Day Trip From Kolkata: শীত যাবার আগেই ঘুরে নিন কলকাতার কাছের এই তিন জায়গায়

Prosun Kanti Das

Published on:

Advertisements

Day Trip From Kolkata: যত দিন যাচ্ছে শীতের বিদায় নেওয়ার সময় ততই এগিয়ে আসছে। সকাল-সন্ধ্যা হালকা শীত অনুভব হলেও দিনের বেলা উধাও ঠান্ডা। এই মনোরম আবহাওয়াতে কলকাতার কাছের এই তিন জায়গা থেকে ঘুরে আসা যেতে পারে। ঘোরা হয়ে যাবে একদিনেই। জেনে নিন বিস্তারিতভাবে এই প্রতিবেদনে।

Advertisements
দেউলটি

শহরের ব্যস্ততা থেকে কয়েক ঘণ্টার মুক্তি চান? তাহলে চট করে চলে আসুন রূপনারায়ণের কূলে দেউলটিতে (Day Trip From Kolkata)। গ্রাম্য পরিবেশে সময় কেটে যাবে এক নিমেষে। দেউলটিতেই সামতাবেড় গ্রামে কথাশিল্পী শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের বাড়ি। শোনা যায় জীবনের শেষের দিকে তিনি এখানেই সময় কাটাতেন। জীবনের শেষ সময় এইখানে বসেই তিনি বেশ কয়েকটি জনপ্রিয় উপন্যাস লিখেছেন। কাঠের তৈরি আসবাবপত্র, লেখার টেবিল থেকে শরৎচন্দ্রের ব্যবহৃত ঘড়ি, সবই সযত্নে রক্ষিত রয়েছে। রূপনারায়ণের তীরে কখন সময় কেটে যাবে তা কল্পনাও করতে পারবেন না। শীতে রূপনারায়ণ শান্ত হলেও বর্ষায় ভয়ঙ্কর রূপ নেয়।

Advertisements

কী ভাবে যাবেন: যাওয়ার পথ এমন কিছু কঠিন নয়, হাওড়া থেকে মেদিনীপুর বা খড়গপুর লোকাল ধরে পৌঁছতে হবে দেউলটি (Day Trip From Kolkata)। যদি কথাশিল্পী শরৎচন্দ্রের বাড়ি যেতে চান তাহলে আপনাকে দেউলটি স্টেশন থেকে অটো ধরতে হবে। সড়কপথেও গাড়ি করে যেতে পারেন। কলকাতা থেকে সড়কপথে দূরত্ব ৬৩ কিলোমিটার। যেতে ঘণ্টা দুয়েক সময় লাগবে।

Advertisements
আন্দুলপোতা

যারা প্রকৃতিকে ভালোবাসেন তাদের জন্য একেবারে উপযুক্ত হলো এই আন্দুলপোতা। উত্তর ২৪ পরগনার বাগদা মহকুমার ছোট্ট গ্রাম এটি। পর্যটকরা এখানে খুব ভিড় না করলেও এখানে প্রকৃতির এত সুন্দর রূপ দেখতে পাওয়া যায় যা কল্পনার বাইরে। বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে রয়েছে মাছের ভেড়ি। তার মধ্যে দিয়েই চলে গিয়েছে পিচের আঁকাবাঁকা পথ। এখানে বাইক এবং টোটো দুটোরই চল আছে। আকাশে এত সুন্দর রঙের শোভা দেখতে পাওয়া যায় যেন দেখলেই চোখ জুড়িয়ে যায়। ভেড়িতে যখন মাছকে খাওয়ানো হয়, সে-ও দেখার মতো। ঝাঁকে ঝাঁকে মাছ খাবার খাওয়ার জন্য জলে ভেসে উঠেছে। খাবার পড়তেই তা নিমেষে ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে। যদিও ভেড়ি ছাড়া এখানে আশেপাশে তেমন কিছু নেই। জায়গাটি বেশ নির্জন এবং জলের পাড়ে বসে হাওয়া খেতে দিব্যি লাগে। সূর্য ডোবার পর এখানকার যেন রূপ পরিবর্তন হয়ে যায়। শীতের মরশুমে এখানে একবার আসলে আপনার মন ভরে যাবে। আন্দুলপোতার জলাভূমির সৌন্দর্য বর্ষাতেও কিন্তু অপরূপ।

কী ভাবে যাবেন: কিভাবে পৌঁছানো যাবে আন্দুলপোতা (Day Trip From Kolkata) সেটা জেনে নিতে হবে। শিয়ালদহ স্টেশন থেকে হাসনাবাদ লোকালে যেতে হবে চাঁপা পুকুর। সেখান থেকে টোটো করে আন্দুলপোতার মাছের ভেড়ি এলাকায় চলে যেতে পারবেন। বাইকে বা গাড়িতেও আসা যায়। যদি বাসন্তী হাইওয়ে দিয়ে যান তাহলে কলকাতা থেকে আন্দুলপোতার দূরত্ব পড়বে ৬৭ কিলোমিটার। টাকি রোড ধরে গেলে খোলাপোতা বাজার হয়ে চাঁপাপুকুর স্টেশনের লেভেং ক্রসিং পার করতে হবে। তার পর রাজাপুর বাজার হয়ে পৌঁছতে হবে আন্দুলপোতায়।

আরও পড়ুন: বদলে গেলো ফোর্ট উইলিয়ামের নাম, কেনো এমন সিদ্ধান্ত নিল কেন্দ্রীয় সরকার?

সবুজ দ্বীপ

পর্যটকদের তালিকায় এই নতুন ঘোরার জায়গাটির সংযোজন হয়েছে। হুগলি নদীর বুকে তৈরি হয়েছে একটি চর। সবুজ গাছে ভরা এই জায়গাতে যদি একবার যান মুগ্ধ হয়ে যাবেন। গাছগাছালি ভরা সেই স্থানই সবুজ দ্বীপ নামে পরিচিত। স্থানীয়রা এই জায়গাটিকে ব্যবহার করে পিকনিকের স্থান হিসাবে। তবে নদী-প্রকৃতির সান্নিধ্য পেতে মাঝেমধ্যেই পর্যটকেরা সেখানে ভিড় করেন। হুগলির বলাগড়ের সবুজ দ্বীপে ঘুরে আসা যায় এক দিনেই। একদিনের জন্য যদি কোথাও যেতে চান তাহলে এই জায়গাটি আপনার জন্য উপযুক্ত। নদীর সান্নিধ্য, সবুজের সমারোহ আর নির্জনতা এই তিনের মিশ্রণে সময় কিভাবে কেটে যাবে বুঝতে পারবেন না। হাওড়া-কাটোয়া লাইনের সোমরাবাজার স্টেশনের অদূরেই রয়েছে ফেরিঘাট। সেখান থেকে নৌকোয় ২০ মিনিটের পথ।

এখানে গেলে পানকৌড়ির শিকার ধরা, গাছগাছালিতে পাখির উঁকিঝুকি সবকিছুই দেখতে পারবেন একেবারে চোখের সামনে। শীতের মরসুমে এখানে ভিড় জমান স্থানীয় মানুষ, আশপাশ থেকে পিকনিকের জন্য আসা লোকজন। সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো এই দ্বীপের একটি অংশ সাজিয়ে গুছিয়ে কটেজ তৈরি করে থাকার ব্যবস্থা করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পর্যটন দফতর (ডব্লুবিটিডিসিএল)। যদি আপনি থাকতে না চান এই দ্বীপটি পায়ে হেঁটে দেখতে পারেন। চাইলে নৌকা ভাড়া করে ভেসেও পড়তে পারেন নদীবক্ষে। সবুজদ্বীপ ঘুরে সময় থাকলে ঘুরে নিতে পারেন কালনার ১০৮ শিব মন্দিরও। বলাগড় থেকে কালনার দূরত্ব ১৭ কিলোমিটার।

কী ভাবে যাবেন: এখানে যেতে গেলে হাওড়া থেকে কাটোয়া লাইনের ট্রেন ধরে নামতে হবে সোমরাবাজার স্টেশনে। সেখান থেকে টোটোয় ফেরিঘাট। ২০ মিনিট নৌকায় করে সবুজ দ্বীপ (Day Trip From Kolkata) পৌঁছানো যাবে। কলকাতা থেকে দিল্লি রোড হয়ে বলাগড় বা সোমরাবাজার আসতে সময় লাগবে আড়াই ঘণ্টা এবং দূরত্ব ৯০ কিলোমিটার।

Advertisements