Fair Price of Potatoes: আলুর উৎপাদন বেশি হওয়াতে রাজ্যে শুরু হয়েছে আলুর কালোবাজারি। সেই কারণেই পশ্চিম মেদিনীপুরের শুরু হয়েছে এই কালোবাজারি ঠেকাতে ন্যায্যমূল্যে আলু বিক্রি। বর্তমানে পশ্চিম মেদিনীপুরে সরকারি উদ্যোগে ২৫ থেকে ২৭ টাকা কিলো দরে চালু হয়েছে আলু বিক্রি। সাধারণ মানুষ ন্যায্য মূল্যের আলো পাবে ‘সুফল বাংলা’ বিপণি থেকে ২৫ টাকা কিলো দরে এবং স্বনির্ভর গোষ্ঠীর বিপণি থেকে ২৭ টাকা কিলো দরে। কালোবাজারি আটকাতে বুধবার জেলার বিভিন্ন এলাকায় সহায়কমূল্যে পাওয়া যাচ্ছে আলু। এই ব্যবস্থা নেওয়ার পর প্রশাসন আশা করছে যে, এর ফলে শীঘ্রই খোলাবাজারে আলুর দাম কমবে।
রাজ্যের যেসব জেলায় আলুর উৎপাদন বেশি হচ্ছে তার মধ্যে কিন্তু পশ্চিম মেদিনীপুর অন্যতম। উৎপাদন বেশি হলেও এই জেলাতে আলুর দামের উপর কোনরকম নিয়ন্ত্রণ নেই। খোলাবাজারে আলু বিক্রি হচ্ছে ৩২-৩৫ টাকা কিলো দরে। এমনকি বেশ কিছু জায়গায় ছাড়িয়ে গেছে এই দাম। জেলায় বৈঠক করে নিয়ন্ত্রণে আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে আলুর দাম (Fair Price of Potatoes)। পশ্চিম মেদিনীপুরে ন্যায্য মূল্যে শুরু হয়েছে আলু বিক্রি। জেলা প্রশাসনের পরামর্শে কিছু দোকান খুলেছেন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা। ওই গোষ্ঠীগুলি ‘আনন্দধারা’ প্রকল্পের অধীনে রয়েছে। যারা ন্যায্যমূল্যের আলুর দোকান থেকে আলু কিনবেন তারা ২৫ থেকে ২৭ টাকা কিলোদরে পেয়ে যাবেন। জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, সব পুর এলাকা, ব্লকে ন্যায্যমূল্যের আলু বিক্রয় কেন্দ্র চালু রাখার কথা জানানো হয়েছে।
কড়া নজরদারি চালানো হয়েছে যাতে কোনোভাবেই আলু ভিন রাজ্যে চলে না যায়। ওড়িশা সীমানায় নজরদারি রয়েছে। রাজ্যের কৃষি বিপণন মন্ত্রী বেচারাম মান্না নজরদারি কেমন চলছে, তা খতিয়ে দেখতে এসেছিলেন পশ্চিম মেদিনীপুরে। রাজ্যের প্রয়োজন মিটিয়ে তবেই বাইরে পাঠানো হবে আলু। তবে এমন বহু অসাধু ব্যবসায়ী রয়েছে যারা নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য লুকিয়ে বাইরে আলু পাঠিয়ে দিচ্ছে। তার জন্য বিভিন্ন জায়গায় চেকিং চলছে। রাজ্যে যেভাবে ন্যায্যমূল্যে আলু (Fair Price of Potatoes) দেওয়া হচ্ছে তাতে এই বারন্ত দামের প্রভাব থেকে কিছুটা হলেও মুক্তি পাবে সাধারণ মানুষ।
আরও পড়ুন:Kolkata Metro Fare: রাতের মেট্রোয় অতিরিক্ত ভাড়া নয়, সাফ জানালো মে
রাজ্যে বর্তমানে আলু মজুত রয়েছে ৬ লক্ষ ২ হাজার মেট্রিক টন। কৃষি বিপণন মন্ত্রী আরো বলেছেন যে, চলতি বছরে ঝড়-বৃষ্টির জন্য প্রায় ১৫ দিন পিছিয়ে গেছে আলু চাষ। নতুন আলু পেতে ১০-১৫ জানুয়ারি হবে। রাজ্যে প্রতিদিন আলুর খরচ ১৮ হাজার মেট্রিক টন। তবে ডিসেম্বরে সেই খরচ হয় ১৫ হাজার মেট্রিক টন। রাজ্যে যত পুরনো আলু রয়েছে, সেটা আরও ৪০-৪৫ দিন চালাতে হবে। রাজ্যের মানুষের যাতে কোনরকম অসুবিধা না হয় সেই ব্যবস্থা করবে রাজ্য সরকার।
রাজ্য সরকার বর্তমানে আলুর ন্যায্যমূল্য (Fair Price of Potatoes) বেঁধেছে কেজি প্রতি ২৫ টাকা, সেখানে জেলার খোলাবাজারে আলু বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি কোথাও ৩২ থেকে ৩৫ টাকা, এমন কি কোন কোন জায়গায় আলু বিক্রি হচ্ছে ৩৮ থেকে ৪০ টাকা দরে। সাধারণ মানুষকে বেশি দামে আলু কিনতে হচ্ছে বিভিন্ন জায়গা থেকে। মাস খানেক ধরেই আনাজের দাম ঊর্ধ্বমুখী। পশ্চিম মেদিনীপুরে আলু চাষ কম হয় না। এই জেলায় বছরে আলুর চাহিদা থাকে কমবেশি ২ লক্ষ মেট্রিক টন। এখানকার হিমঘরে মজুত ছিল প্রায় ১৩ লক্ষ মেট্রিক টন। এখন রয়েছে প্রায় ১ লক্ষ ৮০ হাজার মেট্রিক টন। তাই এই জেলাতে আলুর দাম নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রশাসনের তরফ থেকে এই কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। আলুর এত দাম কেন সেই প্রশ্নের উত্তরে আলু ব্যবসায়ী সমিতির এক নেতা বলেছেন, পাইকারি বাজারে দাম ঠিকই রয়েছে। হিমঘর থেকে বেরোচ্ছে প্রায় ২৪ টাকা কিলো দরে। খুচরো বাজারে দাম খানিক বেশি। একশ্রেণীর আড়তদার অতিরিক্ত মুনাফা লাভ করার জন্যই এই আলুর দাম বৃদ্ধি করেছে। মেদিনীপুরেও ‘সুফল বাংলা’ বিপণি থেকে ২৫ টাকা কিলো দরে আলু মিলছে। মুখ্যমন্ত্রী ন্যায্যমূল্যে আলু পাওয়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। সাধারণ মানুষ এদের যথেষ্ট খুশি। আলু বিক্রির ক্ষেত্রে সব নিয়ম মানা হচ্ছে কিনা সে বিষয়ে সর্বদাই নজরদারি রাখছে প্রশাসন।