Cattle Cart: বিয়ে মানুষের জীবনের সবথেকে বড় উৎসব। তাই এই বিয়েতে মানুষ এমন কিছু করতে চায়, যা হয়তো তার জীবনে দ্বিতীয় বার করা সম্ভব নয়। সেই কারণেই হয়ত বিয়ের অনুষ্ঠানে এমন সব আয়োজন করা হয়ে থাকে যা বছরের পর বছর স্মৃতির মনিকোঠায় রয়ে যায়। কেউ বিয়েতে দু হাতে পয়সা খরচ করে আয়োজন করে থাকেন, কেউবা এমন কোন কাজ করে থাকেন যা চর্চা হতে থাকে লোকমুখে, ভাইরাল হয় সমাজ মাধ্যমে।
কেউ নতুনত্ব আনতে চান বিয়ের সাজে, তো কেউ নতুনত্ব আনতে চান বিয়ের খাবারের মেনুতে, আবার কেউ এমন কোন নতুনত্ব এনে থাকেন আনুষাঙ্গিক আয়োজনে যা সত্যিই অভিনব। তেমনি কখনো কখনো দেখা যায় সাধারণ গাড়ি ছেড়ে কেউ কেউ বিয়ে করতে চলেছেন পুরনো দিনের মতো পালকিতে চড়ে, আবার কেউ বিয়ে করতে যান পুরনো দিনের রাজ রাজাদের মতো ঘোড়ার গাড়ি চড়ে। তবে এগুলো তখনই সম্ভব যখন শ্বশুর বাড়ি কাছাকাছি হয়ে থাকে। নচেৎ বিয়ে করতে গিয়ে গাড়ি থেকে নেমে পাল্কি বা ঘোড়ার গাড়িতে চাপতে হবে। তবে এমন উদাহরনও রয়েছে ঝুড়ি ঝুড়ি। কিন্তু যাই হোক না কেন, একেবারে পুরনো দিনের মতো গরুর গাড়িতে (Cattle Cart) চড়ে বিয়ে করতে যাওয়া বা গরুর গাড়িতে করে বউ নিয়ে ফেরার দৃশ্য তেমন একটা দেখা যায় না।
যদিও আগেকার দিনে অজস্র বিয়েতে মানুষ এক গ্রাম থেকে আরেক গ্রামে বিয়ে করতে যেত গরুর গাড়িতে (Cattle Cart) চেপেই। এমনও শোনা যেত জে, সকালে বিয়ে করতে বেরিয়ে বরযাত্রী সমেত বর সন্ধ্যে বেলা গিয়ে পৌঁছেছে। তবে সে দিন আর নেই। আজকের পেট্রোল ডিজেল ইলেকট্রিকের যুগে দাঁড়িয়ে গরুর গাড়িতে করে বিয়ে করা তো দুরে থাক মালপত্র, এমনকি বাঁশের গাড়ি টানার জন্যও গরুর গাড়ি ব্যাবহার করা হয় না। মূলত, গরুর গাড়ির অত্যন্ত ধীরগতির কারণেই তা কালক্রমে হারিয়ে যেতে বসেছে। আর এইখানেই নিজেদের বিয়ের অনুষ্ঠানে এক নতুনত্ব যোগ করেছেন বীরভূমের মঙ্গল ভান্ডারী।
আরও পড়ুন:Bajaj Chetak: বাজাজের ইলেকট্রিক স্কুটার থেকে বের হল কালো ধোঁয়া, কি বলল সংস্থা
মন্ডল ভান্ডারীর বাড়ী বীরভূম জেলার গোবিন্দবালা গ্রামে। তার বিয়ে ঠিক হয়েছে সেখান থেকে ২ কিলোমিটার দূর আলবাধা সর্পলোনা গ্রাম পঞ্চায়েতের রতনপুর গ্রামের রাখি দাসের সঙ্গে। মঙ্গল ভান্ডারী ঠিক করেন তিনি বিয়ে করে নববধুকে নিয়ে ফেরার সময়, পুরোনো দিনের হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যবাহী গরুর গাড়িতে করেই ফিরবেন। যে রকম কথা তেমনি কাজ। বিয়ে করতে গাড়ি চেপে গেলেও তিনি বউ নিয়ে ফেরেন গরুর গাড়িতে করেই।
মঙ্গল ভান্ডারীর এমন অভিনব সিদ্ধান্তের পিছনের কারণ জিজ্ঞাসা করলে তিনি জানান যে, গরুর গাড়িতে (Cattle Cart) করে বিয়ে করতে যাওয়া বা বিয়ে করে ফেরা প্রাচীন গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যের মধ্যে পড়ে। তাই তিনি এই ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রাখতে এবং নতুন প্রজন্মের কাছে পুরনো দিনকে আরো একবার উপস্থাপন করার ইচ্ছাতেই এমন সিদ্ধান্ত গ্রহন করেন। নববধূ রাখি দাসকে তার অভিজ্ঞতার কথা জানতে চাইলে, তিনি হাসতে হাসতে বলেন বড় বড় গরু দেখে প্রথমে বেশ খানিকটা ভয় লাগলেও গরুর গাড়িতে করে শ্বশুরবাড়িতে আসার অভিজ্ঞতাটা একেবারেই অভিনব।