নিজস্ব প্রতিবেদন : প্রথাগত শিক্ষা, বাড়ি থেকে পিঠে ব্যাগ বয়ে স্কুলে যাওয়া আর স্কুল থেকে আসা। স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের প্রথাগতভাবে কিছু পাঠদান সব পড়ুয়াদের ক্ষেত্রে সমানভাবে গ্রহণ করার ক্ষেত্রে থাকে অনিশ্চয়তা। ছোট ছোট কচিকাঁচারা সবাই সমান ভাবে সেই পাঠ গ্রহণ করতে পারেন না। কিন্তু সেই পড়াশোনাকে যদি খুদেদের মত করে তোলা হয় তাহলে কেমন!
ঠিক এমনটা ভেবেই হয়তো এই শিক্ষক সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন খুদেদের পড়ানোর জন্য নেচে গেয়ে পাঠদানের পথকে বেছে নেবেন। আর সেই মতো তিনি ছোটদের কাছে কঠিন বইয়ের পাঠকে নেচে গেয়ে সহজ করে তুলেছেন। শুরু করেছেন সেই ভাবেই। আর তাতে খুদে পড়ুয়াদের কাছে সেই পাঠলাভ হয়েছে অনেক বেশি গ্রহণযোগ্য, বেড়েছে শিক্ষালাভের আগ্রহ।শুধু তাই না, ওই পড়ুয়ারা অপেক্ষায় থাকেন কখন স্কুলে আসবেন তারা, আর শিক্ষকই কখন তাদের পড়াতে শুরু করবেন।
এমন মহান চিন্তাভাবনার ওই শিক্ষককে হলেন ওড়িশার লামতাপুর উচ্চ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রফুল্ল পাথি। তাঁর পড়ানোর কৌশলে তিনি এলাকায় ‘ডান্সিং টিচার’ নামে সুপরিচিত। সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, ২০০৮ সালে তিনি ৫৬ বছর বয়সে ওই স্কুলের শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। তারপর থেকেই তাঁর শুরু হয় অভিনব পাঠদান। পড়াশোনা করানোর জন্য তাঁর ব্ল্যাকবোর্ড, চক ইত্যাদি কিছুই লাগেনা। তিনি নাচ-গানের মাধ্যমে পড়ুয়াদের সমস্ত পড়াশোনা করিয়ে দেন। আর এই পদ্ধতিতে পড়ুয়ারাও অতি সহজে মনে রাখতে পারে সেই পড়াশোনার বিষয়বস্তু।
এক সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ওই শিক্ষক জানিয়েছেন, “পড়ুয়ারা যেভাবে চাইছে তাদের সেই ভাবেই শিক্ষাদান করানো উচিত। আর এইভাবে তাদের শিক্ষাদানে দেখেছি, শিক্ষালাভের প্রতি যেমন তাদের আগ্রহ বাড়ছে ঠিক তেমন মজাও পাচ্ছে। আগ্রহ ও মজা পাশাপাশি সমান্তরালভাবে চলাই তাদের বোধগম্যতা বাড়ছে। অনেক শিক্ষক রয়েছেন যারা পড়ুয়াদের প্রতি রাগান্বিত হয়ে তাদের বকাবকি করেন। তাতে কিন্তু তাদের পড়াশোনার ভিত কতটা শক্ত হয় তা নিয়ে আমার সন্দেহ আছে। আর এইভাবে দেখেছি পড়াশুনার প্রতি তাদের ক্লান্তি আসে না আগ্রহ বাড়ে।”
অভিনব কৌশলের সাথে ওই শিক্ষকের পড়ুয়াদের পড়াশোনার সেই ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোড হতেই দ্রুত ভাইরাল হয়ে পড়ে। শুধু ভাইরালই নয়, সোশ্যাল মিডিয়ার নেটিজেনরা ওই শিক্ষকের শিক্ষাদানের অভিনব কৌশল দেখে প্রশংসায় পঞ্চমুখ।