Ravichandran Ashwin: ব্রিসবেনের গাব্বাতে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ভারতের ড্র টেস্ট ম্যাচের পর বুধবার রবিচন্দ্রন অশ্বিন (Ravichandran Ashwin) তার দীর্ঘ ১৪ বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে অবশেষে দাড়ি টানলেন। ২০১০ সালে তার আত্মপ্রকাশের পর, অশ্বিন খেলার জগতে কিংবদন্তিদের মধ্যে একজন হয়ে ওঠেন, বিশেষ করে টেস্ট ক্রিকেটে। ১০৬টি টেস্টে ৫৩৭ উইকেট নিয়েছেন। শুধু তাই নয় ব্যাট হাতেও তিনি ছিলেন সমান কার্যকারী। সাদা রঙের জার্সি গায়ে ভারতীয় দলের হয়ে তিনি ১৪ টি হাফ সেঞ্চুরি ও ছয়টি সেঞ্চুরি সহ ৩৫০৩ রান করেছেন। ক্যারিয়ারের ফাইফার নিয়েছেন ৩৭ বার যা যুগ্মভাবে শেন ওয়ার্নের সঙ্গে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। এছাড়াও ক্যারিয়ারে ১১ বার ম্যান অফ দ্যা সিরিজ হয়ে শ্রীলংকান কিংবদন্তি মুত্থাইয়া মুরলিধরনের সঙ্গে শীর্ষস্থানে রয়েছেন। এছাড়াও একই ম্যাচে ফাইফার এবং সেঞ্চুরি একই সাথে করেছেন চার বার।
বুধবার ব্রিসবেনে ভারতের দ্বিতীয় ইনিংস ছিল খেলা। ভারত মাত্র ২.১ ওভারে বিনা উইকেটে ৮ রান করার পর তুমুল বৃষ্টিপাত শুরু হয়। যার ফলে দ্বিতীয় ইনিংসের খেলা বন্ধ থাকে। দুই দলই তখন প্যাভিলিওনে বসা ছিল। হঠাৎই অশ্বিন এবং বিরাটের মধ্যে কথোপকথন শুরু হয় এবং অশ্বিনের চোখে জল দেখা যায়। তারপর কোহেলি তাকে জড়িয়ে ধরে। এরপর একে একে গৌতম গম্ভীর থেকে শুরু করে সকলেই অশ্বিনকে জড়িয়ে ধরতে শুরু করে। এই দৃশ্য প্রকাশে আসার সাথে সাথেই সকলে নিশ্চিত হয়ে যায় যে অশ্বিন হয়তো তার খেলার জগত থেকে বিদায় নিচ্ছেন।
রবিচন্দ্রন অশ্বিন (Ravichandran Ashwin) ভারতের তামিলনাড়ুর মাদ্রাজে, বর্তমানে চেন্নাই, ১৭ই সেপ্টেম্বর, ১৯৮৬ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ক্রিকেটপ্রেমী পরিবারে বড় হয়েছেন। তার বাবা রবিচন্দ্রন একজন ফাস্ট বোলার হিসেবে ক্লাব পর্যায়ে ক্রিকেট খেলতেন। অশ্বিন তার প্রাথমিক শিক্ষার জন্য পদ্মশেশাদ্রি বালা ভবনে যোগদান করেন এবং পরে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষার জন্য সেন্ট বেডে স্কুলে চলে যান। তিনি চেন্নাইয়ের SSN কলেজ অফ ইঞ্জিনিয়ারিং থেকে তথ্য প্রযুক্তিতে B.Tech নিয়ে স্নাতক হন। অশ্বিন নয় বছর বয়সে ক্রিকেট খেলা শুরু করেন এবং চন্দ্রশেখর রাও এবং সি.কে. বিজয় কুমার।
শুধুমাত্র তার উইকেট নেওয়ার ক্ষমতাই নয়, লোয়ার মিডল অর্ডারে ব্যাট করার দক্ষতা অশ্বিনকে বিশ্ব ক্রিকেটের অন্যতম প্রভাবশালী ক্রিকেটার হিসেবে গড়ে তুলেছে। ২০১১ ওডিআই বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে শুরু করে এক বছর পর ইংল্যান্ডে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে রবিচন্দ্রন অশ্বিনের স্মরণীয় পারফরম্যান্স তার জনপ্রিয়তা বাড়িয়ে তুলেছে। তাই অবসরের দিন সবারই মন খারাপ হয়ে যায়।
আরও পড়ুন:Vinod Kambli: অসৎ সঙ্গে সর্বনাশ, হাতেনাতে প্রমাণ পেলেন বিনোদ কাম্বলি
অবসরের দিন তিনি এমন কিছু মানুষের নাম প্রকাশ করেন যাদের প্রতি তিনি কৃতজ্ঞ। তিনি বলেন যে, তাদের জন্য তিনি এই ক্রিকেট জগতে সাফল্যের চূড়া ছুঁতে পেরেছেন। বলেন যে তার পুরো কেরিয়ারে আনন্দে মজায় দিন কাটিয়েছেন। তারা হলেন – রাহানে, রোহিত, বিরাট। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড ও অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট বোর্ডের প্রতিও তিনি কৃতজ্ঞ। অশ্বিন ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা অফ-স্পিনার হিসেবে পরিচিত হয়ে থাকবে। ২০০৬ সালের ডিসেম্বরে তিনি তামিলনাড়ুর হয়ে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেক করেন এবং দ্রুত র্যাঙ্কের মাধ্যমে উঠে আসেন।
যদিও অশ্বিন (Ravichandran Ashwin) ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে বা আইপিএলে ফিরে আসতে চলেছেন, যেখানে তিনি চেন্নাই সুপার কিংসে আবার যোগ দেবেন, যে ফ্র্যাঞ্চাইজির সাথে তিনি তার আইপিএল ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন। আইপিএল ২০২৫-এ তার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হয়েছে, যাতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে দূরে সরে যাওয়ার পরেও ভক্তরা তার দুর্দান্ত পারফরমেন্স দেখার সুযোগ পাবে।