ICDS: বর্তমানে রাজ্যের চাকরির পরিস্থিতি খুবই ভয়াবহ। তবে দীর্ঘ ২৬ বছর ধরে অপেক্ষা করছিলেন রাজ্যের আইসিডিএস কর্মীরা, এই জট অবশেষে কাটলো। কলকাতা হাইকোর্ট অবশেষে সবুজ সংকেত দিল ৫০-৫০ অনুপাতে রাজ্যে আইসিডিএস কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর বেঞ্চ এমনটাই জানিয়েছে। চাকরিপ্রার্থীরা আশার আলো দেখছেন কারণ শীঘ্রই ১৭০০-এর বেশি পদে নিয়োগ হবে।
অঙ্গনওয়াড়ির (ICDS) সুপার ভাইজার নিয়োগ সংক্রান্ত নির্দেশিকা জারি করা হয়েছিল ২০১৫ সালে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে। সেই নির্দেশিকায় বলা হয় যে, সুপার ভাইজার নিয়োগের ক্ষেত্রে মোট শূন্যপদের ৫০% শতাংশ অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী এবং ৫০ শতাংশ বাইরে থেকে নিয়োগ করতে পারবে। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকারের এই নিয়মকে একেবারেই মানেনি রাজ্য সরকার। বরং ৭৫% শূন্য পদে নিয়োগ করছিল বলে অভিযোগ। মামলার বয়ান অনুযায়ী, আইসিডিএস সুপার ভাইজার পদে সর্বশেষ নিয়োগ হয়েছিল ১৯৯৮ সালে।
২০১৯ সালে পরবর্তী নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। যে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয় তাতে উল্লেখ করা ছিল যে, শূন্যপদের সংখ্যা হবে ৩৪৫৮টি। কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে ২০১৫ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর যে নির্দেশনামা পেশ করা হয়েছিল তাতে পরিষ্কার উল্লেখ রয়েছে মোট শূন্যপদের ৫০% অঙ্গনওয়ারির (ICDS) কর্মী থেকেই পদোন্নতির ভিত্তিতেই নিয়োগ করতে হবে। কিন্তু অভিযোগ উঠেছে রাজ্য সরকার অঙ্গনওয়ারির কর্মীদের জন্য শুধুমাত্র ৪২২ টি শূন্যপদ রেখে বাকি ৩০৩৬ শূন্যপদে সরাসরি নিয়োগ শুরু করে। কিন্তু রাজ্য সরকারের এই বিজ্ঞপ্তিকে চ্যালেঞ্জ করে কিছু অঙ্গনওয়ারির কর্মী দ্বারস্থ হয়েছিল হাইকোর্টের।
আরও পড়ুন: রাজ্য সরকারের বিরাট পদক্ষেপ, অবসর নিলে সাথে সাথেই অ্যাকাউন্টে ঢুকবে ৫ লক্ষ টাকা
রাজ্য সরকারকে ২০২৩ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর বিচারপতি লপিতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্দেশ দেন ৫০% শূন্যপদে পদোন্নতির ভিত্তিতেই অঙ্গনওয়ারি (ICDS) কর্মীদের নিতে হবে। তবে সেই নির্দেশ সম্পূর্ণরূপে উপেক্ষা করে রাজ্য সরকার। এমনটাই অভিযোগ আনা হয়। ২০২৪ সালে বিচারপতি লোপিতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ চ্যালেঞ্জ করে বিচারপতি সৌমেন সেনের ডিভিশন বেঞ্চে মামলা দায়ের করা হয়। যদিও মামলাটির শুনানি হয়েছিল তবুও সিঙ্গেল বেঞ্চের নির্দেশের ওপর কোনও স্থগিতাদেশ দেয়নি ডিভিশন বেঞ্চ। নিয়োগ জট কাটাতে নতুন করে মৌমিতা ঘোষ, দীপা মণ্ডল-সহ ৪১৫ জন মামলাকারীর পক্ষের আইনজীবী আশিষকুমার চৌধুরী বিচারপতি রাজা শেখর মান্থার এজলাসে জানান, যেরকমভাবে কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশ দিয়েছিল ৫০% সুপারভাইজার পদে অঙ্গনওয়ারির কর্মী নিয়োগের সেটাই মানতে হবে। যদি হাইকোর্টের এই নিয়মকে রাজ্য সরকার অগ্রাহ্য করে তাহলে তা সম্পূর্ণ বেআইনি হবে।
বিচারপতি রাজা শেখর মান্থার নির্দেশ দিয়েছিলেন , যেহেতু বিচারপতি লোপিতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশের উপর কোনও স্থগিতাদেশ নেই সেই কারণে রাজ্য সরকার ও পিএসসি ৫০% শূন্যপদে অঙ্গনওয়ারির কর্মীদের মধ্যে থেকেই নিতে হবে। এছাড়াও ৩৪৫৮ শূন্যপদের মধ্যে ১৭২৯ জনকে নিয়োগ করতে হবে অঙ্গনওয়ারির কর্মীদের মধ্য থেকেই।