Indian Railways: সারা দেশ জুড়ে জনগণের সুবিধার্থে ভারতীয় রেল নানা ধরনের প্রকল্প চালু করে থাকে। যাতে প্রকল্পগুলো সময়মত শেষ করতে পারি তার জন্য যথাযথ চেষ্টা করে ভারতীয় রেল। প্রত্যেকটি রাজ্যই এক্ষেত্রে সাহায্য করে থাকে রেলকে এবং পশ্চিমবঙ্গ এর ব্যতীত নয়। কিন্তু এমন বহু রেলপ্রকল্প রয়েছে যা এখনো পর্যন্ত পূরণ করা সম্ভব হয়নি জমি অধিগ্রহণ সমস্যার কারণে। এমনিতে পশ্চিমবঙ্গের রেল নেটওয়ার্ক সম্পূর্ণ/আংশিকভাবে ভারতীয় রেলের চারটি অঞ্চলের অধীনে পড়ে। এগুলি হল ইস্ট সেন্ট্রাল রেলওয়ে (ECR), ইস্টার্ন রেলওয়ে (ER), দক্ষিণ-পূর্ব রেল (SER) এবং উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল (NFR) জোন।
ভারতীয় রেল (Indian Railways) প্রকল্পের জন্য চলতি বছরের এপ্রিল মাস পর্যন্ত রাজ্যে ব্যয় করেছে প্রায় ৬০,১৬৮ কোটি টাকা। পরিকাঠামোগত উন্নয়নের জন্যই এই অর্থ ব্যয় করেছে ভারতীয় রেল। তবে সব প্রকল্পের কাজ এখনো পর্যন্ত সম্পূর্ণভাবে মিটাতে পারেনি রেল, কিছু কিছু প্রকল্পের কাজ এখনো আংশিকভাবেই পড়ে রয়েছে। চলতি আর্থিক বছরে ভারতীয় রেল আনুমানিক ১৩, ৯৪১ কোটি টাকার সর্বোচ্চ বাজেট ব্যয় বরাদ্দ করেছে। রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব কি বলেছেন এই প্রসঙ্গে, ০১.০৪.২০২৪ পর্যন্ত ৪৪৭৯ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের ৪৩টি প্রকল্প (১৩টি নতুন লাইন, ০৪টি গেজ রূপান্তর এবং ২৬ দ্বিগুণ) পশ্চিমবঙ্গে কোথাও আংশিক এবং কোথাও সম্পূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়েছে। রেলের একাধিক প্রকল্প বর্তমানে পরিকল্পনা/অনুমোদন/নির্মাণ পর্যায়ে রয়েছে, যার মধ্যে ১৬৫৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য চালু করা হয়েছে এবং ২০২৪ সালের মার্চ পর্যন্ত ২০,৪৩৪ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে।
রেলমন্ত্রী অবসর স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন যে, জমি সমস্যার কারণেই বালুরঘাট থেকে হিলি নয়া লাইন, নৈহাটি থেকে রানাঘাট তৃতীয় লাইন-সহ বহু গুরুত্বপূর্ণ এবং একাধিক প্রকল্প এখনো পর্যন্ত সম্পন্ন হয়নি। বর্তমানে রাজ্যে যেসব প্রকল্পগুলো আটকে রয়েছে সেগুলো যাতে সঠিকভাবে হয় তারজন্য মোট ৩,০৪০ হেক্টর জমি লাগবে। সেখানে মাত্র ৬৪০ হেক্টর জমি পাওয়া গিয়েছে। অর্থাৎ রাজ্য সরকার মাত্র ২১% জমিয়ে দিতে পেরেছে। তবে রেল (Indian Railways) দাবী করেছে যে এখনো লাগবে ২,৪০০ হেক্টর জমি। রাজ্য সরকার যদিও এই বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে চায়নি।
আরও পড়ুন:
বালুরঘাট থেকে হিলি নয়া লাইন (৩০ কিলোমিটার): কেন্দ্রীয় সরকার দাবি করেছে যে এই প্রকল্পের কাজ এখনো পর্যন্ত আটকে রয়েছে শুধুমাত্র জমিজটের কারণে। কেন্দ্রের দাবি, ওই প্রকল্পের জন্য ১৫৬.৩৮ হেক্টর জমি অধিগ্রহণ করতে হবে। তবে পাওয়া গেছে মাত্র ৬৭.৩৮ একর জমি। আরও ৮৮ একর জমি অধিগ্রহণ করতে হবে।
চন্দনেশ্বর থেকে জলেশ্বর নয়া লাইন (৪১ কিলোমিটার): রেল (Indian Railways) স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে যে এই প্রকল্পটি যদি সম্পন্ন করতে হয় তাহলে ১৫৮ হেক্টর জমি লাগবে। যেহেতু রাজ্য সরকার কোনো রকম সহযোগিতা করেনি তাই পাওয়া যায়নি এক ছ’টাক ও জমি।
নৈহাটি থেকে রানাঘাট তৃতীয় লাইন (৩৬ কিলোমিটার): কেন্দ্রীয় সরকারের দাবি, জমি সমস্যার কারণেই আটকে রয়েছে নৈহাটি-রানাঘাট তৃতীয় লাইনের কাজ। মোট ৮৭.৮৩ হেক্টর জমি লাগবে। কিন্তু সেখানে মাত্র পাওয়া গেছে ০.০৯ হেক্টর। এখনও ৮৭.৭৪ হেক্টর জমি অধিগ্রহণের কাজ বাকি আছে।
নবদ্বীপ ঘাট থেকে নবদ্বীপ ধাম নয়া লাইন (১০ কিলোমিটার): রেল কর্তৃপক্ষ (Indian Railways) স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে যে, মোট ১০৬.৮৬ হেক্টর জমির প্রয়োজন। কিন্তু রাজ্য সরকার কোনোরকম সহযোগিতা না করার জন্য অধিগ্রহণ করা সম্ভব হয়েছে মাত্র ০.১৭ হেক্টর জমি। অর্থাৎ এখনও ১০৬.৬৯ একর জমি অধিগ্রহণ করতে হবে।