বৈধ বালিঘাট চালুর দাবিতে জেলাশাসককে ডেপুটেশন ঘাট মালিকদের

হিমাদ্রি মন্ডল : ২৫ শে জুলাই ২০১৯ বীরভূম জেলা পুলিশ সুপার, জেলা ভূমি রাজস্ব আধিকারিক ও মাননীয় জেলা সমাহর্তা নেতৃত্বে প্রশাসন বালির স্টক পয়েন্ট সংক্রান্ত ‘লাইভ অপারেশন’ চালানো হয় সিউড়ি আমজোড়া রাস্তার দুই পাশে মজুত করা বালির উপর।ঘটনায় সেদিন দু চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারপর বালি স্টক পয়েন্ট থেকে সমস্ত কর্মচারী, শ্রমিক সেই মুহূর্ত থেকে এলাকা ছাড়া হয়। তারপর থেকেই একপ্রকার বন্ধ বিভিন্ন বালিঘাট এবং বালির স্টক পয়েন্টগুলি।

এরপর আজ দুপুর ২ টা নাগাদ বালিঘাট মালিক, শ্রমিক এবং অন্যান্য কর্মচারীবৃন্দ মিলে প্রায় দুয়েক বালি সংক্রান্ত পেশায় নিযুক্তরা বীরভূম জেলা সমাহর্তার কাছে ৮ দফা দাবি নিয়ে একটি ডেপুটেশন জমা দেয়। বালিঘাট মালিক সংগঠনের এই ৮ দফা দাবি হলো –

১) ২৪/০৭/২০১৯ তারিখে জেলা ভূমি ও রাজস্ব আধিকারিক কতৃর্ক যে সমস্ত স্টক পয়েন্টের চালান বিনা নোটিশে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিলাে সেগুলি আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে চালু করতে হবে।

২) যে সমস্ত বালি ঘাটের স্টক পয়েন্টগুলি ২৫/০৭/২০১৯ তারিখ অবধি চালু করা সম্ভব হয়নি, আগামী ৭ দিনের মধ্যে সেই সমস্ত স্টক পয়েন্টের আইনি জটিলতা ঘাট মালিকদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে মিটিয়ে নেওয়ার সুযোগ দিতে হবে এবং স্টক পয়েন্টগুলি থেকে ব্যবসা চালু
করতে দিতে হবে।

৩) সমস্ত ঘাট মালিকের সমস্ত ম্যানুয়াল চালানের টাকা মেটানাে আছে। প্রশাসন ম্যানুয়াল চালান গুলিকে ই-চালানে পরিবর্তন করতে প্রতিশ্রুতি বদ্ধ। সমস্ত ম্যানুয়াল চালানের বৈতা DL&LRO অফিসকে পূর্বের ন্যায় দিতে হবে।

৪) স্টকের ই-চলানের সময়কাল বর্ধিত করতে হবে।

৫) Lease Deed -এর আইন মোতাবেক আমাদের Quarterly Royalty জমা দেওয়ার নিয়ম পুনরায় চালু করতে হবে। অর্থাৎ চালানের জন্য অগ্রিম টাকা নেওয়া বন্ধ করতে হবে।

৬) আদালতের নির্দেশ মোতাবেক সরকারি স্বীকৃত স্টক পয়েন্টে চালান অধিক বালি থাকলে তাকে Royalty জমা করার সুযোগ দিতে হবে। টাকা জমা মাত্র মজুত ক্ষেত্রগুলি থেকে বালি বিক্রির অনুমতি দিতে হবে।

৭) সরকারি স্বীকৃত স্টক পয়েন্ট ব্যাতিত অন্য মজুত বালি cease করে Auction করতে হবে।

৮) জেলা জুড়ে সমস্ত ওভার লোডিং বন্ধ করতে হবে।

বালি মালিক সংগঠনের তরফ থেকে জানানো হয়, “আমরা আমাদের দাবিদাওয়াগুলি জেলাশাসক মহাশয়াকে সহমর্মিতার সাথে বিবেচনা করার অনুরোধ রাখলাম।”

তাদের দাবি, তাদের কাছে বৈধ চালান থাকা সত্ত্বেও বালি চুরির অপবাদ মাথায় নিতে হয়েছে। আর এই চোর অপবাদ এসেছে ম্যানুয়েল চালান থেকে ই চালানে নিয়ে রূপান্তরের জন্য। যেসকল বালিঘাট মালিকদের বিরুদ্ধে চোর অপবাদ দিয়ে এফআইআর করা হয়েছে তাদের সকলের কাছে বৈধ ম্যানুয়েল চালান রয়েছে। যেসকল বালিঘাট মালিকদের বিরুদ্ধে এফআইআর করা হয়েছে তাদের অনেকটাই মিথ্যা। আমরা বৈধভাবে বালি স্টক করেছিলাম, পদ্ধতিগতভাবে হয়তো কিছু ভুল ত্রুটি থেকে যেতে পারে কিন্তু সেই ভুল সংশোধনের সময় দেওয়া হয়নি।

বীরভূম জেলা সমাহর্তা মৌমিতা গোদারা বসু জানান, “১৫টি মত বালিঘাট রয়েছে যাদের বিরুদ্ধে কোনো রকম অভিযোগ নেই সেই বালিঘাটগুলি চালু হবে বা চালুর পদ্ধতি শুরু করে দিয়েছি। কিন্তু যেগুলির বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে সেগুলি কোনক্রমেই চালু হবে না যতক্ষণ না হাইকোর্টের নির্দেশ আসছে।”

এছাড়াও বালিঘাট মালিকদের অভিযোগ, “যে সকল জায়গায় এই মুহূর্তে বালি স্টক করে রাখা হয়েছে, সেই সকল জায়গা থেকে ট্রাক্টর মালিকরা বিনা বাধায় বালি তুলে নিয়েছে বিক্রি করে দিচ্ছে অর্থাৎ বালি চুরি হয়ে যাচ্ছে। কারন ঐ সকল স্টক পয়েন্টে এখন কোন কর্মী হয়ে থাকতে চাইছেন না। প্রশাসনের কাছে আমাদের অনুরোধ এই বিষয়টি দেখার জন্য।”