ্যার্থীদের জন্য নয়, বাংলার সংস্কৃতি ও পর্যটনের অন্যতম আকর্ষণ। কিন্তু মুড়িগঙ্গা নদী পেরিয়ে সাগরদ্বীপে পৌঁছানোর দীর্ঘদিনের অসুবিধা এবার শেষ হতে চলেছে। রাজ্য সরকারের উদ্যোগে মুড়িগঙ্গার উপর সেতু (Bridge over Muriganga River) নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। এই সেতু শুধু যাতায়াতের অসুবিধা মেটাবে না, বরং এলাকার আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।
শুক্রবার বিধানসভায় সুন্দরবন উন্নয়নমন্ত্রী বঙ্কিম হাজরা জানান, এই সেতু নির্মাণে (Bridge over Muriganga River) প্রাথমিক বাজেট ধরা হয়েছে ১৪৩৮.৬২ কোটি টাকা। ইতিমধ্যেই দরপত্র আহ্বানের কাজ শুরু হয়েছে। তবে কেন্দ্রীয় সরকারের কোনও সাহায্য ছাড়াই এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। মন্ত্রী অভিযোগ করেন, যেখানে কুম্ভমেলার জন্য কেন্দ্র বিপুল অর্থ বরাদ্দ করে, সেখানে গঙ্গাসাগর মেলার জন্য কোনও সহায়তা করা হয়নি। এমনকি, গঙ্গাসাগর মেলাকে ‘জাতীয় মেলা’ হিসেবেও স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি।
আরো পড়ুন: দেশের দ্বিতীয় প্রাচীনতম স্টেশন হাওড়া, যাত্রীদের সুবিধার জন্য নিল অভিনব পদক্ষেপ
৩.১ কিলোমিটার দীর্ঘ চার লেনের এই সেতু নির্মাণে নাবার্ডের রুরাল ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট ফান্ড (আরআইডিএফ)-এর অর্থ ব্যবহার করা হবে। গত বাজেটে সেতু নির্মাণের জন্য ১২০০ কোটি টাকার বরাদ্দ ঘোষণা করা হয়েছিল। এর মধ্যে প্রথম বছরে ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। সেতুটি শুধু সাগরদ্বীপের মানুষের জন্য নয়, এই অঞ্চলের যোগাযোগ ও পণ্য পরিবহণ ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন ঘটাবে।
আরো পড়ুন: দিঘা, মন্দারমণি এখন অতীত, নিরিবিলিতে সময় কাঁটানোর সেরা ঠিকানা এই সমুদ্র সৈকত
সাগরদ্বীপে বসবাসকারী দুই লক্ষাধিক মানুষের যাতায়াতের প্রধান ভরসা ছিল নদী পারাপারের ভেসেল ও বার্জ। রোগী থেকে শুরু করে ব্যবসায়িক পণ্য পরিবহণেও দুর্ভোগ পোহাতে হত। এই সেতু হলে শুধু গঙ্গাসাগর মেলা নয়, সাগরদ্বীপের অর্থনীতি ও পর্যটনও চাঙ্গা হবে। নিত্যদিনের চলাচল আরও সহজ হবে, আর ব্যবসার ক্ষেত্রেও নতুন সুযোগ তৈরি হবে। এই সেতুর ফলে সাগরদ্বীপের অর্থনৈতিক অগ্রগতি দ্রুততার সঙ্গে বৃদ্ধি পাবে। মেলার সময় মানুষের ভিড়ের চাপও কমবে, পাশাপাশি এলাকার কৃষক, ব্যবসায়ী এবং পর্যটকদের জন্য নতুন দিগন্ত খুলে যাবে।
স্থানীয়রা বলছেন, এই সেতু (Bridge over Muriganga River) তাঁদের দীর্ঘ কুড়ি বছরের প্রত্যাশা পূরণ করবে। রাজ্যের এই উদ্যোগ শুধু তীর্থযাত্রীদের সুবিধা দেবে না, বরং সুন্দরবনের এই অংশকে জাতীয় পর্যটন মানচিত্রে আরও উজ্জ্বল করবে। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগও তৈরি হবে, যা স্থানীয় মানুষের জীবনে পরিবর্তন আনবে। সেতুটি সাগরদ্বীপের ব্যবসা এবং পর্যটন শিল্পের বিকাশে সহায়তা করবে, এবং পুরো অঞ্চলের উন্নয়নকে একধাপ এগিয়ে নিয়ে যাবে।