Digha Jagannath Temple Budget : পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের কথা কে না জানে। পুরী যাওয়া মানেই জগন্নাথ দেবের দর্শন । তবে যারা এখনো পুরীর জগন্নাথ মন্দির দর্শন করেননি তারা দিঘায় গিয়ে সেই ইচ্ছা পূরণ করতে পারেন। আগামী বৈশাখ মাসে অক্ষয় তৃতীয়ার দিন দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধন হবে। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্মীয়মাণ জগন্নাথ মন্দির পরিদর্শনের পর ঘোষণা করেছেন এমনটাই। দিঘার জগন্নাথ মন্দির পরিদর্শন করে বুধবার মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেন যে এবার থেকে এই জগন্নাথ মন্দির দিয়েই শুরু হবে রথযাত্রা। পাশাপাশি তিনি আরও ঘোষণা করেন যে, সোনার ঝাড়ুর জন্য নিজের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে পাঁচ লক্ষ টাকা দেবেন। তবে দিঘায় নবনির্মিত এই মন্দিরের বাজেট ক্রমশ বেড়েই চলেছে।
মুখ্যমন্ত্রীর বলেছেন, তিনি ঠিক করেছিলেন সমুদ্রসৈকতে একটি জগন্নাথ মন্দির তৈরি করবেন এবং তার সেই ইচ্ছা আজকে পূরণের পথে। এই কর্মকান্ডে তার পাশে ছিলেন একাধিক সরকারি আধিকারিকেরা। তিন বছর পর সেই কাজ শেষ হল। পুরীর জগন্নাথ মন্দির যেমন একটি গুরুত্বপূর্ণ দর্শনীয় স্থান তেমনি ভবিষ্যতে দিঘায় নবনির্মিত এই জগন্নাথ মন্দির পর্যটকদের কাছে এবং ভক্তদের কাছে অন্যতম আকর্ষণীয় স্থান হয়ে উঠবে।
পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের আদলে তৈরীর এই মন্দিরটি পর্যটকদের নজর করবে সেটাই স্বাভাবিক। তবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের সঙ্গে দিঘার এই মন্দিরের তুলনা করতে একেবারে নারাজ। তিনি বলেছেন পরীর মন্দিরটি রাজাদের সময়কালে তৈরি কিন্তু দিঘায় নবনির্মিত এই জগন্নাথ মন্দিরটি নির্মাণ হয়েছে রাজ্য সরকারের উদ্যোগে। ভোগঘর, স্টোর রুম, গেস্ট রুম আলাদা আছে। সেল্ফ হেল্প গ্রুপের মেয়েদের ব্যবসা করার জন্য ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে, এমনটাও ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে আজকের এই প্রতিবেদনে জানা যাবে এই মন্দির নির্মাণের বাজেট (Digha Jagannath Temple Budget) আগের তুলনায় অনেকটাই বৃদ্ধি পেয়েছে।
আরও পড়ুন:Digha Jagannath Dham: আর এদিক-ওদিক নয়, দিঘার জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধনের পাকা দিন জানিয়ে দিলেন মমতা
মুখ্যমন্ত্রী ২০১৯ সালে দিঘায় পুরীর মন্দিরের আদলে জগন্নাথ মন্দির তৈরির কথা ঘোষণা করেছিলেন। তবে কোভিড এর কারণে আটকে ছিল এই কাজ। মহামারীর পরিস্থিতি কিছুটা সামলে ওঠার পর হিডকো ২০২২ সালের মে মাসে মন্দির তৈরির কাজ শুরু করে। মন্দিরটি নির্মিত হচ্ছে প্রায় ২২ একর জমির উপর এবং বুধবার মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, আগে এই মন্দির নির্মাণের জন্য বরাদ্দ হয়েছিল যে অর্থ তা ছাড়িয়ে গেছে বর্তমানে। মন্দিরের জন্য প্রায় আড়াইশো কোটি টাকা খরচ হয়েছে (Digha Jagannath Temple Budget) । মন্দির পরিচালনার জন্য একটি ট্রাস্টি বোর্ড (অছি পরিষদ) তৈরি করা হয়েছে। ১৩ জন সদস্য থাকবেন ওই ট্রাস্টি বোর্ডে। তার মধ্যে থাকছেন পুরীর মন্দিরের পাঁচ জন, সনাতনী প্রতিনিধি হিসাবে চার জন এবং চার জন স্থানীয় পুরোহিত। হিন্দুদের জন্য সমুদ্রতীরে গড়ে উঠতে চলেছে এক অভিনব তীর্থস্থান। সম্প্রতি রাজ্য সরকার বাংলার বিভিন্ন তীর্থস্থানগুলোর জন্য বরাদ্দ করেছে প্রচুর অর্থ, তাই বাজেটও বৃদ্ধি পেয়েছে দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের।
দিঘা পরিদর্শন করতে এসে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন যে, দিঘার জগন্নাথ ধামের মূল দরজাটি থাকবে চৈতন্যদ্বারে। ওই জায়গার নাম হবে ‘চৈতন্যদ্বার জগন্নাথ ধাম’। এই বিষয়ে তিনি আরো জানান যে, প্রতিটি জায়গার সদ্ব্যাবহার হয়েছে। পুরীতে যেমন ধ্বজা তোলা হয়, এই মন্দিরের ক্ষেত্রেও তার অন্যথা হবে না। পুরীর মন্দিরে প্রতিদিন পতাকা তোলার যেমন নিয়ম রয়েছে এখানেও সেই নিয়ম অক্ষত থাকবে। তবে এই জগন্নাথ মন্দিরটি উদ্বোধন হবে আগামী বছর অক্ষয় তৃতীয়ার দিন । রথযাত্রার সূত্রপাত হবে এই মন্দির থেকেই। এই অভিনব কাজের জন্য তিনি ধন্যবাদ জানিয়েছেন হিডকোকে। জনগণের সুবিধার জন্য এবং নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে পুলিশ পোস্ট রাখার কথাও চিন্তা করেছেন তিনি। পুরোহিতদের জন্য থাকবে অতিথি নিবাস। তবে এই মন্দির নির্মাণের ক্ষেত্রে কোন রকম রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ চান না তিনি। রাষ্ট্রের নিয়ম অনুসারেই সবকিছু চলবে এই মন্দিরে।