Burdwan: কথায় আছে পরিশ্রম হল সাফল্যের চাবিকাঠি। আর সেটাই প্রমাণ করে দেখালেন পূর্ব বর্ধমানের (Burdwan) দেবার্ঘ্য চট্টোপাধ্যায়। একবার ব্যর্থ দুবার ব্যর্থ তিনবার ব্যর্থ কিন্তু চার বারের মাথায় ঠিক নিজের সফলতা অর্জন করলেন দেবার্ঘ্য। সপ্তম স্থান অধিকার করলেন ইউপিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিস পরীক্ষায়। কিভাবে সফলতা অর্জন করলেন দেবার্ঘ্য? জানালেন নিজ মুখেই…..
নাম তার দেবার্ঘ্য। বর্ধমানের (Burdwan) ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের শ্যামলাল এলাকায় বসবাস করেন তিনি। মধ্যবিত্ত পরিবারের দেবার্ঘ্য বর্ধমানের বাজার সংলগ্ন CMS স্কুল থেকে মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক পাশ করেন। তারপর কলকাতায় পাড়ি দেন উচ্চশিক্ষা লাভের জন্য। প্রথম থেকেই তাকে কম্পিউটার সাইন্স নিয়ে পড়ার জন্য অনেকে পরামর্শ দিত। কিন্তু তার ভালো লাগতো টেলি কমিউনিকেশন। চার বছরের এই কোর্স করার জন্য কলকাতার এক নাম করা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হলেন দেবার্ঘ্য। তারপরই শুরু হল তার পরিশ্রম।
প্রথম দুবছর টেলি কমিউনিকেশনের পড়াশোনা নিয়েই থাকতেন। তার পরেই চাকরির বিষয়ে খোঁজখবর নিতে শুরু করেন দেবার্ঘ্য। আর সেই খোঁজখবরের সন্ধানে থাকাকালীন সময়ে একটা অ্যাপের মাধ্যমে ইউপিএসসি ইঞ্জিনিয়াররিং পরীক্ষার বিষয়ে জানতে পারেন তিনি। আর সেই পরীক্ষার জন্য শুরু করেন প্রস্তুতি। প্রথম দিকে করোনার কারণে বন্ধ হয়ে গেলেও অনলাইনে চালু হয় ক্লাস। ২০২১ সালে প্রথম ইউপিএসসি পরীক্ষায় বসেন দেবার্ঘ্য। প্রথম ধাপে ব্যর্থ হলে আবার ২০২২ সালে পরীক্ষা দেয় দেবার্ঘ্য। কিন্তু সেবারেও প্রিলিমসে পাশ করতে পারেনি।
আরো পড়ুন: মহিলাদের উপার্জনের উপায় পূর্ব বর্ধমানে, কোন পদে হবে নিয়োগ
বারবার ব্যর্থ হলেও হাল ছাড়েনি দেবার্ঘ্য। বরং মনের মধ্যে তৈরি করে অদম্য জেদ। আর সেই জেদের বসেই ২০২৩ সালের পরীক্ষায় প্রিলি, মেনস পাস করে ইন্টারভিউ পর্যন্ত পৌঁছায়। কিন্তু ফাইনালে ব্যর্থ হয়। তবে ২০২৪ এর পরীক্ষায় বাজিমাত করে দেবার্ঘ্য। UPSC ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিস পরীক্ষায় দেশের মধ্যে সপ্তম স্থান অর্জন করে দেবার্ঘ্য। ইন্ডিয়ান টেলিকম সার্ভিসে ডিপার্টমেন্ট অফ টেলিকমিউনিকেশনে অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ার টেলিকম হিসেবে যোগদান করবে দেবার্ঘ্য। নিউ দিল্লিতে হবে পোস্টিং। তবে এই খুশির খবর জানানোর পাশাপাশি তার এই প্রচেষ্টায় তিনি ধন্যবাদ জানিয়েছেন তার মাকে।
দেবার্ঘ্যের কথায় ছোট থেকেই তার মা তাকে সাহায্য করে গিয়েছে। তার সব বন্ধুরা যখন কাজ করতো তখন সে পড়াশোনা করতো। বেকার হওয়ায় তার খারাপ লাগতো। তবে অনেক বন্ধুর থেকেও সে সাহায্য পেয়েছে বলে জানিয়েছে। তবে সাম্প্রতিক সাফল্যে সে অত্যন্ত খুশি। পাশাপাশি আনন্দিত সকল বর্ধমানবাসী (Burdwan)। খুশিতে আত্মহারা পরিবারের সকলে। তবে এই সফলতা পেয়ে অন্যান্য চাকরিপ্রার্থীদের উদ্দেশ্যে দেবার্ঘ্য জানিয়েছে হাল ছাড়লে চলবে না, লক্ষ্য স্থির রেখে পরিশ্রম চালিয়ে যেতে হবে। তাহলেই মিলবে সফলতা। দেবার্ঘ্যের এই অদম্য জেদ ও ইচ্ছা শক্তি তাকে সফলতার শিখরে নিয়ে গেছে। যা অনুপ্রেরণা যোগায় অন্যান্য চাকরিপ্রার্থীদের।