Nabadwip-Krishnanagar Railway: দীর্ঘদিনের অপেক্ষার অবসান! অবশেষে শুরু হয়েছে বহুল প্রতীক্ষিত নবদ্বীপ-কৃষ্ণনগর রেলপথ (Nabadwip-Krishnanagar Rail) নির্মাণের কাজ। নদীয়া জেলার মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি পূরণের পথে এবার আরও একধাপ এগিয়ে গিয়েছে প্রশাসন। জমি জটের জটিল সমাধানে গতি এসেছে, আর তাতে শুরু হয়েছে জমি অধিগ্রহণের প্রক্রিয়া। আটটি মৌজায় প্রায় ২৬৪ একর জমি অধিগ্রহণের কাজ দ্রুত গতিতে এগোচ্ছে। স্থানীয় মানুষদের মতে, রেলপথের কাজ সম্পন্ন হলে এই অঞ্চলকে ঘিরে এক নতুন সম্ভাবনার দিগন্ত উন্মোচিত হবে। আধুনিক পরিবহন ব্যবস্থার সঙ্গে এই রেলপথ যুক্ত হলে, কৃষ্ণনগর ও নবদ্বীপের অর্থনৈতিক উন্নয়নে এক বিশাল ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।
২০০০ সালে নবদ্বীপ ঘাট থেকে কৃষ্ণনগর পর্যন্ত ন্যারোগেজ লাইনকে ব্রডগেজে রূপান্তর করার পরিকল্পনা গৃহীত হয়। ২০১০ সালে তৎকালীন রেলমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই প্রকল্পের শিলান্যাস করেছিলেন। কিন্তু, জমি অধিগ্রহণের সমস্যায় আটকে যায় পুরো প্রকল্প। ভাগীরথী নদীর উপর সেতু তৈরি হলেও কৃষ্ণনগর থেকে নবদ্বীপ পর্যন্ত ব্রডগেজ লাইনের কাজ আর এগোয়নি। স্থানীয় মানুষদের মধ্যে হতাশা বাড়লেও প্রশাসনের এই নতুন উদ্যোগ (Nabadwip-Krishnanagar Railway) নতুন আশার আলো জ্বালিয়েছে।
১০৬ কোটি টাকা ব্যয়ে তৈরি করা হয়েছিল একটি বিশাল রেলসেতু। অথচ সেই সেতু আজও রেল চলাচলের জন্য ব্যবহার হয়নি। জমি জটের কারণে স্থানীয় বাসিন্দারা অনেক সুবিধা থেকে বঞ্চিত। কৃষ্ণনগর থেকে নবদ্বীপের দূরত্ব কম হলেও রেল সংযোগ না থাকার কারণে যাত্রীদের দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে হয়। রেলপথের অভাবে নবদ্বীপ ও মায়াপুরের মতো গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় এবং পর্যটন কেন্দ্রগুলিতে যাতায়াত যথেষ্ট কষ্টকর।
আরও পড়ুন:Office Hours Metro: অফিস টাইমের চাপ কমাতে এই সপ্তাহেই বাড়ছে ১৪ টি মেট্রো, সুখবর নিত্যযাত্রীদের জন্য
লোকসভা নির্বাচনের আগে এই রেল প্রকল্প নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্ক চরমে উঠেছে। বিভিন্ন দল এই প্রকল্পের কৃতিত্ব দাবি করছে। বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকার তৃণমূলকে দোষারোপ করেছেন, আবার তৃণমূল নেতারা বলছেন, কেন্দ্রীয় সরকারের গাফিলতির কারণেই প্রকল্পটি (Nabadwip-Krishnanagar Railway) আটকে ছিল। পাশাপাশি, জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
জমি অধিগ্রহণ সম্পন্ন হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রেলপথ নির্মাণের কাজ শুরু হবে বলে আশা করা হচ্ছে। স্থানীয় মানুষদের বিশ্বাস, এই রেলপথ চালু হলে শুধু যোগাযোগই উন্নত হবে না, বরং পর্যটন, ব্যবসা-বাণিজ্য এবং কর্মসংস্থানেও নতুন সম্ভাবনার সূচনা হবে। কৃষ্ণনগর-নবদ্বীপ রেল সংযোগ পুরো অঞ্চলের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কাঠামোকে একধাপ এগিয়ে নিয়ে যাবে। উন্নয়ন, কর্মসংস্থান ও আধুনিকতার হাতছানি দিতে প্রস্তুত নবদ্বীপ-কৃষ্ণনগর রেলপথ।